অপরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ ডেকে আনছে বিপদ, কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে সরব পরিবেশকর্মীরা

গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আমফান তছনছ করে দিয়ে গিয়েছিল বাংলার একাধিক অংশকে। কলকাতাও বাদ যায়নি তার রোষ থেকে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গেই রাজ্যজুড়ে উপড়ে পড়েছিল বহু বহু গাছ। যার সংখ্যা শুধু কলকাতাতেই অন্তত ১৫ হাজার। সেই ঘাটতি পূরণ করতেই বনসৃজনের দায়িত্ব নাগরিকদের ওপরে তুলে দিয়েছিল কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন। কিন্তু এই বৃক্ষরোপণে সত্যিই কি লাভ হচ্ছে কিছু নাকি বাড়ছে বিপত্তির সম্ভাবনা? এবার এমন প্রশ্নই তুললেন পরিবেশকর্মী এবং বিশেষজ্ঞরা।

আমফানে ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতির পিছনে তাঁরা দায়ী করছেন অপরিকল্পিত বৃক্ষরোপণকেই। এবং একইভাবে আমফান পরবর্তী সময়ে কলকাতা সেই পথেই হাঁটতে চলেছে বলে তাঁদের দাবি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগপত্রও তাঁরা জমা দিয়েছেন পুরদপ্তরে। সক্রিয় পরিবেশকর্মী অর্জুন বসু রায় জানান, বৃক্ষরোপণের জন্য জায়গা এবং জায়গার জন্য বৃক্ষরোপণ এই দুটি জিনিসকে মাথায় রাখার প্রয়োজন। তবে প্রকল্প গ্রহণের সময় বিশেষজ্ঞের মতামত না নেওয়াই উপেক্ষিত এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই।

বৃক্ষরোপণই সবুজায়নের শেষ কথা নয়। গাছের পরিচর্যাগ্রহণের মতই খেয়াল রাখা দরকার তার বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে কিনা। চাইলেই ছোটো জায়গায় বট, মেহগিনির মত গাছ রোপণ করা যায় না। জায়গার অভাবে যেহেতু তাদের শিকড় মাটি আঁকড়ে থাকতে পারে না, তাই ঝড়ে উপড়ে পড়ার সম্ভাবনা সেক্ষেত্রে অনেক বেশি থাকে। তিনি জানান, রডন স্ট্রিটে ড্রেনের মধ্যেই চারা লাগানো হয়েছে। 

২০১৪ সালে আর্বান গ্রিনিং গাইডলাইনে উল্লেখিত রয়েছে, একটি গাছের জন্য কমপক্ষে ১.২ মিটারের জায়গা তার আগে-পরে রাখা দরকার। মানা হচ্ছে না সেই নিয়মও। পর পর লাইন দিয়ে গাছ রোপণে একপ্রকার বিঘ্নিতই হচ্ছে ভারসাম্য। চিঠির উত্তরে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান, পর্যবেক্ষণে খামতি থেকে গেছে। তা পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে। তবে কলকাতার মতো শহরে ৪ ফুট দূরত্বের নিয়ম মানা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি...

আরও পড়ুন
গাছকাটার এক বছর পরেও হয়নি বৃক্ষরোপণ, গোয়ার বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ঘিরে বিতর্ক

Powered by Froala Editor