উদয় নিজেও দাঁড়ালেন দর্পণের সামনে

শঙ্কর সরণি - ৮
আগের পর্বে

ব্রিটিশ সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানে অসি-নৃত্য প্রদর্শন করে তাক লাগিয়ে দেন উদয়শঙ্কর। প্রসংশা পান স্বয়ং রাজা পঞ্চম জর্জের কাছ থেকে। এরপর উদয়ের সঙ্গে দেখা করতে চান আনা পাভলোভ। এই রুশ ব্যালে-ডান্সারের সৌন্দর্য এবং নৃত্যের দক্ষতায় তখন সকলেই মুগ্ধ। আন্তর্জাতিক চিত্রশিল্প প্রতিযোগিতা ছেড়ে তিনি যোগ দিলেন আনার দলে। সঙ্গী ভেরাও। আনার দল হয়ে উঠল উদয়েরও দল। প্রশংসা এল নানা স্তর থেকে। কিন্তু শাকিকে অন্যায়ভাবে দল থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারলেন না উদয়। তারপর…

আনা পাভলোভার ট্রুপ প্রথমেই গেল নিউইয়র্ক। সেখানে ঘটল এক অদ্ভুত যোগাযোগ। সেইসময় বোস্টন শহরে আকস্মিকভাবে উদয়শঙ্করের সঙ্গে আলাপ হয় আনন্দ কেন্টিশ কুমারস্বামীর। কুমারস্বামী বিংশ শতাব্দীর শিল্প-ইতিহাসের একজন পথিকৃৎ। নন্দনতাত্ত্বিক ও পুরাণবিদ। ধর্ম-সাহিত্য-ভাষা-রূপকবিদ্যা ও লোককথা বিষয়ে তাঁর ছিল প্রভূত পড়াশোনা। অগাধ আগ্রহ ছিল ভিস্যুয়াল আর্ট বা দৃশ্যচিত্র নিয়ে। ১৮৭৭ সালে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা তামিল এবং মা ইংরেজ। মাত্র দু’ বছর বয়সে পিতৃহারা হওয়ায়, তিনি বড় হয়েছিলেন তাঁর ‘মাতৃভূমি’ ইংল্যান্ডে। কিন্তু ভারতবর্ষের সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল আন্তরিক। তাঁর জন্ম হয়েছিল সিংহলে।  ইংল্যান্ডে উদ্ভিদবিদ্যা ও ভূতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯০৩-এ তিনি ফিরেছিলেন পিতৃভূমি সিলোনে। সেখানে এসে সিংহলি ভূতাত্ত্বিক চর্চার প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন তিনি। উদ্যোগী হন সেখানকার ঐতিহ্যবাহী শিল্প, সামাজিক মূল্যবোধ, রীতিনীতি রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে। পিতা-মাতার সূত্রে দুটি ভিন্ন দেশকে নিজের অস্থি-মজ্জায় লাভ করেছিলেন কুমারস্বামী। নিজের অধ্যয়ন আর কর্মযজ্ঞে সেই সৌভাগ্যকে সার্থক করেছিলেন উপমারহিত করে।

সিলোন শুধু নয়, খাস কলকাতা আর সর্বোপরি ঠাকুরবাড়ির সঙ্গেও ছিল আনন্দর যোগ। স্বদেশি আন্দোলনের সময় থেকেই অবনীন্দ্রনাথ এবং গগনেন্দ্রনাথের একটি অভিনব উদ্যোগের খবর মেলে।  সুপ্রচুর ব্যয়ভার গ্রহণ করে তাঁরা সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন দুর্লভ অমূল্য সব শিল্পবস্তু। ঠাকুরবাড়ির এই সংগ্রহ দেখতে আগমন ঘটত তৎ-সমকালের  নামজাদা সব অতিথিদের। বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি অথবা দেশের মান্য ইংরেজরাও এসে পৌঁছোতেন এই শিল্প-সিন্দুকের সন্ধানে। কুমারস্বামী আর রটেনস্টাইনের আগমন সম্ভবত ঘটেছিল সেইভাবেই। এই সময়ই দেশীয় আঙ্গিকে নব্যধারার শিল্পচর্চার একটি প্রচেষ্টার উদ্যোগও গ্রহণ করেন অবন ও গগন ঠাকুর। সেইসূত্রেই প্রতিষ্ঠা করেন ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট’। চিত্রকলার বঙ্গীয় ধারার সঙ্গে পাশ্চাত্য শিল্পরীতির সংমিশ্রণে তখন তৈরি হয়ে উঠছিল এক নতুন শিল্পলোক। বাংলার সেই নন্দনতাত্ত্বিক শিল্প আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গী  হন দুই বিশিষ্ট মানুষ। একদিকে লন্ডনের রয়্যাল আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ উইলিয়ম রটেনস্টাইন। অন্যদিকে কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ আর্নেস্ট বিনফিল্ড হ্যাভেল। ই. বি. হ্যাভেল নামেই যাঁকে মনে রেখেছে বাংলার শিল্প-ইতিহাস।  

