নাসার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সদস্য মেরি জ্যাকসনের নামাঙ্কিত হচ্ছে ওয়াশিংটন হেড কোয়ার্টার

সময়টা ১৯৫১ সাল। আমেরিকায় নারীবাদী আন্দোলনের প্রথম পর্যায় ততদিনে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনও ততদিনে অন্য মাত্রা নিয়ে উপস্থিত। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে এবং গবেষণাক্ষেত্রে সাদা চামড়ার পুরুষরাই তখনও একচেটিয়া অধিকার বিস্তার করেছে। ঠিক এই সময়েই নাসায় কাজ নিয়ে এলেন মেরি জ্যাকসন। না, একটু ভুল হল। নাসা তখনও তৈরি হয়নি। সেদিনের ন্যাশানাল অ্যাডভাইসারি কমিটি ফর অ্যারোনটিক্স পরে ১৯৫৮ সালে নাম পাল্টে হয়েছিল ন্যাশানাল অ্যারোনটিক্যাল স্টাডিজ অ্যাসোসিয়েশন। তবে এখানে আমরা শুধু মেরি জ্যাকসনের কথাই বলব। গণিতের গবেষক হিসাবে সংস্থায় প্রবেশ। কিন্তু সেদিনও তাঁর আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রযুক্তিবিদ্যা। তাই সংস্থার বিভিন্ন ট্রেনিং-এ যোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯৫৮ সালে যখন নাসা তৈরি হল, সেদিন যোগ দিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে।

মেরি জ্যাকসন নাসার প্রথম সদস্যদের মধ্যে একমাত্র কালো চামড়ার মহিলা। বিভিন্ন গবেষণার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের খুঁটিনাটি হয়তো আজ আর পুরোপুরি জানা যাবে না। কিন্তু সমাজের বৈষম্য আর বিদ্বেষের মাঝে দাঁড়িয়ে তাঁর এই কৃতিত্বকে আজও কুর্নিশ জানাতে প্রস্তুত নাসা। আর তাই এবার থেকে নাসার ওয়াশিংটন হেড কোয়ার্টারকে এবার থেকে চেনা যাবে মেরি জ্যাকসনের নামেই। নাসা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন।

আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েড হত্যা পরবর্তী প্রতিবাদ আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাসা। যে ঘৃণার মধ্যে দাঁড়িয়ে একদিন মেরি জ্যাকসনের মতো অসংখ্য কালো চামড়ার মানুষকে লড়াই করতে হত, সেই ঘৃণাই আজ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর কারণ। প্রশাসনিক নীতি নির্ধারণ করেও এই সমাজের বদল হবে কি? সমাজকে বদলাতে গেলে প্রয়োজন মানসিকতার প্রয়োজন। আর সমাজের সামনে এমন কিছু উদাহরণ হাজির করতে পারলেই মানুষ মানুষকে মানুষ বলে সম্মান করতে পারবে। সেদিন জাতিগত, শ্রেণীগত আর লিঙ্গের বিভাজন আমাদের আলাদা করে রাখতে পারবে না। এমনটাই মনে করছেন নাসা কর্তৃপক্ষ।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভালোবাসার কাছে সবই তুচ্ছ, বর্ণবৈষম্য সরিয়ে ঘর বেঁধেছেন এই বাঙালিরাও