ঘরে বসেই পুজো পরিক্রমা : দক্ষিণ কলকাতা

/১১

করোনা আবহে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছে মণ্ডপে। কিন্তু তাবলে কী প্রতিমা দর্শন না করেই পুজো কাটিয়ে ফেলা যায়? অগত্যা ভরসা ভার্চুয়াল মিডিয়াই। আজ থাকল দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত পুজোগুলির প্রতিমা।

/১১

৬৬ পল্লীর মণ্ডপটি সত্যজিৎ ট্রিলজির দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ 'অপরাজিত'এর ভাবনায় পরিকল্পিত। বেনারসের দশাশ্বমেধ ঘাটের চিত্রটি বর্ণিত হয়েছে চমৎকারভাবে। মূল মণ্ডপে রয়েছে দুর্গারূপী সর্বজয়া, যিনি কোলে অপুকে নিয়ে বসে রয়েছেন। মাটির দেওয়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে দশটি হাত। সামগ্রিক রূপায়ণে দীপ দাস এবং ঈশিকা চন্দ্র, প্রতিমা নির্মাণে সৈকত বসু।

/১১

৬৪ পল্লীর এবছরের ভাবনা 'অবিকল্প'। রবীন্দ্রনাথের 'বিসর্জন' নাটকটির অনুষঙ্গ ব্যবহৃত হয়েছে গোটা মণ্ডপটির পরিকল্পনায়। সামগ্রিক ভাবনা রূপায়ণে রয়েছেন শিল্পী বিশ্বনাথ দে। মণ্ডপের সামনে রয়েছে একটি লাল বর্ণের বিশালাকার পা। তারপর অজস্র হাড়িকাঠ। মূল মণ্ডপটি তৈরি হয়েছে মন্দিরের আদলে। মাতৃমূর্তি নির্মাণে অরুণ কুমার পাল এন্ড সন্স। মণ্ডপটি বেশ খোলামেলা, সাম্প্রতিক স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে।

/১১

সুরুচি সংঘের এবারের শিল্পী ভবতোষ সুতার। গোটা মণ্ডপ জুড়ে রঙের ছোঁয়া। রয়েছে বাঁশ, গামছা, এবং কাপড়ের ব্যবহার। আবহসংগীত হিসেবে চালানো হয়েছে 'মানুষ মানুষেরই জন্য' গানটির বাঁশিতে বাজানো সুর। প্রতিমাটির অলঙ্করণে রয়েছে উলের ব্যবহার। সাবেকি টানা চোখের প্রতিমার মধ্যেও যেন রয়েছে নিখুঁত শিল্পের নিদর্শন। বেশ খোলামেলা মণ্ডপটি এবারের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে।

/১১

কালীঘাট মিলন সংঘের এ বছরের বিষয় 'অন্তর বাহির'। শিল্পী বিশ্বনাথ দে। গোটা মণ্ডপটি সেজে উঠেছে লাল রঙের কাপড়ে। মণ্ডপের ভেতরে রয়েছে অনেকগুলি দরজার ইনস্টলেশন। মণ্ডপের মাঝখানে সেই দরজার ঠিক সোজাসুজি বসানো রয়েছে মাতৃপ্রতিমা। প্রতিমার মুখ সাবেকি ধাঁচের হলেও তার অলঙ্করণ অভিনব। প্রতিমাটি নির্মাণ করেছেন অরুণ পাল এন্ড সন্স। ঘর এবং বাহিরের সংকট যেন এই মণ্ডপে ফুটে উঠেছে সুচারুভাবে।

/১১

হাজরা পার্কের এই বছরের বিষয় 'সহজিয়া'। শিল্পী কৃশানু পালের তত্ত্বাবধানে সেজে উঠেছে এই মণ্ডপ। ছোটোদের আঁকা বিভিন্ন ছবি রয়েছে মণ্ডপ জুড়ে। কাঠের ফ্রেমে বাঁধানো সেইসব ছবি পরপর ঝুলিয়ে তৈরি হয়েছে পুরো মণ্ডপের সজ্জা। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে বাঁশ, কাঠ, সিন্থেটিক তুলো এবং প্লাস্টিকের বোতল। ছোটোদের আঁকার মাধ্যমে সহজ-সরল একটি পুজোর আবহকে পরিবেশন করা হয়েছে এখানে।

