মেক্সিকোর প্রত্নক্ষেত্রে অবৈধ নির্মাণ, সরব জাতিপুঞ্জ

মেক্সিকোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নক্ষেত্র তিওথিয়াকান। অন্তত ২৫টি ঐতিহাসিক সৌধ নিয়ে গড়ে ওঠা এই শহর। তবে এর মধ্যেই সেখানে শুরু হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু অবৈধ নির্মাণ। পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন জাতিপুঞ্জের কর্তারাও। ইন্টারন্যাশানাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটসের পক্ষ থেকে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়েছে অবৈধ নির্মাণকারীদের। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে সমস্ত অবৈধ নির্মাণ। পাশাপাশি ইতিহাস রক্ষার বিষয়ে মেক্সিকো সরকারকে আরও দায়িত্ববান হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আনুমানিক ১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মায়া সভ্যতার অধিবাসীদের হাতে তৈরি হয়েছিল এই তিওথিয়াকান শহর। আজকের মেক্সিকো শহর থেকে তার দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার। অসংখ্য ভগ্নপ্রায় স্থাপত্যের পাশাপাশি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির। তার মধ্যে চন্দ্র ও সূর্যের দ্বৈত মন্দিরের কথা তো সারা পৃথিবী বিখ্যাত। প্রতি বছর এই শহরে ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ পর্যটন। ১৯৮৭ সালে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে ইন্টারন্যাশানাল হেরিটেজের সম্মানও পায় তিওথিয়াকান। তবে স্থানীয় মানুষরা এখনও হয়তো এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব সঠিকভাবে বুঝতে পারছেন না। মেক্সিকো সরকারের কথায়, তাঁরা একটি প্রত্নক্ষেত্রকে ভ্রমণোদ্যান বানিয়ে তুলতে চাইছেন। যা আসলে ইতিহাস ধ্বংসের নামান্তর।

মেক্সিকো সরকারের পক্ষ থেকেও ইতিমধ্যে অবৈধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মার্চ মাস থেকেই এই ধরণের নির্মাণ শুরু হয়ে গিয়েছে। এপ্রিলের গোড়াতেই অপরাধীদের চিহ্নিত করে মামলাও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে গেলে স্থানীয় মানুষরা লাঠি, লোহার পাইপ এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। ফলে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনকে থেমে যেতে হয়েছে। তবে এই বিষয়ে জাতিপুঞ্জ হস্তক্ষেপ করলে প্রশাসন সর্বোতভাবে সাহায্য করবে বলেই জানিয়েছে মেক্সিকো সরকার। শেষ পর্যন্ত এই প্রাচীন ইতিহাসের কতটুকু রক্ষা করা যায়, সেটাই এখন দেখার।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
টিকাকরণ কেন্দ্রেই নাচ-গান-রেস্টলিং, মন ভালো রাখতে উদ্যোগ মেক্সিকোয়

Latest News See More