আবারও ‘কালাপানি’

‘কালাপানি’ আন্দামান - ২০
আগের পর্বে

১৯০৩ সাল থেকেই কাজের খোঁজে আমেরিকা, কানাডা-সহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেন পাঞ্জাবি কৃষকেরা। তবে অনেকক্ষেত্রেই সেখানে অপমানিত হতে হতো তাঁদের। ব্রিটিশ কাউন্সেলরকে নালিশ করেও লাভ হয়নি। ফলত প্রস্তুতি শুরু হয় এক-জোট হওয়ার। প্রতিষ্ঠিত হয় বিপ্লবী সংগঠন ‘হিন্দুস্থান অ্যাসোসিয়েশন অফ প্যাসিফিক কোস্ট’। প্রকাশিত হয় গদর পত্রিকা। চলতে থাকে সশস্ত্র বিপ্লবের আয়োজনও। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর প্রাক্বালে সারা বিশ্ব থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন পরিযায়ী পাঞ্জাবীরা। লক্ষ্য, ভারতের স্বাধীনতার জন্য আঘাত আনা ব্রিটিশ শক্তির ওপর। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল গদর আন্দোলন। তারপর…

১৯১৫ সালে ‘Defence of India Act’ আইনে ভারতীয় বিপ্লবীদের আটক করা সহজ হয় এবং বিচারব্যবস্থার প্রহসনের মাধ্যমে তাদের সাজাদান কঠোর করা হয়। গদর বিপ্লবের সমস্ত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বকে গ্রেপ্তার করা হলে তাঁদের ওপর নতুন আইনে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে – লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার বিচার শুরু হয়। ২৬ এপ্রিল ১৯১৫ রাসবিহারী বসু-সহ ১৭ জন পলাতক – মোট ৮২-জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হল এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯১৫ মামলার রায় ঘোষণা করা হল। এই রায়ে কর্তার সিং সারাভা, সোহন সিং ভাকনা এবং বিষ্ণু গণেশ পিংলে সহ ২৪ জনের ফাঁসির আদেশ হল, ২৭ জনের যাবজ্জীবন ‘কালাপানি’র আদেশ এবং ৬ জনের মেয়াদি কারাদণ্ড হল। মুক্তি পেলেন ৪ জন। এই রায়দানে মানুষের মধ্যে প্রবল অসন্তোষের সৃষ্টি হল এবং জাতীয় প্রেস সরকারের বিরূপ সমালোচনা করল। লর্ড হার্ডিঞ্জ লাহোরে এলেন। তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে ১৭ জনের ফাঁসির আদেশ রদ করে তাঁদের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরে পাঠালেন। বাকি ৭ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রইল। এঁরা হলেন – কর্তার সিং সারাভা, বিষ্ণু গণেশ পিংলে, জগৎ সিং সুরসিং, হরনাম সিং শিয়ালকোটি, বকশিস সিং গিলওয়ালী, সুরেন সিং (পিতা গুর সিং) এবং সুরেন সিং (পিতা ঈশ্বর সিং) – শেষোক্ত এই দুজনেই গিলওয়ালী গ্রামের সন্তান। ১৭ নভেম্বর ১৯১৫ হাসিমুখে ভারতবর্ষের এই সাত বীর সন্তান ফাঁসির দড়িকে চুম্বন করে শহিদ হলেন। 

