বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে একজোট এশিয়-আমেরিকান শিল্পীরা, চলছে সচেতনতামূলক প্রচার

মহামারীর শুরু থেকেই এশিয় আমেরিকানদের ওপর ক্রমশ বাড়ছিল বর্ণবাদী আক্রমণ। তারই মধ্যে করোনাকে ‘চাইনিজ ভাইরাস’ হিসাবে অভিহিত করেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরও যেন ছড়িয়ে পড়ে বৈষম্যের আগুন, জাতিবিদ্বেষ। গত এক বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি এশিয় নিপীড়নের সাক্ষী মার্কিন প্রদেশ। এবার এই জাতিবিদ্বেষ এবং শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন আমেরিকায় বসবাসরত এশিয় শিল্পীরা। শিল্পকে হাতিয়ার করেই এবার জনসচেতনতা গড়তে মাঠে নামলেন তাঁরা।

শুরুটা হয়েছিল এশিয়-আমেরিকান শিল্পী কেনেথ ট্যামের হাত ধরেই। এশিয়দের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া একাধিক হিংসাত্মক ঘটনার একটি গুগল স্প্রেডশিট তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন তিনি। ‘উই আর নট কোভিড’ নামাঙ্কিত সেই স্প্রেডশিটকে হাতিয়ার করেই শুরু হয়েছিল লড়াই। প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া।

তবে এই লড়াইয়ে একা নন ট্যাম। এগিয়ে এসেছেন খ্যাতনামা এশিয় শিল্পী আনিকা ই, ক্রিশ্চিন কিম, জেমি চ্যান, হাউয়ি চ্যান-সহ একাধিক তারকা। আগামী মে মাস থেকেই আমেরিকার ‘মিউজিয়াম অফ চাইনিজ’ গ্যালারিতে শুরু হওয়ার কথা একটি বিশেষ প্রদর্শনীর। মূলত এশিয় শিল্পী-সংগঠন ‘গডজিলা’-র বিভিন্ন চিত্র নিয়েই আয়োজিত হত এই প্রদর্শনী। তবে বিদ্বেষের প্রতিবাদ হিসাবে প্রদর্শনী থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘গডজিলা’।

তাছাড়াও একাধিক শিল্পী সংগঠন মিলে তৈরি হয়েছে বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী সংগঠন ‘স্টপ ডিসক্রিমিং এশিয়া’ (এসডিএ)। নিয়ম করেই তাঁরা আয়োজন করছেন ওয়েবিনারের। সৃজনশীল পোস্টার, মিম, গান এবং ভিডিয়োর মাধ্যমে চলছে সচেতনতামূলক প্রচার। সেখানে যেমন শিল্প রয়েছে, তেমনই বার বার উঠে আসছে ইতিহাসের প্রসঙ্গও। বহু আগে থেকেই মার্কিন সভ্যতায় মিশেছে এশিয় সংস্কৃতি। পরিযায়ী এশিয়দের ওপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে বড়ো বড়ো নির্মাণ। সেইসব তথ্যই তুলে আনছেন তাঁরা। এশিয়রা যে মার্কিন সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেই শিক্ষাই দিচ্ছে শিল্পীদের এই উদ্যোগ।

আরও পড়ুন
সংবাদ সংস্থা রাষ্ট্রের পাহারাদার নয়, তীব্র প্রতিক্রিয়া মার্কিন জনগণের

তবে আমেরিকা-জুড়ে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা এবং এশিয়-বিদ্বেষের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই, তা আগেই জানিয়েছে এসডিএ। দুটি ক্ষেত্রেই মূল সমস্যা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ। ফলত, সমানভাবেই তাঁরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন মিনেসোটার কৃষ্ণাঙ্গ-বিদ্বেষের বিরুদ্ধেও। বর্ণবাদের পাশাপাশি লিঙ্গ ও শ্রেণি বৈষম্য, অভিবাসনের প্রসঙ্গও উঠে আসছে প্রতিবাদের ভাষায়। 

আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের ‘মুক্ত খাদ্য অরণ্য’, বিনামূল্যেই পেতে পারেন ফলমূল-সবজি

তবে এতকিছুর পর কি হাল ফিরবে আমেরিকায়? থেকে যাচ্ছে সেই প্রশ্নই। তবে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ আশাবাদী কেনেথ ট্যাম। একমাত্র শিক্ষা এবং কুসংস্কার থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্ত করতে পারলেই, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা যাবে বলে বিশ্বাস তাঁর। সেই লক্ষ্যেই চলছে যুদ্ধ। মহামারীর রেশ কাটলে মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জনগণের জন্য বিভিন্ন প্রদর্শনীও আয়োজন করা হবে জানাচ্ছেন, প্রখ্যাত শিল্পী…

আরও পড়ুন
নির্জন প্রান্তরে আবিষ্কৃত মনোলিথ, যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা প্রদেশে লুকিয়ে কোন রহস্য?

Powered by Froala Editor

More From Author See More

Latest News See More