রানির পদতলে রাজপরিবারের মেগান, শার্লে এবদো-র কার্টুনে ফ্লয়েডের ছায়া

আজ থেকে ৬ বছর আগে মহম্মদের কার্টুন এঁকে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছিল ফরাসি পত্রিকা ‘শার্লে এবদো’। এর মধ্যেই আবারও বিতর্ক ঘনিয়ে উঠেছে এই পত্রিকায় প্রকাশিত একটি কার্টুনকে ঘিরে। সম্প্রতি ঝড় তুলে দেওয়া হ্যারি-মেগান সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করেই এই কার্টুন প্রকাশ করেছে ‘শার্লে এবদো’। আর সেখানে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকারীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ইংল্যান্ডের মহারানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে। তবে এই উপমা কতদূর সমর্থনযোগ্য, তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

শনিবার ‘শার্লে এবদো’ পত্রিকার পাতায় প্রকাশিত কার্টুনে দেখা যায় ডাচ সাসেক্স মেগানের ঘাড়ে হাঁটু মুড়ে বসে আছেন মহারানি। বুঝতে অসুবিধা হয় না, বছরখানেক আগের জর্জ ফ্লয়েড হত্যার সঙ্গেই বিষয়টিকে তুলনা করছেন কার্টুনিস্ট। কার্টুনের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মেগান কেন রাজবাড়ি ছাড়লেন।’ আর সেখানে মেগানের বয়ানে লেখা হয়েছে, “কারণ আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।” যদিও ওপরা উইনফ্রে সাক্ষাৎকারে ইংল্যান্ডের রাজপরিবারকে জাতিবিদ্বেষী বলেই অভিযোগ করেছেন হ্যারি এবং মেগান। এটাই তাঁদের রাজপরিবার ত্যাগ করার কারণ বলেও জানিয়েছেন। কিন্তু নিঃশ্বাস না নিতে পারার বিষয়টি অতি আরোপ বলেই মনে করছেন অনেকে।

বাকিংহাম প্যালেস সূত্রে অবশ্য এখনও এই কার্টুন নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে হ্যারি-মেগানের অভিযোগের সূত্রে রাজপরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পরিবারের মধ্যে জাতিবিদ্বেষকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। তবুও মেগানের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলেই জানিয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তবে মেগান নিজে অবশ্য জানিয়েছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ বা তাঁর স্বামী ফিলিপ কেউই মেগানের সঙ্গে বিদ্বেষপূর্ণ ব্যবহার করেননি। সেখানে মহারানিকে এভাবে অভিযুক্ত করায় ‘শার্লে এবদো’ পত্রিকার উপর ক্ষুব্ধ মানবাধিকার কর্মী হালিমা বেগম।

১৯৭০ সাল থেকে প্রকাশিত ‘শার্লে এবদো’ পত্রিকার মূল আকর্ষণ সবসময়ই তার কার্টুন। তাতে রাজনীতি, ধর্ম, সমাজনীতি সমস্তকিছু নিয়েই ব্যঙ্গ করা হয়েছে। আর সেইসব ব্যঙ্গচিত্র সারা পৃথিবী জুড়ে প্রশংসাও পেয়েছে। এমনকি মহম্মদের কার্টুন আঁকার পর পত্রিকার অফিস মৌলবাদীদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠলেও যুক্তিবাদী মানুষরা সেদিন কার্টুনিস্টের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু মহারানির কার্টুন এঁকে কি শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হবে ‘শার্লে এবদো’? এই প্রশ্নই ঘুরছে নানা মহলে।

আরও পড়ুন
ব্রিটিশ রাজপরিবারের কঠোর নিয়ম, স্বাধীনতা নেই পোশাক নির্বাচনেও!

Powered by Froala Editor

More From Author See More