৯৬ শতাংশ সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে ‘ডবল মাস্ক’, পরামর্শ চিকিৎসকদের

একটানা ৭ দিন ধরে ২ লক্ষের বেশি দৈনিক সংক্রমণ। কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের আঘাতে নাজেহাল অবস্থা ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার। হাসপাতালে খালি নেই শয্যা, নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থাও। এক আতঙ্কের ছবি দেশজুড়ে। তবে লকডাউনের পথে এক্ষুনি হাটছে না সরকার, তা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। ফলত, সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই কাজে বেরতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষকে। আর সুরক্ষা? প্রশ্ন উঠছিল, একটি পরিবর্তে দুটি মাস্কের ব্যবহার কি বেশি সুরক্ষা প্রদান করবে আমাদের? এবার সে ব্যাপারেই পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকরা।

‘ডবল মাস্কিং’। এই কথাটা গত মাস থেকেই নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে উঠে এসেছিল। অনেকেই মন্তব্য করছিলেন একটির পরিবর্তে দুটি মাস্কের ব্যবহার চাপ সৃষ্টি করতে পারে মানুষের শ্বাস প্রক্রিয়ায়। তবে ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, একেবারেই সেই আশঙ্কা নেই। বরং, দুটি মাস্কের ব্যবহার অধিকতর নিরাপত্তা দেবে মারণ ভাইরাসের থেকে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দুটি মাস্কের ব্যবহার প্রায় ৯৬ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে। শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির থেকেই সুরক্ষা প্রদান নয়, আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির ‘ডবল মাস্ক’ ব্যবহারে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়াও আটকানো যেতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। প্রথমত, মাস্কের বাইরের স্তর ভেদ করে ওয়াটার ড্রপলেটের পরিস্রাবণ ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। পাশাপাশি ডবল মাস্কিং-এর ফলে বাইরের মাস্কটির চাপে, ভিতরের মাস্কের প্রান্তভাগ চেপে বসে যায় ত্বকের সঙ্গে। ফলত মাস্কের ফাঁক দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে না। আর সেই কারণেই ট্রেন স্টেশন, বাস, এয়ারপোর্টের মতো যে কোনো জনবহুল অঞ্চলেই দুটি মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ করছেন সংক্রামক বিশেষজ্ঞরা।

এ-কথাও ঠিক যে ‘ডবল মাস্কিং’-এর কারণে অনেক সময় নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসেও অসুবিধা হচ্ছে কিছু মানুষের। তবে সেক্ষেত্রে দুটি কাপড়ের মাস্ক বা একটি সার্জিকাল মাস্কের ওপরে কাপড়ের মাস্কের ব্যবহার স্বস্তি দিতে পারে অনেকটা। আর একান্তই যদি ‘ডবল মাস্কিং’-এর ব্যবহার সম্ভব না হয়, তা হলে এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করার আর্জি জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অথবা ব্যবহার করতে পারেন ফেসশিল্ডও। শিশুদের ক্ষেত্রে আপাতত ডবল মাস্ক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন
করোনাকালে গৃহহীন ইংল্যান্ডের ৭ লক্ষ পরিবার!

তবে ডবল মাস্ক ব্যবহারেই যে সম্পূর্ণ নিরাপদ তেমনটা নয়। একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে প্রাথমিক সুরক্ষাবিধির কথাও। ব্যবহার করতে হবে স্যানিটাইজার। তাছাড়া নিয়মিত ব্যবহৃত কাপড়ের মাস্কগুলিকে গরম জলে ধুয়ে নিতে হবে। তা না হলে, ডবল মাস্ক পরেও লাভ হবে না কোনো। এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও মাস্ক ব্যবহার করছেন না অনেকেই। এমনকি, মেনে চলছেন না মাস্ক পরার সঠিক নিয়মও। সেখানেই প্রশ্ন থেকে যায়, গণ-সচেতনতা গড়ে না উঠলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ওপর ভরসা করে ঠিক কতদিন সুরক্ষিত থাকতে পারবে মানুষ?

আরও পড়ুন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় না মস্তিষ্ক, প্রমাণ দিলেন গবেষকরা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ড্রপলেট নয়, করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত; জানাচ্ছে সাম্প্রতিক গবেষণা

More From Author See More