এক ক্লিকেই ঠাকুর দেখা, আজ বেহালার পুজো

১। বেহালা নূতন সংঘ

বেহালা ১৪ নং বাসস্ট্যান্ডের খুব কাছেই এই পুজো। এবার এরা পদার্পণ করল হীরক জয়ন্তী বর্ষে। এদের এবারের বিষয় ‘অন্তর্যাত্রা’। মানুষের জীবনের এক অন্তর্মুখী রূপকে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী। সমগ্র মণ্ডপের পরিকল্পনা এবং রূপায়ণে রয়েছেন শিল্পী সনাতন দিন্দা।  প্রতিমার মধ্যেও রয়েছে সনাতনী ছাপ। সোনালী বর্ণে শান্ত দৃষ্টিতে তিনি যেন শান্তি ও ক্ষমার প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছেন। মণ্ডপ নির্মাণে ব্যবহমত হয়েছে রংবেরঙের রঙিন কাপড়ের কোলাজ।

আরও দেখুন
উত্তর কলকাতার পুজো

২। বেহালা ফ্রেন্ডস ক্লাব

বেহালা নূতন সংঘের পূজামণ্ডপ থেকে বেরিয়ে আরেকটু সোজা গেলেই বাঁহাতে পড়বে বেহালা ফ্রেন্ডস ক্লাবের পুজো৷ এই ক্লাবের এবারের থিম ‘সবিনয় নিবেদন’। মণ্ডপ সজ্জায় উঠে এসেছে প্রায় হারিয়ে যাওয়া মুদ্রণযন্ত্র, পুরনো মুদ্রণের নানা দৃষ্টান্ত। মুদ্রণের ঐতিহ্যের ঝলকে তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁরা। আলোকসজ্জায় রয়েছেন পিন্টু দাস, আবহ নির্মাণে দিশারী চক্রবর্তী,  প্রতিমা তৈরিতে অরুণকুমার পাল এবং সামগ্রিক পরিকল্পনায় বিশ্বনাথ দে।

আরও দেখুন
দক্ষিণ কলকাতার পুজো

৩। বেহালা নতুন দল

বেহালা নতুন দলের পুজো ফ্রেন্ডস ক্লাব থেকে একটু এগিয়ে গেলেই ডান হাতে পড়বে। গত বেশ কয়েক বছরে থিমের অভিনবত্বে চমক জাগিয়েছে এই দল৷ এদের এবারের বিষয় হল জীর্ণ পুরাতন দেবালয়। শিল্পীর নিখুঁত টানে এক বাস্তব চেহারা পেয়েছে এই মণ্ডপ৷ পুরনো ভগ্নপ্রায় মন্দিরে অধিষ্ঠান করছেন ঘনকৃষ্ণ বর্ণের প্রতিমা। প্রতিমা স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিতা। মূল মন্দির সংলগ্ন আরও কয়েকটি মন্দির রয়েছে, যেখানে রয়েছেন চতুর্মুখী গণেশ এবং পঞ্চমুখী শিব।

আরও দেখুন
পূর্ব কলকাতার পুজো

৪। বেহালা বুড়ো শিবতলা জনকল্যাণ সমিতি

এদের পুজো অন্যদের তুলনায় যথেষ্ট তরুণ৷ ১৩ তম বর্ষপূর্তি ঘটল এদের। বিষয় ‘যন্ত্র না যন্ত্রণা’। সমগ্র পরিকল্পনা এবং রূপায়ণে রয়েছেন শিল্পী বলরাম ভুঁইয়া। প্রযুক্তিনির্ভর যুগে মানুষ হয়ে পড়েছে প্রযুক্তির দাস। প্রযুক্তিই বন্দি করেছে মানুষের মুক্ত স্বাভাবিক জীবন। সেই যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তির বাসনাতেই মাতৃ আরাধনায় রত হয়েছে মানুষ।