/১১

শিবমন্দির সর্বজনীনের এবারের বিষয় 'দেবী'। সত্যজিৎ রায়ের দেবী চলচ্চিত্রটির পোস্টার এখানে ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডপের পরিকল্পনায়। মণ্ডপ সজ্জায় বিভিন্ন রকমের চিত্রাঙ্কন ব্যবহার করা হয়েছে, রয়েছে একটি পোড়ো বাড়ির আদল। দেবীমূর্তিটিও রৌদ্ররসের আধার। অনেকটা পুরনো মন্দিরের আদলে তৈরি গোটা মণ্ডপটি। পরিকল্পনা এবং রূপায়ণে সঞ্জিত ঘোষ এবং অরিজিৎ আম্বলী।

/১১

শিল্পী অনির্বাণ দাসের ভাবনায় সেজে উঠেছে চেতলা অগ্রণী ক্লাবের এবছরের মণ্ডপ। "ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর, এখনি অন্ধ বন্ধ কোরো না পাখা ", এই পঙক্তিকে উপজীব্য করেই গড়ে উঠেছে মণ্ডপ ভাবনা। একটি উড্ডীয়মান পাখির আকারে গোটা মণ্ডপটি তৈরি এবং তার ভেতরে রয়েছে একটি বিরাটাকার নটরাজ মূর্তি । তার সামনে রয়েছে শিল্পী নবকুমার পালের তৈরি অপরূপ মাতৃ প্রতিমা। যেন অনন্ত মহাকালের সামনে দেবী এখানে আবির্ভূতা হয়েছেন অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে।

/১১

সত্যজিৎ ট্রিলজির এটি শেষ ধাপ। এই মণ্ডপটি সত্যজিৎ রায়ের 'অপরাজিত' চলচ্চিত্রটির নানা টুকরো অংশ দিয়ে সাজানো। সমগ্র মণ্ডপটি তৈরি করেছেন ক্লাবের সদস্যরাই। সাবেকি আদলে তৈরি মাতৃমূর্তি অনবদ্য প্রতিমা নির্মাণে অরুণ কুমার পাল এন্ড সন্স। মণ্ডপটি দুপাশে রয়েছে ফিল্মের আকারে একটি দীর্ঘ চিত্রসরণি।

১০/১১

এবারে এই তিনটি পরপর পুজো একটি থিমের আধারে তৈরি হয়েছে। বাদামতলা আষাঢ় সংঘের বিষয় হল 'পথের পাঁচালী'। দেবীমূর্তিটি তৈরি হয়েছে পথের পাঁচালীর 'দুর্গা'র আদলে। মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে অপু। গোটা মণ্ডপটি একটি পুরনো রাজবাড়ির ঠাকুরদালানের মতো। সেই পথের পাঁচালীর দুর্গা, যাকে অপুর মনে হয়েছিল দেবীরূপে বিশালাক্ষী মন্দিরে বিরাজ করছে, তাকেই যেন এখানে আরাধনা করা হয়েছে। সামগ্রিক পরিকল্পনায় স্নেহাশিস মাইতি এবং প্রতিমা নির্মাণে রয়েছেন শিল্পী পূর্ণেন্দু দে।

১১/১১

আলিপুর ৭৮ পল্লীর এবছরের থিম 'ধর্মঘট'। নবীন এই পুজোর এবারের মণ্ডপটি গড়ে উঠছে শিল্পী অভিজিৎ ঘটক এর তত্ত্বাবধানে। মূল মণ্ডপে ঢোকার আগে বাঁদিকে বেশ কিছু মেলার দোকানের মতো অংশ তৈরি করা হয়েছে। এরপর পুরো কাজটি তৈরি হয়েছে বাঁশ আর মাটি দিয়ে। আশেপাশের বাড়িগুলির সামনেও রয়েছে আলপনা। ধর্মঘট এক্ষেত্রে বন্‌ধ অর্থে নয়, ধর্মঘট এখানে উৎসবেরই একটা অঙ্গ। সামগ্রিক প্রতিমা কল্পনাতেও রয়েছে এই ধর্মঘটের ব্যবহার। টুসু পরবে ব্যবহৃত মূর্তি এবং ঘট এই দুইয়ের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে মাতৃমূর্তির পরিকল্পনা। মণ্ডপের চতুর্দিকে বসানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের গাছ।

Powered by Froala Editor