বিতর্কে পিছু হটল উয়েফা, হাঙ্গেরি-জার্মানি ম্যাচে রামধনুর ছোঁয়া লোগোয়

ইউরো কাপের গ্রুপ পর্বের খেলা। হাঙ্গেরির প্রতিপক্ষ জার্মানি। আর আগে থেকেই গ্রুপ পর্বের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছিল জার্মানির মিউনিখ শহর। খেলা হওয়ার কথা ছিল বায়ার্ন মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনা স্টেডিয়ামে। আর এই ম্যাচের ঠিক একদিন আগেই ঐতিহাসিক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মিউনিখের মেয়র ডেটার রেইটার। পরিকল্পনা ছিল প্রাইড মান্থে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশেষ সম্মান জানিয়ে গোটা স্টেডিয়াম সাত রঙা আলোয় সাজানোর। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিল জার্মানির অধিকাংশ ফুটবল ক্লাবই। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। মিউনিখ-মেয়রের প্রস্তাবনাকে খারিজ করে দিল উয়েফা। আর উয়েফার এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই আগুন জ্বলে উঠেছিল সমর্থক মহলে। তার জেরে শেষ অবধি সাফাই গাইল ইউরোপের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা।

উয়েফার বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেই প্রতিফলিত হয়েছে মতাদর্শ, স্বাধীনতা, সাম্যের বার্তা। বর্ণবাদ কিংবা সহিংসতার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময়ে কথা বলতে দেখা গেছে উয়েফাকে। কিন্তু সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে হঠাৎ কেন এমন বিরূপ অবস্থান উয়েফার? হাঙ্গেরির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে তাকালেই সেই উত্তর মিলবে। সম্প্রতি সমকামীদের কণ্ঠরোধ করতে কঠোরতম ব্যবস্থা নিয়েছে হাঙ্গেরির সরকার। সমকামিতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবেই লাগু হয়েছে বিশেষ আইন। ফলত, স্টেডিয়ামে রামধনু রঙের আলোকসজ্জা যে হাঙ্গেরি প্রশাসনকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে, সেই আশঙ্কাতেই যেন মতাদর্শ থেকে খানিকটা সরে এল উয়েফা। 

তবে এই প্রথম নয়। ইউরোর শুরু থেকেই রামধনু আর্মব্যান্ড পরেই মাঠে নেমেছিলেন জার্মান অধিনায়ক তথা গোলরক্ষক ম্যানুয়াল নয়্যার। প্রথম ম্যাচে তা নজরে না এলেও, পর্তুগাল-জার্মানির খেলায় তা চোখে পড়ে উয়েফা কর্তৃপক্ষের। নয়্যারকে কড়া ভাষাতেই চিঠি দিয়েছিল উয়েফা। জানিয়েছিল, নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও। তবে শেষ পর্যন্ত জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি শান্ত করেছিল ফুটবল সংস্থাটিকে।

নয়্যারের বিষয়টি আলোড়ন না ফেললেও, মিউনিখের আবেদন খারিজ করার এই ঘটনা রীতিমতো আগুন ছড়িয়ে দেয় সমর্থকমহলে। উয়েফার পক্ষপাতিত্ব সমালোচিত হয় বিশ্বজুড়েই। আর তারপরই বিশেষ বিবৃতি জারি করে সাফাই গায় ইউরোপীয় সংস্থাটি। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানায় উয়েফা। পাশাপাশি সমর্থকদের মন রাখতে নিজেদের লোগোও সাজিয়ে তোলে রামধনু রঙে। কিন্তু এত কিছুর পরও স্টেডিয়াম সাজানোর প্রস্তাব খারিজ করার সিদ্ধান্তকে ভুল বলে স্বীকার করতে নারাজ উয়েফা। তবে নিজের মতো করেই এলজিবিটি সম্প্রদায়কে সমর্থন জানিয়েছে জার্মান শহর। ম্যাচের ঠিক আগের দিনই মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনা সেজে উঠেছিল রামধনুতে…

আরও পড়ুন
জাতীয় উদ্যান সংরক্ষণের দায়িত্বে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের তরুণরা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
উয়েফার বিরুদ্ধে ‘অনৈতিক’ চাপ দেওয়ার অভিযোগ রিয়াল-বার্সা-জুভেন্তাসের