ইংরেজদের ভারতপ্রেম বিষয়ক একটি মনোরম গল্প জুড়ে নেওয়া যেতে পারে এখানে।  ১৯১০-এ লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টস-এর ভারতীয় শাখায় একটি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছিলেন স্যর জর্জ বার্ডয়ুড। ‘আর্ট অ্যাডমিনিসস্ট্রেশন ইন ইন্ডিয়া’ বিষয়ে সেদিন কথা বলছিলেন হ্যাভেল।  বক্তৃতা শেষে হতে শ্রোতাদের বিস্মিত করে স্বয়ং বার্ডয়ুড অপ্রীতিকর মন্তব্য করে বসলেন ভারতের শিল্পবিষয়ে। সভাপতির আকস্মিক এই অসৌজন্যে বিব্রত বোধ করলেন সকলে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রটেনস্টাইন। ক্ষুব্ধ রটেনস্টাইন বিন্দুমাত্র কালব্যয় না-করে তীব্র প্রতিবাদ করলেন বার্ডয়ুডের। কিন্তু এতটুকুতে স্বস্তি পেল না তাঁর অন্তর। শিল্পবিশেষজ্ঞদের স্বাক্ষর-সম্বলিত একটি পত্রাঘাত হানলেন সংবাদপত্র ‘দ্য টাইমস’-এ। না, তখনও শান্ত হয়নি শিল্পগুণসম্পৃক্ত তাঁর মেজাজ। বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে লন্ডনে ১৯১০-এই তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি’। আরো নানাপ্রকার কার্যসূচির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের প্রতিভাকে দেশীয় সীমার ঘেরাটোপ থেকে ভুবনবিশ্বে পৌঁছে দেওয়ার কাজটিও নিঃশব্দে বহন করেছিল এই প্রতিষ্ঠানটিই। 

রবীন্দ্রনাথ ও আনন্দ কুমারস্বামী।

 

ফিরে আসি আনন্দ কুমারস্বামীর কথায়। ভারতশিল্পের খোঁজে রটেনস্টাইন আর কুমারস্বামী ১৯১০-এ দুজনেই এসেছিলেন এদেশে। খুব স্বাভাবিকভাবেই যা ক্রমে প্রসারিত হয় রবীন্দ্রনাথের কর্মজগতেও।  ১৯১০-এ কুমারস্বামী এসেছিলেন শান্তিনিকেতনে। তাঁর সম্পর্কে জামাতা নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে চিঠিতে  জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ, ‘সমস্তদিন আমার কাব্যগ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করছেন। তাঁর ভারি ইচ্ছা ওর থেকে তিনি অনেকগুলো অনুবাদ করেন।’ রবীন্দ্র-পরিকর অজিতকুমার চক্রবর্তীর সহযোগিতায় কুমারস্বামী অনুবাদ করলেন কিছু কবিতা ও গান। এক বছরের মাথায়, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে যুগ্ম-নামে প্রকাশিত হল সেই অনুবাদ। পরে তাঁর লেখা ‘আর্ট অ্যান্ড স্বদেশী’ গ্রন্থের ‘পোয়েমস অফ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ অধ্যায়ে সংকলিত হল সেই কাজ।

নিউ ইয়র্কে আলাপের পর কুমারস্বামী একদিন তাঁর গৃহে আমন্ত্রণ জানালেন উদয়কে। বহুক্ষণ তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় ঋদ্ধ হলেন উদয়। মানুষের সাক্ষাৎ তো নয়, মনে হল যেন প্রজ্ঞার তীর্থলোকে বেরিয়েছিলেন অভিযানে। উদয় খুশি হলেন খুব। তাঁর কাছ থেকে ফিরে আসবার সময় আনন্দ উদয়কে দিলেন একটি উপহার। একটি বই।

