ঘরে ফিরছেন শ্রমিকরা, কোয়ারেন্টাইনের জন্য বাঁশের কুটির তৈরি মণিপুরের গ্রামবাসীদের

লকডাউনের কড়াকড়ি ক্রমশ শিথিল হয়ে আসছে, স্বাভাবিক হচ্ছে পরিবহন ব্যবস্থাও। দেশের নানা প্রান্তে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা একে একে নিজেদের দেশ গ্রামে ফিরে আসছেন। তবে ফিরে আসার পর তাঁদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে, এমনটাই জানিয়েছে সরকার। কিন্তু গ্রামের ছোট্ট কুটিরে যাঁদের পরিবার নিয়ে বাস, তাঁদের জন্য সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের সুযোগ কোথায়?

সেই সুযোগ তৈরি করে দিলেন গ্রামবাসীরাই। মণিপুরের গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠছে বাঁশের কুটির। ইতিমধ্যে ৮০টি কুটির তৈরির কাজ শেষ। আর এই কুটিরেই থাকবেন ফিরে আসা শ্রমিকরা। পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের দিকে এভাবেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন মণিপুরের সেনাপতি জেলার গ্রামবাসীরা। আর এই উদ্যোগের জন্য কোনোরকম সরকারি সাহায্যের প্রত্যাশাও করেননি তাঁরা।

গ্রামবাসীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এবং কেন্দ্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটারে জানিয়েছেন, প্রতিটি কুটির কতটা নিখুঁত পরিকল্পনা করে তৈরি। সেখানে প্রত্যেকের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহের ব্যবস্থা তো আছেই। এমনকি কাছেই অন্য কুটিরে জমা করে রাখা হবে আরও জিনিসপত্র। প্রয়োজন পড়লে সেইসব পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করবেন গ্রামবাসীরাই।

বাঁশের কুটির যেমন পরিবেশ বান্ধব, তেমনই অপরদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের অভ্যাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাছাড়া সম্প্রতি বেশ কিছু বিকল্প কাজেও বাঁশের ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করছেন পরিবেশবিদরা। গুয়াহাটি আইআইটির একদল পড়ুয়ার নেতৃত্বে বাঁশের তৈরি হসপিটাল বেড তৈরির কথা আগেই শোনা গিয়েছে। এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বাঁশের ব্যবহার যেমন দ্রুত কোনো কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করছে, তেমনই রোজগারের মুখ দেখছেন স্থানীয় বহু কর্মী। আর বর্তমানে দেশে ফিরে আসা হাজার হাজার শ্রমিকের বাসস্থান তৈরিতে বাঁশ যে একটি বেশ ভালো উপাদান, এমন কথা শোনা যাচ্ছে রাজ্য সরকারের মুখেই।