রাজতন্ত্রের অবসান চাইছেন ইংল্যান্ডের তরুণ প্রজন্ম!

ইউনাইটেড কিংডম মানেই এক রাজকীয় ইতিহাস। বাকিংহাম প্যালেসকে বাদ দিয়ে যার কল্পনা করাও এক কথায় অসম্ভব। অথচ এই রাজপরিবারকে ঘিরেই কত না বিতর্ক। এমনকি প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি একনায়কতন্ত্র চান ইংল্যান্ডের মানুষ? সেই বিতর্ককেই আরও উস্কে দিল ইউ-গভ সংস্থার সমীক্ষা। পরিসংখ্যান হিসাব করে দেখানো হয়েছে, দেশের তরুণ প্রজন্ম আদৌ এই ব্যবস্থায় খুশি নয়। বরং একটা বড়ো অংশের দাবি, দেশের প্রধান হিসাবে কাজ করুন কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।

দুবছর আগে একই সমীক্ষায় অবশ্য বিপরীত ফল পাওয়া গিয়েছিল। দেখা গিয়েছিল ১৮-২৪ বছর বয়সের নাগরিকদের মধ্যে ৪৬ শতাংশই রাজপরিবারের শাসনের পক্ষে ছিলেন। মাত্র ২৬ শতাংশ চেয়েছিলেন ব্যবস্থার বদল হোক। তবে দুবছরের মধ্যে অবস্থার বিরাট পরিবর্তন ঘটে গেল। সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী এই বয়সের নাগরিকদের ৪১ শতাংশই নির্বাচিত সরকারের হাতে সম্পূর্ণ ক্ষমতা থাকার পক্ষপাতী। মাত্র ৩১ শতাংশ মনে করছেন ইতিহাস ধরে রাখার জন্য রাজা বা রানির শাসন থাকা উচিৎ।

সাম্প্রতিক সময়ে কাধিকবার বিতর্কের মুখে পড়েছে ইংল্যান্ডের রাজপরিবার। হ্যারি ও মেগানের সাক্ষাৎকার ঘিরে সারা পৃথিবীর সামনে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কুইন এলিজাবেথের পরিবারকে। এর কিছুদিন পরেই মহারানির স্বামী প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুর পর অবস্থা আরও জটিল হয়ে ওঠে। ইংল্যান্ডের মন্ত্রিসভার সঙ্গে রাজপরিবারের সম্পর্ক একটু হলেও তিক্ত হয়ে উঠেছে। তবে এই পরিস্থিতিতেও রাজপরিবারের জন্য আশঙ্কার কিছু নেই বলেই মনে করছে ইউ-গভ সংস্থার সমীক্ষা। কারণ দেশের বয়স্ক মানুষরা এখনও রাজপরিবারের পক্ষে। সব মিলিয়ে ৬১ শতাংশ মানুষ চান বাকিংহাম প্যালেসের শাসন জারি থাকুক। আর ৫০ বছরের বেশি বয়স্কদের তো প্রায় সকলেই রাজতন্ত্রের পক্ষে সওয়াল করেছেন।

ইংল্যান্ডের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অবশ্য এখনই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ক্ষমতাচ্যুতির কোনো কারণ দেখা যায়নি। কিন্তু হ্যারি-মেগানকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক তরুণ প্রজন্মের মনে যথেষ্ট ছাপ ফেলেছে। প্রায় হাজার বছর আগে যে রাজপরিবার বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে রাজত্ব শুরু করেছিল, তার প্রভাব কতদিন টিঁকে থাকবে, সেটা বলা মুস্কিল। তাই অদূর ভবিষ্যতে না হলেও, ইংল্যান্ডের রাজপরিবারের কাছে এই সমীক্ষা নিঃসন্দেহে আশঙ্কার বিষয়।

আরও পড়ুন
রানির পদতলে রাজপরিবারের মেগান, শার্লে এবদো-র কার্টুনে ফ্লয়েডের ছায়া

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ব্রিটিশ রাজপরিবারের কঠোর নিয়ম, স্বাধীনতা নেই পোশাক নির্বাচনেও!