দেউলিয়া হয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়ল ভারতীয় সংস্থা

লক্ষ্য ছিল দেশের বিদ্যুৎ চাহিদাপূরণ। আর সেই প্রেক্ষিতেই ২০১০ সালে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গঠনে। দায়িত্ব পেয়েছিল ভারতীয় সংস্থা ভেল। তবে সংস্থার গাফিলতিতেই আরও পিছল উৎপাদন শুরুর সময়সীমা। ২০২২ সালের আগে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো আশাই দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। আর তার মধ্যেই দেউলিয়া হয়ে বাংলাদেশ ছাড়ল ঠিকাদারি সংস্থার অন্তর্গত আরেকটি সংস্থা।

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানির তৈরি এই উৎপাদন কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ করছিল ভেল। সঞ্চালন প্রকল্পকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিয়েছিল ভেল। এর মধ্যে ছিল ১৩ কিলোমিটার নদী অতিক্রমসহ ৪৬৪ কিলোমিটারের ৪০০ কিলোভোল্ট সঞ্চালন লাইন, ৭ কিলোমিটার নদী অতিক্রমসহ ২০৫ কিলোমিটারের ২৩০ কিলোভোল্ট সঞ্চালন লাইন, ৪০০ কিলোভোল্টের পাঁচটি বে এক্সটেনশন, ২৩০ কিলোভোল্টের চারটি বে এক্সটেনশন এবং ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত পরিকাঠামো নির্মাণ। 

এর মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে হরিনটানা সাবস্টেশন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া ছিল ভারতীয় সংস্থা ইএমসি-কে। চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৫ সালে। কথা ছিল ২০১৭ সালের মধ্যেই শেষ হবে কাজ। তারপরে দু’দফায় সময়সীমা বেড়ে দাঁড়ায় ২০১৮। তারও বছর দুয়েক পেরিয়ে এসেও সম্পূর্ণ হল না নির্মাণ। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রশাসন ও বিদ্যুৎ বিভাগকে না জানিয়েই ঢাকা ও খুলনার দপ্তর বন্ধ করে দেয় ওই সংস্থাটি। বাকি রয়েছে শ্রমিকদের বেতনও। তবে সেসব না মিটিয়েই বিদেশে পাড়ি দেয় ইএমসি’র কর্তারা। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় দেউলিয়া হয়ে গেছে সংস্থা।

অন্যদিকে মন্থর গতিতে এগোচ্ছে ভেলের সামগ্রিক কাজও। ২০২০-র মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে এই বছরের শুরুতেই ৫ মাসের মতো পিছিয়ে ছিল ভেলের কর্মসূচি। তবে মার্চে লকডাউনের জেরে নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায় পুরোপুরি। ফলে অতিবাহিত হয় আরও ৬ মাস। এখনও গতি আসেনি নির্মাণে। মন্থর গতিতেই কাজ করছে ভেল। আরও ন্যূনতম ১১ মাস সময় লাগবেই। তবে বাড়তে পারে সেই সময়সীমাও। কাজেই আশার আলো দেখছে না ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি। হিসেব বলছে ২০২২ সাল হয়ে যাবে সমগ্র প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে...

Powered by Froala Editor