কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই কবিতা-ছবির চর্চা, অভিনব উদ্যোগ নাগাল্যান্ডের গ্রামে

কোয়ারেন্টাইন মানে শুধুই একাকিত্ব আর অবসন্নতা নয়, বরং মানুষের সৃজনশীলতার বিকাশে একটা মাইল ফলক হয়ে থেকে যেতে পারে করোনার দিনগুলি। সারা পৃথিবীতেই এমন দৃষ্টান্ত অনেক দেখা গিয়েছে। কিন্তু নাগাল্যান্ডের যে গ্রামের কথা এখন পড়বেন, তা জানলে আশ্চর্য লাগবেই। এখানে একটা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারকেই বদলে ফেলা হয়েছে ক্রিয়েটিভিটি হাবে। সেখানে বসে কেউ কবিতা লিখছেন, কেউ ছবি আঁকছেন। আবার কেউ কেউ ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি করছেন সুন্দর সুন্দর শো-পিস।

সারা দেশের কোয়ারেন্টাইন বিধির থেকে নাগাল্যান্ডের বিষয়টা একটু আলাদা। এখানে কেবল ১৪ দিন নয়, দুটি দফায় মোট ২৮ দিন বন্দি দশায় কাটাতে হচ্ছে ঘরে ফিরে আসা প্রবাসীদের। স্বাভাবিকভাবেই মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে একাকিত্ব। কিন্তু সমাধান কী? সেই উত্তর দিল নর্থ-ইস্ট নেটওয়ার্ক নামের একটি এনজিও। তাঁদের উদ্যোগেই চিজামি গ্রামে তৈরি হয়েছে এই অভিনব কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। তবে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার না বলে কোভিড-১৯ ক্রিয়েটিভিটি হাব বলতেই আগ্রহী উদ্যোক্তারা। আর তাঁদের কথায়, এই সামান্য প্রচেষ্টা যদি অসংখ্য মানুষকে বেঁচে থাকার আশা জাগিয়ে রাখতে সাহায্য করে তাহলে তার থেকে খুশির আর কিছুই হতে পারে না।

বিগত বেশ কিছু বছর ধরেই নাগাল্যান্ডের মানুষের সামাজিক উন্নতির জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়ে আসছে এই এনজিও। গতবছর তাঁরা নারী স্বাধীনতা ও স্বনির্ভরতার জন্য যে একঝাঁক উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল সেই কাজ। তবে এখন সময়টা আরও কঠিন। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখন লড়তে হচ্ছে গোটা পৃথিবীকেই। আর এই যুদ্ধে একমাত্র হাতিয়ার কোয়ারেন্টাইন। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যে প্রভাব ফেলছে এই ব্যবস্থা, সেটা নিয়ে এভাবে বোধহয় আর কেউই ভাবেননি। নাহলে এই পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার হার হঠাৎ বৃদ্ধি পেত না। তবে চিজামি গ্রাম পথ দেখাচ্ছে। আর এই পথেই হয়তো আছে সমাধান।

Powered by Froala Editor

Latest News See More