রূপান্তরকামীদের জন্য পৃথক পাবলিক টয়লেট দিল্লিতে

রাস্তার ধারে পাবলিক টয়লেট, সামনে দাঁড়ালেই দুদিকে তির চিহ্ন দেখিয়ে দেয় একদিক পুরুষদের জন্য, অন্যদিক মহিলাদের। কিন্তু যাঁরা এই দুই লিঙ্গের মধ্যে পড়েন না, তাঁরা কোথায় যাবেন? আদালতের রায়ে রূপান্তরকামীরা তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয় পেয়েছেন বেশ কয়েক বছর হল। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ পাবলিক টয়লেটের অধিকার থেকে বঞ্চিত তাঁরা। এবার রাজধানী দিল্লি শহরের বুকে সেই বৈষম্য দূর করার প্রতিশ্রুতি দিল পৌরসভা। আগামী বছরের বাজেটে তার জন্য নির্দিষ্ট অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে।

দিল্লির শাস্ত্রী ভবনের সামনে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রূপান্তরকামীদের জন্য প্রথম পাবলিক টয়লেট তৈরির কাজ। আর আগামী এক বছরের মধ্যে শহরের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অনুরূপ টয়লেট তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পৌরসভার বক্তব্য, রূপান্তরকামীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অবশ্য রূপান্তরকামী গোষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে থেকেই উঠে আসছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের কর্মী এবং পশ্চিমবঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডের চেয়ারপার্সন রঞ্জিতা সিনহার বক্তব্য, “সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার রূপান্তরকামী মানুষদের মৌলিক প্রয়োজনের বিষয়গুলি থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আজও তাঁরা উপযুক্ত শিক্ষা, স্বাস্থ্যের অধিকার পান না। বাড়িতে এবং বাড়ির বাইরে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ্যে আনতেই ভয় পান। রূপান্তরকামীদের জন্য পৃথক টয়লেটের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু তার চেয়েও প্রাথমিক বিষয় শিক্ষা, স্বাস্থ্যের অধিকার।”

রূপান্তরকামীদের জন্য পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা অবশ্য দিল্লিতেই প্রথম নয়। ২০১৮ সালেই প্রথমে মাইসোর এবং পরে ভূপাল শহরে তৈরি হয়েছিল পৃথক টয়লেট। এরপর দেশের নানা শহরেই এমন উদ্যোগ দেখা গিয়েছে। লিঙ্গসাম্য প্রতিষ্ঠায় এই উদ্যোগ সত্যিই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু অন্যান্য প্রাথমিক চাহিদার বিষয়গুলিকেও অস্বীকার করা যায় না। সবার আগে প্রয়োজন মানুষের মতো বাঁচার অধিকার। আর সেই অধিকার অর্জনের জন্য এখনও সত্যিই অনেকটা লড়াই বাকি।

Powered by Froala Editor

Latest News See More