গদর বিপ্লবের ৪০ জন বীর পাঞ্জাবি-শিখ, লুধিয়ানার ১৮ বছর বয়সি কৃপাল সিং থেকে শুরু করে অমৃতসরের মারহানা গ্রামের ৬২ বছরের কেহর সিং – সবাইকে নভেম্বর-ডিসেম্বর ১৯১৫-তে আন্দামানে চালান দেওয়া হল। ভারতের পাশাপাশি মান্দালয়তেও বেশ কিছু গদর বিপ্লবী পৌঁছেছিলেন আগে এবং বার্মার মাটিতেও তাঁরা বিপ্লবের প্রস্ততি শুরু করেছিলেন। কিন্তু এখানেও তাঁদের গোপন চক্রান্ত ফাঁস হয়ে যায়। গদর দলের বার্মার নেতা  পণ্ডিত সোহনলাল পাঠক ১৪ আগস্ট  ১৯১৫-তে ধরা পড়েন। ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬ মান্দালয় জেলে তাঁর ফাঁসি হয়। মান্দালয় ষড়যন্ত্র মামলায় (১৯১৬) ৬ জন শিখ-গদর নেতার ‘কালাপানি’র আদেশ হয় এবং তাঁদের আন্দামানে সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। এরপর ১৯১৭ সালে বার্মাতে আরো কিছু গদর নেতা ধরা পড়লে দ্বিতীয় মান্দালয় ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয়। এই মামলায় মুজতবা হোসেন ওরফে মুলচাঁদ, বাবু অমর সিং, আলি আহমেদ সিদ্দিকি এবং সাসোলি গ্রামের রামরক্ষার দ্বীপান্তরের আদেশ হলে পরে তাঁদেরও আন্দামানে সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। এঁরা ছাড়াও গদর বিপ্লবে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টের যে সমস্ত সৈনিকেরা ধরা পড়েছিলেন তাঁদের ৬ জনকে পাঠানো হল আন্দামানে। এছাড়াও ১৬ ডিসেম্বর অমৃতসরে খালসা কলেজের অধ্যক্ষের বাড়িতে অধ্যাপক ডানক্লিফকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ধরা পড়া মাস্টার ছত্তর সিং সাংলাকেও পাঠানো হয় আন্দামানে। আবার এই গদর বিপ্লবের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেনারসে ‘অনুশীলন সমিতি’র প্রথম শ্রেণির বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যালকেও বারাণসী ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করে ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬-এর রায়ে আন্দামানে পাঠানো হয়। লুধিয়ানা জেলার শিখ নেতা এবং সাহিত্যিক রণধীর সিংকেও এই সময় গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আন্দামানে দ্বীপান্তরিত করা হল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ধরা পড়লেন আরেক বিপ্লবী, গোবিন্দচরণ কর; তাঁকে সাত বছরের জন্য আন্দামানে পাঠানো হয়। পরে তিনি মুক্তি পেয়ে আবারও বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িয়া পড়েন এবং কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁর আবারও যাবজ্জীবন ‘কালাপানি’র সাজা হয়। অর্থাৎ এযাত্রায় গদর বিপ্লবের সঙ্গে জড়িত মোট ৬০ জনের স্থান হয় সেলুলার জেলে।

পাঞ্জাবের পাশাপাশি বাংলাও কিন্তু বিপ্লবের প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই।  তাঁদের অসমসাহসিক কার্যকলাপ ব্রিটিশদের মারাত্মক উদ্বেগে রেখেছে।  ২৭ মার্চ ১৯১৩ সিলেটের (বর্তমানে বাংলাদেশে) মৌলভি বাজারে বোমা ছোঁড়া হল। নভেম্বর ১৯১৩ – কলকাতার রাজাবাজারে আপার সার্কুলার রোডে ২৯৬-১ নম্বর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হল। যথেষ্ট পরিমাণ বোমা তৈরির উপকরণসহ সেখান থেকে ধরা পড়লেন শশাঙ্কশেখর হাজরা ওরফে অমৃতলাল হাজরা, দীনেশচন্দ্র সেনগুপ্ত, চন্দ্রশেখর দে এবং সারদাচরণ গুহ। পরে এই  ঘটনার সঙ্গে জড়িত কালীপদ ঘোষ ওরফে উপেন্দ্রলাল রায়চৌধুরী এবং খগেন্দ্রনাথ চৌধুরী ওরফে সুরেশচন্দ্র চৌধুরীকেও গ্রেপ্তার করা হল। শুরু হল রাজাবাজার বোমা মামলা। এই মামলার শুনানি রায়বদল ইত্যাদি হয়ে অবশেষে শুধুমাত্র অমৃতলাল হাজরার পনেরো বছরের আন্দামানে দ্বীপান্তরের সাজা হল।

