গ্রামার বইয়ের আড়ালে বাজপাখির রক্তচক্ষু, ধরা পড়লেই পিঠে ভাঙত স্কেল

সেইসব পাড়া-টারা : ১
টিকা - উত্তর মানে উত্তর কলিকাতা কাহারে কয়? ইহার নিজস্ব সংজ্ঞা অথবা সীমানা কী? এই অধম প্রতিবেদকের নিকট তাহার সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি ব্যাখ্যা বা উত্তর রহিয়াছে। সেই মত অনুযায়ী - প্রতিদিন এই শহরের যে সকল পল্লীতে মোটামুটিভাবে বৈকাল চার ঘটিকা হইতে রাত্রি সাড়ে দশ ঘটিকা অবধি কোটি কোটি তেলেভাজার দোকানে পেঁয়াজি, বেগুনি, ফুলুরি,  আলুর চপ, ইত্যাদি নানা প্রকার স্বর্গীয় স্বাদের ভাজাভুজি অবিশ্রাম ভাজা হইয়া চলে এবং রাত্রিকাল কিঞ্চিৎ গভীর হইলে ওইসব পল্লীর কিছু বিভিন্ন বয়েসী মানুষ (অবশ্যই সকলে নহে), ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল-উপদলে বিভক্ত হইয়া রহস্যময়ভাবে আধো অন্ধকার গলি অথবা ভগ্নপ্রায় পরিত্যক্ত বনেদী সব অট্টালিকার মধ্যে সহসাই অদৃশ্য হইয়া যান, অতঃপর নিজ নিজ পকেটের সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলা হইতে হুইস্কি মদিরা, উপরোক্ত দেবভোগ্য সব ভাজাভুজির চাট সহযোগে পান করিয়া থাকেন - এই অধম প্রতিবেদকের বিচারে যে সমস্ত স্থানে এইরূপ অলৌকিক সব ঘটনা ঘটিয়া থাকে সেই সমস্ত স্থানই আসলে উত্তর কলিকাতা।  

অ্যাথেনিয়াম ইশকুলটার সঙ্গে পরিচয় আছে? আরে, ওই যেখানে ফেলুদার লালমোহনবাবু পড়তেন। এই অধম নিজে না হলেও তার অধিকাংশ বন্ধুবান্ধবই কিন্তু গড়পার রোডের ওই ইশকুলটায় পড়ত। যে সময়কার কথা লিখছি তখন বেশিরভাগ বাড়িতেই ছেলেপুলেদের পড়াশুনোর দিকে সত্যি বলতে কি তেমন একটা নজরটজর দেয়া হত না। অনেকের বাড়িতে তো বাবারা খোঁজই রাখতেন না ছেলের এবার কোন ক্লাস হল, নিজের চোখে দেখা এসব। হিন্দু, হেয়ার, স্কটিশের মতো হাতে গোনা গুটিকয়েকের কথা বাদ দিলে বেশিরভাগ ইশকুলের আবহাওয়াই যাকে বলে গিয়ে গ্লাসনস্ত টাইপ অর্থাৎ বেশ খানিকটা ঢিলেঢালা ধরনেরই ছিল। যেমন ক্লাস চলাকালীন লাস্ট অথবা তার আগের বেঞ্চে বসে ইয়া গাম্বাট সাইজের পি কে দে সরকারের গ্রামার বইয়ের আড়ালে লুকিয়ে নিজ নিজ বয়স, শ্রেণী এবং পরিপক্কতা অনুযায়ী নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল, বাজপাখির রক্তচক্ষু, অজানা দ্বীপে ড্রাগন, জার্মানি যুদ্ধে মোহন থেকে শুরু করে জীবন-যৌবন, সবই চলত অবাধে। এছাড়াও জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল বুক-ক্রিকেট। ধরা পড়লে বই বাজেয়াপ্ত সহ গোটায়েক স্কেল পিঠে চূর্ণবিচূর্ণ হলেও এর জন্য কাউকে রাস্টিকেট করা হয়েছে বলে শোনা যায়নি কোনদিন। অ্যানুয়াল পরীক্ষায় এক সাবজেক্টে ফেল করেও পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়া যেত মোটামুটি সম্মানজনকভাবেই। তবে ব্যাপারটা দু-সাবজেক্টে গড়িয়ে গেলে একটু ঝামেলা হত বই কি। তখন গার্জেন কল হত। রুদ্ধশ্বাস এবং রুদ্ধদ্বার শিক্ষক-অভিভাবক মিটিং চলতো মিনিট পনেরো। অবশেষে বেড়িয়ে আসতেন অভিভাবকরা। মুখমণ্ডল শ্রী জ্যোতি বসুর চেয়েও গম্ভীর। হাতে রিপোর্ট কার্ড। এককোণে স্ট্যাম্প মারা - ‘প্রোমোটেড উইথ কনসিডারেশন’। বাড়ি ফিরে কী হত, সেটা জানত একমাত্র সুকুমার রায়ের শ্যামলাল। 

সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে ক্লিক করুন

More From Author See More