ভারতীয় সাংকেতিক ভাষার শব্দকোষ, জড়িয়ে শাহরুখ খানও!

মানব সভ্যতার অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল সমাজ। একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ, ভাষার আদান প্রদান সম্ভব না হলে হয়তো সভ্যতা গড়ে উঠত না কোনোদিনই। কিন্তু শব্দ উচ্চারণ না করেও কি মনের ভাব প্রকাশ করা সম্ভব? আলবাত, সম্ভব। আর তা হল ইশারা এবং অঙ্গভঙ্গির সংকেতের মাধ্যমে। উচ্চারিত শব্দ মূক ও বধিরদের কাছে বোধগম্য করে তুলতেই ব্যবহৃত হয় এই ভাষা। রয়েছে এই ভাষার বিশেষ শব্দকোষও।

সাংকেতিক ভাষারও পিছনেও লুকিয়ে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। আর তা কথ্য ভাষার থেকেও পুরনো। শব্দ জন্ম নেওয়ারও আগে থেকেই গড়ে উঠেছিল মানব সভ্যতা। পরবর্তীতে কথ্যভাষার বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বদলেছে সাংকেতিক ভাষাও। স্বতন্ত্র ভাষা হিসাবে তাকে মর্যাদা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। তবে বিষয় হল, অঞ্চলের সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যায় সংকেতের ধরণ। ফলত, আবশ্যিক হয়ে উঠেছিল দেশ ভিত্তিক সাংকেতিক ভাষার শব্দকোষ তৈরিও।

২০০১ সালের কথা। এই লক্ষ্য নিয়েই ভারতে প্রথম গড়ে উঠেছিল ইন্ডিয়ান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ সোসাইটি। কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত হয়েছিল ৪ হাজার শব্দের সাংকেতিক শব্দকোষ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জুড়েছে আরও বহু নতুন নতুন শব্দ। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই ডিকশনারির তৃতীয় মুদ্রণ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে এই শব্দকোষে শব্দের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার। সদ্য-প্রকাশিত এই শব্দকোষ সিবিএসসি-র পাঠ্যক্রমেও সংযুক্ত হতে চলেছে বলে জানাচ্ছে আইএসএল সোসাইটি।

আরও পড়ুন
১০৭টি ভাষা নিয়ে ভারতের সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জেলা বেঙ্গালুরু

আজ আন্তর্জাতিক সাংকেতিক ভাষা দিবস। সেই কথা মাথায় রেখেই বেশ কিছু নতুন শব্দও সম্প্রতি সংযোজিত হল আইএসএল শব্দকোষে। শুধু ক্রিয়া, অব্যয় কিংবা প্রচলিত শব্দই নয়। ভারতীয় সাংকেতিক ভাষার শব্দকোষের সাম্প্রতিক সংস্ক্ররণে জায়গা করে নিলেন একাধিক তারকাও। আগেই সেখানে বিশেষ সংকেত বরাদ্দ হয়েছিল বিগ-বির জন্য। এবার সেই তালিকায় জায়গা পেলেন শাহরুখ খানও।  

আরও পড়ুন
সিন্ধু সভ্যতায় দ্রাবিড় গোষ্ঠীর ভাষা-ব্যবহার, হদিশ দিলেন বাঙালি গবেষক

বর্তমানে ভারতে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে সাংকেতিক ভাষার পাঠ দেওয়া হয়। এই সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি, মূক ও বধিরদের বাইরে সাধারণ মানুষকেও সাংকেতিক ভাষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেননা বিশেষভাবে সক্ষমরা নিজেদের মধ্যে সাংকেতিক ভাষায় যোগাযোগ করতে পারলেও, বিচ্ছিন্ন থেকে যান সমাজ থেকে। সেই বৈষম্যকে মুছে ফেলে, তাঁদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর জন্যই এই উদ্যোগ। আর তা সার্বিকভাবে সফল হলে, সাংকেতিক ভাষাও যে সংরক্ষিত হবে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো…

আরও পড়ুন
বাংলা-সহ ৩০টি ভাষায় ইমোজি প্রকাশ অলিম্পিক কমিটির

Powered by Froala Editor

More From Author See More