১৯০৪-এ ‘ঢাকা অনুশীলন সমিতি’র অনুরূপ বরিশালে গড়ে উঠল ‘বরিশাল সমিতি’। যতীন দাস ছিলেন এই সমিতির প্রথম প্রধান। এঁদের মূল লক্ষ্য ছিল ভারত থেকে ব্রিটিশ সরকারকে তাড়ানো। তাই তাঁদের মূল কার্যক্রম হয়ে দাঁড়াল বিভিন্ন স্কুল থেকে বিপ্লবের জন্য ছেলে সংগ্রহ করা, অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করা এবং যারা বিশ্বাসঘাতকতা বা চরবৃত্তি করবে তাদের চরম শাস্তি দেওয়া। অর্থ সংগ্রহের জন্য বরিশাল সমিতির সদস্যরা ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯১০ থেকে ১৪ নভেম্বর ১৯১২ – এই দুই বছরে প্রায় চোদ্দটি রাজনৈতিক ডাকাতি করে। ১২ মে ১৯১৩, ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, বাকিরা পালিয়ে যান। শুরু হয় বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলা। এই মামলায় দু’জন রাজসাক্ষী হয়, সাতজনকে ম্যাজিস্ট্রেট মাফ করে দেন, বাকি ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়। সেশন কোর্ট ২ জনকে মুক্তি দেয়, মামলা চলাকালীন ১২ জন অপরাধ স্বীকার করে এবং তাঁদের সাজা হয়।  বাকি ১৪ জনের ওপর থেকে মামলা তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ৫ জানুয়ারি ১৯১৫ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী সহ আরো পাঁচজন, যাঁরা পলাতক ছিলেন, ধরা পড়েন। তাঁদেরও এই মামলায় যুক্ত করা হয়।  পুলিনবিহারী দাশের মতো ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী (মহারাজ) ছিলেন ঢাকা অনুশীলন সমিতির সদস্য। ১৯০৯ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং সেই সময়ে ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলায় পুলিশ তাঁর অনুসন্ধান শুরু করলে তিনি গা-ঢাকা দেন। তারপর তিনি আগরতলায় উদয়পুর পাহাড় অঞ্চলে গিয়ে গোপন ঘাঁটি তৈরি করেন। ১৯১২ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ কিন্তু প্রমাণাভাবে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯১৩-১৪ সালে তিনি মালদহ, রাজশাহী ও কুমিল্লায় ঘুরে ঘুরে বিপ্লবী দলের ঘাঁটি তৈরি করেন। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে নতুন করে সাপ্লিমেন্টারি বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয়। ত্রৈলোক্যনাথ ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলাতেও আসামি ছিলেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এবার ঢাকা, বরিশাল এবং চোদ্দটি খুনের আসামি সন্দেহে পনেরো বছরের দ্বীপান্তরের সাজা হয়। ত্রৈলোক্যর সঙ্গে মদনমোহন ভৌমিক এবং খগেন্দ্রনাথ চৌধুরীকে দশ বছরের জন্য আন্দামানে চালান দেওয়া হয়। 

আরও পড়ুন
গদর বিপ্লবের সূচনা

যতীন্দ্রনাথ মুখার্জী (বাঘা যতীন) ইতিমধ্যে কলকাতার বুকে দল গঠন করে নানা ধরনের রাজনৈতিক কার্যকলাপ শুরু করে দিয়েছেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে অস্ত্রশস্ত্রের প্রয়োজন। তা কেনার জন্য লাগবে টাকা। ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৫ গার্ডেনরিচে মেসার্স বার্ড কোম্পানির ১৮,০০০ টাকা এবং ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৫ বেলেঘাটায় ললিত মোহন সাহার বাড়ি থেকে ২০,০০০ টাকা লুঠ করা হল। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, পাথুরিয়াঘাটায় পুলিশ অফিসার নীরদপ্রসাদ হালদার এবং ২৮ ফেব্র্যয়ারি কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটে আরেক পুলিশ অফিসার সুরেশচন্দ্র মুখার্জী খুন হল।  মার্চ মাসের শেষে যতীন তাঁর বিশ্বস্ত সেনানীদের নিয়ে রওনা হলেন বালেশ্বরে মহানদীর মোহনার দিকে। সেখানে পিস্তল জোগান পাবার কথা ছিল।  সেপ্টেম্বর ১৯১৫, পুলিশ তাঁদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলল। মহানদীর তীরে শুরু হল অসম গুলির লড়াই। এই বুড়িবালামের যুদ্ধে নিহত হলেন চিত্তপ্রিয় রায়। সাংঘাতিকভাবে আহত হলেন যতীন মুখার্জী এবং জ্যোতিষচন্দ্র পাল। কিছুদিন পরে মারা গেলেন যতীন মুখার্জী। নীরেন দাশগুপ্ত এবং মনোরঞ্জন গুপ্ত ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে। নীরেন এবং মনোরঞ্জনের ফাঁসি হল এবং জ্যোতিষের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের সাজা হল।