আরও পড়ুন
দেখা করতে চাইলেন খোদ আনা পাভলোভা

বইটির নাম ‘মিরর অব জেশ্চার’। নন্দিকেশ্বরের সংস্কৃত ‘অভিনয় দর্পণে’র ইংরেজি অনুবাদ।  ভরতের নাট্যশাস্ত্র ভারতীয় নাট্যতত্ত্বের প্রাচীনতম গ্রন্থ বলে স্বীকৃত। সেই ভরতমুনিরও পূর্ববর্তী নন্দিকেশ্বর। কারো কারো মতে, ভরতের গুরু ছিলেন নন্দিকেশ্বর। তিনি ভরতেরও আগে লিখেছিলেন ভারতীয় নাটক ও নৃত্যশাস্ত্রের আকরগ্রন্থ ‘অভিনয় দর্পণ’। অসামান্য সেই গ্রন্থটিকেই ১৯১৭ সালে ইংরাজিতে অনুবাদ করেন কুমারস্বামী ও তাঁর বন্ধু দুগ্গিরাল গোপালকৃষ্ণাইয়া।  উদয়শঙ্করকে যে-বই উপহার দিলেন তিনি।

এই বই বদলে দিল নৃত্য এবং অভিনয় সম্পর্কিত উদয়শঙ্করের যাবতীয় চিন্তাধারা। বদলে দিল বলা যায়, অথবা, বলা যায় জন্ম দিল এক অভিনব চিন্তাসূত্রের। এ বইয়ের সূচিপত্রের দিকে অনিমেষ চেয়ে রইলেন উদয়। কত ধরনের হতে পারে দেহবিভঙ্গ, তা নিয়ে বিস্তৃত কথা বলা হয়েছে একটি অধ্যায়ে। রয়েছে তেত্রিশ রকম মাথা নাড়াবার ভঙ্গি। ভুরুর আর ঘাড়ের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে রচিত হয়েছে সম্পূর্ণ দুটি অধ্যায়। হাতের ব্যবহার নিয়ে ষোলোটি অধ্যায়।  একটি হাতের আটাশ রকম আর দুটি হাত মিলিয়ে আরো আটাশ রকম চলনের রয়েছে বিবরণ। রয়েছে হাতের আর আঙুলের মুদ্রাভেদে কীভাবে বোঝানো যায় মানবসম্পর্ক, সেই কথাও। পড়তে পড়তে বিস্ময়বিমূঢ় হয়ে রইলেন উদয়শঙ্কর।  

 'অভিনয় দর্পণ'- এর আনন্দ কুমারস্বামী-কৃত অনুবাদে যুক্ত দুটি চিত্রিত পৃষ্ঠা।

 

আরও পড়ুন
সাজলেন শিব, খালি গা, নকশা-তোলা আভূষণ

সেই বই দেখিয়েছে, শুধুমাত্র আঙুলের আকার-প্রকার দিয়ে দেব-দেবীর স্বাতন্ত্র্য কীভাবে বোঝানো যায়। কীভাবে ব্যক্ত করা যায় বিষ্ণুর দশাবতার, বিভিন্ন বর্গের মানুষকে কীভাবে ফুটিয়ে তোলা যায় মুদ্রায়।  নিখুঁতভাবে উল্লিখিত হয়েছে এক-একটি গাছ আর ভারত-বিখ্যাত সব নদীদের কীভাবে পৃথকভাবে চিহ্নিত করা যায় তার তত্ত্বতলাশও। বায়ুতে উড্ডীন আর জলে ভাসমান বিভিন্ন প্রাণীর নানা ধরনের চলন নিয়ে আছে ছবির মতো কথা বলা। কী বিচিত্র আর আশ্চর্য এ বই। প্রাচীন মুনি-ঋষিরা না-জানি কোন শক্তিবলে আবিষ্কার করেছিলেন এইসব। নিসর্গের প্রকৃতি আর প্রাণকে তার চাঞ্চল্য আর গতির মধ্যে দিয়ে দেখা। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুপুঙ্খে দেখা। তারপর নিজদেহে ভঙ্গি, মুদ্রা আর অভিনয়ে তাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। কী অদ্ভুত এক যাত্রা।  

তটস্থ উদয় চেয়ে রইলেন, গ্রন্থশেষে সংযোজিত ‘দ্য কসমিক ডান্স অফ শিবা’-র দিকে। মহাজাগতিক এক নৃত্যভঙ্গি। সমগ্র অন্তরীক্ষকে স্পর্শ করে থাকা এক মুহূর্ত যেন।  কুমারস্বামী  এই বই উপহার দিলেন উদয়কে। কী চেয়েছিলেন কুমারস্বামী? দেশীয় সুপ্রাচীন সনাতনধারাটির সঙ্গে জীবনের সূচনাতেই পরিচয় ঘটুক উদয়ের? এর তাত্ত্বিক পটভূমিটির মন্থনে উদগ্রীব হয়ে উঠুক তাঁর চেতনা? উদয়ের নৃত্যরূপায়ণে আবহমান হোক দেশ?