৫। চেতলা অগ্রণী

এবার এই ক্লাবের থিম ‘কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে’। সমগ্র মণ্ডপেই আমরা দেখতে পাব কলকাতা শহরের খণ্ড খণ্ড চিত্র। মণ্ডপের ওপরে সমগ্র কলকাতার একটা ত্রিমাত্রিক রূপ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিমাটিও উনিশ শতকের দেবীপ্রতিমার যে ছবি পাওয়া যায়, তার আদলে নির্মিত। সমগ্র পরিকল্পনা এবং সৃজনে রয়েছেন শিল্পী অনির্বাণ, আলোক সজ্জায় প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী।

৬। ঠাকুরপুকুর এস বি পার্ক

ঠাকুপুকুর স্টপেজে নামলেই রাস্তার ওপর এই পুজো। এটি তাদের প্রাক সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ। এবারের ভাবনা ‘আলপনা’। পরিকল্পনা এবং রূপায়ণে রয়েছেন শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে সমগ্র মণ্ডপে এবং প্রতিমার অলঙ্করণে ব্যবহৃত হয়েছে সুধীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের দেওয়া আলপনা।

৭। বড়িশা সর্বজনীন

এবারে বড়িশা সর্বজনীনের শিল্পী রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত গৌরাঙ্গ কুইলা৷ বিষয়ভাবনা হল ‘পালক’। সমগ্র মণ্ডপটি গড়ে উঠেছে উর্বরা কৃষিসংস্কৃতির আধারে। ধানের ছড়া, সেচের জল, কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম এই সমস্ত উপকরণই মিলবে মণ্ডপে। প্রতিমা এখানে গণেশজননী৷ গণেশ কোলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক গৃহকর্ত্রী। আটপৌরে গ্রাম্য আবহ খুঁজে পাওয়া যাবে এখানে।

৮। বেহালা ক্লাব

বেহালা ক্লাবের এবারের ভাবনা ‘প্রাণের পরব কথা’। গ্রাম্য কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি এক ঝলক উঠে এসেছে এখানে। পরবে ভরা বাঙালি জীবনের নানা খুঁটিনাটি বর্ণনা রয়েছে এখানে। আর সমগ্র মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে সুদৃশ্য সাদা আলপনা। সমগ্র পরিকল্পনায় অদিতি এবং প্রতিমা নির্মাণে অদিতি ও অরুণ পাল।

৯। বড়িশা ক্লাব

বড়িশা ক্লাব এবার পেল এশিয়ান পেইন্টস শারদ সম্মান ‘সেরা পুজো’ শিরোপা। রিন্টু দাসের পরিকল্পনায় সেজে উঠেছে গোটা মণ্ডপ। বিষয় হল মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং যত্রতত্র টাওয়ার তৈরিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পক্ষীকুল। অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হতে বসেছে। মণ্ডপে শোনা যাবে তেমনই বিপদসঙ্কুল পাখিদের আর্ত চিৎকার। আর একটি কাঠের গুঁড়ি খোদাই করে প্রতিমাটি নির্মাণ করেছেন শিল্পী উদয় শঙ্কর মণ্ডল।

১০। বেহালা দেবদারু ফটক

যখন চতুর্দিকে বাংলা এবং বাঙালির এই বিপুল সংকট, তখন বেহালা দেবদারু ফটক তুলে আনল ‘গ্ল্যাডলি বাঙালি’।  বাঙালি বলতেই যা যা মনে পড়ে আমাদের, সেই খাদ্যসামগ্রী, দৈনন্দিন অভ্যাস, সবটাই ধরা পড়েছে মণ্ডপ সজ্জায়। মণ্ডপ পরিকল্পনায় সুমি মজুমদার এবং শুভদীপ মজুমদার। প্রতিমা নির্মাণে পিন্টু শিকদার। প্রতিমার তৃতীয় চোখে একটি ক্যামেরা বসানো, প্রণাম করলে মা স্বয়ং ছবি তুলবেন দর্শনার্থীদের৷