৩০ এপ্রিল ১৯১৫, যুগান্তর দলের বিপ্লবীরা দৌলতপুর থানার পরাগপুর গ্রামে হরিনাথ সাহার দোকান লুঠ করে (টাকাপয়সা ও অলংকারসহ প্রায় সাত হাজার টাকা হবে) নদীপথে পালানোর সময় গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ করে এবং পুলিশ গুলি চালালে নৌকার মধ্যে সুশীল সেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং আশু লাহিড়ী, গোপেন রায়, ক্ষিতীশ সান্যাল এবং ফণি রায় ধরা পড়েন। বিচারে প্রথম তিনজনের ১৭ বছর এবং শেষোক্তজনের আট বছরের সাজা হয়। প্রত্যেককেই আন্দামানে চালান দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন
আবারও ধর্মঘট, দাবিপূরণ ও মূল ভূখণ্ডে রাজবন্দিদের প্রত্যাবর্তন

৩০ সেপ্টেম্বর ১৯১৫ যুগান্তর দলের বরিশাল গ্রুপের বিপ্লবীরা নদীয়ার শিবপুরে মহাজন কেষ্ট বিশ্বাসের বাড়ি লুঠ করে প্রায় ২০,০০০ টাকা অর্থমূল্যের নগদ ও গয়না সংগ্রহ করে। এঁরাও নদীপথে পালাতে গিয়ে গ্রামবাসীদের তাড়া খায় এবং পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াই বাঁধে। একজন পুলিশ এঁদের ছোঁড়া গুলিতে মারাও যায়। এই ঘটনায় অনেকে ধরা পড়েন এবং ‘শিবপুর ডাকাতি মামলা’ শুরু হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬-তে এই মামলার রায় বেরোলে দেখা যায় এই মামলার সঙ্গে জড়িত এক সংস্কৃত পণ্ডিত হরেন্দ্রনাথ কাব্যতীর্থ সহ ন’জনের দশ বছরের জন্য কালাপানির সাজা হয়।

ব্রিটিশ শক্তির হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখা কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না। যদিও ভারতবর্ষ দৈর্ঘে-প্রস্থে এক বিশাল দেশ। অনেক ভাষাভাষী রাজ্যের সমাহার। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্য নিয়ে লড়ছেন যে যুবকরা তাঁদের অবস্থান ভারতের দুই প্রান্তে – পূর্বে বাংলা (পশ্চিম ও পূর্ব বাংলা) এবং পশ্চিম প্রান্তে পাঞ্জাব। দেশ ভাগ হবার সময় তাই বুঝি কোপ পড়েছিল এই দুটি প্রদেশের ওপরেই। পাঞ্জাব ও বাংলাকে কেটে দুভাগ করে একভাগ তুলে দেওয়া হল পাকিস্তানের হাতে। যদিও পাকিস্তান তার পূর্ব দিককে ধরে রাখতে পারেনি। ১৯৭১-এ উর্দু ভাষার আধিপত্য মেনে নিতে পারেননি বাঙালিরা। পাকিস্তান ভাগ হয়ে বাংলাদেশের জন্ম সুনিশ্চিত করতে আবারও রক্ত ঝরল বাঙালিদের। সে অন্য ইতিহাস। আমরা বরং ফিরে যাই সেই আগুনখেকো দিনগুলিতে যখন তরুণ শ্রেণি বুকের মধ্যে আগুন নিয়ে ঘুরছে আর ব্রিটিশ শাসক তাঁদের বিচারের প্রহসনে ফেলে হয় ফাঁসিকাঠে লটকে দিচ্ছে অথবা ঘানি পিষতে, চাবুক খেতে পাঠিয়ে দিচ্ছে কালাপানি পার করে আন্দামান সেলুলার জেলে। এত মার, এত অত্যাচার সত্ত্বেও মাথা নিচু করছে না এই বিপ্লবীরা। সালটা ১৯১৫ পাঞ্জাব  লড়াই করছে, বাংলা লড়াই করছে আর ওইদিকে তখন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরছেন মহাত্মা গান্ধী।

আরও পড়ুন
সেলুলারে প্রতিবাদ, ধর্মঘট ও ভুখা হরতাল

Powered by Froala Editor