রাত্রিজুড়ে রুদ্ধশ্বাস, উদয়শঙ্কর শেষ করলেন সেই বই। স্তব্ধ হয়ে রইলেন বহুক্ষণ। ওই বর্ণ-শব্দের ভেতরে মুদ্রিত থাকা মুদ্রাগুলি যেন দৃশ্যবৎ হয়ে উঠল তাঁর কাছে। গ্রন্থের মধ্যে শব্দ-আশ্রিত বর্ণনা আর মনোলোকে উদ্ভাসিত দৃশ্য যেন ওতপ্রোত দাঁড়াল সেতুসম্বন্ধে। পুরাকালে ভারতীয় ঐতিহ্যে অভিনয়ের গুপ্তধনকে পুনরুদ্ধারের বাসনা ঘিরে ধরল তাঁকে। অঙ্গারকৃষ্ণ এক রাত্রি। তিনি দাঁড়ালেন দীর্ঘ এক দর্পণের সম্মুখ প্রত্যক্ষে। ধীর, অতি-শ্লথ গতিতে নিপুণ রূপদক্ষের মতো ওই মুদ্রা তিনি কুঁদে তুললেন তাঁর দেহসৌষ্ঠবে। আঁধার-আকীর্ণ সে রাত্রে অপরিমেয় নক্ষত্রের মতো জ্বলে উঠল এক-একেকটি আঙ্গিক আর অভিনয়।               

আরও পড়ুন
রয়্যাল আর্ট কলেজ, রটেনস্টাইন ও রবীন্দ্রনাথ

'রাধা-কৃষ্ণ' নৃত্যে উদয়শঙ্কর ও আনা পাভলোভা।

 

উদয় তখন ঘুরছেন আনার সঙ্গে। নিউ ইয়র্ক হয়ে তাঁরা পৌঁছোলেন  শিকাগো। তারপর কানাডা, ব্রিটিশ কলম্বিয়া। আনার দল ঘুরতে লাগল আরো কত কত দেশ কত কত জায়গা। আনা পাভলোভা উদয়শঙ্করের ‘রাধাকৃষ্ণ’ নৃত্য শিল্পের এক অত্যুচ্চ শিখরকে স্পর্শ করল। অনুষ্ঠান শেষেও মঞ্চ জুড়ে ছড়িয়ে থাকত তার অনুরণন। তাঁদের প্রতিভাকে কুর্নিশ জানাল সমকাল। এই জুটির কদর হল খুব। শো দেখতে উপচে পড়ল ভিড়। সংবাদপত্রে হল ভূয়সী প্রশংসা। এই ঘনঘোর ব্যস্ততা, দিবারাত্র শিল্পের আবর্তে বাঁচা কী অনন্য এক জীবন। উদয় এর আকর্ষণ অনুভব করলেন। 

শুধু মাঝে মাঝে বিপরীত অবস্থায় অস্থির হয়ে উঠতেন তিনি। আনার সমস্ত অনুষ্ঠানে ভারতীয় নৃত্য পরিবেশিত হত না। সেই সময়টা প্রতীক্ষা করতে হত তাঁকে। সকলেই কর্মব্যস্ত, অথচ কর্মহীন বিরস দিন তাঁর কাছে হয়ে উঠত অসহনীয়। একদিন আনাকে অনুরোধ করে বসলেন, তাঁর ওই নৃত্যকলা তাঁকে শিখিয়ে দিতে। তিনি না-হয় অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবেই থাকবেন ওই সময়টা। শোনামাত্র স্তম্ভিত হয়ে গেলেন আনা পাভলোভা। হয়ে উঠলেন চরম ক্রোধান্বিত। বললেন, কক্ষনো নয়। উদয়ের শিল্পবোধকে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। দেখেছেন তাঁর স্বকীয়তা। বিদেশীয় বিষয় নয়, উদয় যেন সম্পূর্ণত মনোযোগ দেন তাঁর দেশীয় শিল্পকলার শিক্ষাগ্রহণে। পূর্ণভাবে তাকে জানা, বোঝা, শেখা তাঁর পক্ষে সর্বাগ্রে প্রয়োজন। তুলনাহীন আরো একখানা কথা আনা যোগ করেছিলেন এইখানে। শেখার পর তুমি নিজের দল তৈরি করে এখানে এসো। আমাদের শেখাও। রটেনস্টাইনের কথা কি মনে পড়ল তাঁর? নিজের দেশকে তাঁরা গভীরভাবে জেনেছেন, গভীর মর্যাদায় জেনেছেন, সেইজন্য অন্য দেশের শিল্পকে তাঁরা সংগ্রহ করতে চাননি, চেয়েছেন গ্রহণ করতে। উদয়শঙ্কর বুঝলেন।

Powered by Froala Editor