অভিযুক্ত ধর্ষকদের বেছে-বেছে খুন করতেন বাংলাদেশের সিরিয়াল কিলার ‘হারকিউলিস’

রাস্তার ধারে পড়ে আছে একটি মৃতদেহ। মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তাকে। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, মৃতদেহের গলার সুতো দিয়ে বাঁধা একটি চিরকুট। আর তাতে লেখা, “আমি পিরজপুর ভাণ্ডারিয়ার মাদ্রাসা ছাত্রীর ধর্ষক রাকিব। ধর্ষকের পরিণতি এটাই। ধর্ষকরা সাবধান।” নিচে নাম লেখা, ‘হারকিউলিস’। 

কী ভাবছেন? কোনো পাল্প ফিকশনের পাতা থেকে তুলে আনা কোনো কাহিনি এটা? না একদমই তা নয়। এই গল্পের মতো ঘটনাই ঘটেছে বছর দেড়েক আগে। বাংলাদেশে ঝালাকাঠি জেলায় সত্যিই খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এমন একটি দেহ। একটা নয়, দুসপ্তাহের মধ্যে তিনটি এমন মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছিল পুলিশ। আর প্রতি ক্ষেত্রেই মৃতব্যক্তি ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত।

২০১৯ সালে ১৪ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকা শহরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের একজন রাকিব। সে ঢাকার একটি আইন-কলেজের ছাত্র ছিল। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পুলিশ আর তার সন্ধান পায়নি। অন্যজনের নাম সজল। কিন্তু ২২ জানুয়ারি হঠাৎ আর সজলের কোনো হদিশ পাওয়া যায় না। ২৪ জানুয়ারি সকালে সজলের মৃতদেহ পাওয়া যায় রাস্তার ধারে। একইভাবে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তাকে। আর গলায় হারকিউলিসের লেখা সেই চিরকুট।

এর কিছুদিন আগেই ১৭ জানুয়ারি ঢাকার রাস্তায় আরও একটি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। তাকেও খুন করা হয়েছে একইভাবে মাথায় গুলি করে। সেবারেও গলায় সেই একই চিরকুট। রিপন নামের সেই যুবকের মৃতদেহ থেকে প্রথম জানা গেল হারকিউলিসের নাম। ঠিক ১০ দিন আগে ১৮ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণ করে রিপন। ১০ দিনের মধ্যেই তার শাস্তির ব্যবস্থা করল এক অজানা সিরিয়াল কিলার।

এখনও অবধি অবশ্য হারকিউলিসের পরিচয় কেউ জানেন না। জানেন না ঠিক কী কারণে এই ৩ ব্যক্তিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এর পরেও অবশ্য ধর্ষণের ঘটনা বন্ধ হয়নি। বাংলাদেশ শুধু নয়, পৃথিবীর সমস্ত দেশেই এই সামাজিক ব্যাধি যেন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। উত্তরপ্রদেশের হাথরাস ধর্ষণকাণ্ডের পর আবারও উঠে আসছে এই একই অপরাধের কথা। ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি কী, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজছেন সবাই। সমাজকে পরিষ্কার করার কাজটা সহজ নয়। অবশ্য আইনের বাইরে গিয়ে এভাবে ধর্ষকদের শাস্তিবিধান মেনে নেননি অনেকেই। কিন্তু পরপর একাধিক ঘটনায় বছর দেড়েক আগের সেই সিরিয়াল কিলার আবার উঠে আসছেন আলোচনায়। কী তাঁর প্রকৃত পরিচয়?

তথ্যসূত্রঃ দ্য ডেইলি স্টার, দ্য স্টেটসম্যান, ডন

Powered by Froala Editor