স্কুল পড়ুয়ারাই শিক্ষক-শিক্ষিকা, ফোনে-ফোনেই পড়াশোনা চলছে লাদাখের গ্রামে

লাদাখের উত্তরে ছোট্ট একটি গ্রাম তুরতুক। ভারতের সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত গ্রাম এই তুরতুক। দুর্গম পাহাড়ি উপত্যকায় ইন্টারনেট কানেকশন তো দূরের কথা, মোবাইলের নেটওয়ার্কও পাওয়া যায় না ভালোভাবে। এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে যায় প্রায়ই। এমন একটা গ্রামে একটা ছোট্ট প্রাইমারি স্কুল চলত কোনোক্রমে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এসে সমস্তকিছুই কেমন ওলোট-পালট করে দিল। অনলাইন ক্লাস তো এখানে বাতুলতা।

না, তবুও থেমে যায়নি তুরতুক গ্রামের কচিকাঁচাদের পড়াশোনা। তাদের লেখাপড়ার স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে দেশের নানা প্রান্তের কিশোর-কিশোরীরা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এভাবেই গড়ে উঠেছে একটি নেটওয়ার্ক। দিল্লি, মুম্বই, লক্ষ্ণৌ, হায়াদ্রাবাদ জুড়ে গড়ে ওঠা ‘টিচ ফর লাদাখ’ নেটওয়ার্ক। পড়াশোনা চলছে ফোন কলের মাধ্যমেই। সেখানে পড়ুয়ারা সবাই ৪ থেকে ৬ বছরের। আর শিক্ষক-শিক্ষিকারা কেউ সদ্য বোর্ড পরীক্ষা পাশ করেছে, কেউ বা এখনও স্কুল স্টুডেন্ট। এই বয়সেই নিজেদের শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসাবে ভাবতে তাদেরও বেশ ভালোই লাগছে।

কয়েক বছর আগে তুরতুক প্রি-প্রাইমারি স্কুল গড়ে তুলেছিলেন সারা শাহ। কাশ্মীরের নানা অঞ্চল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে পড়াতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হলে ক্লাসরুমের শিক্ষা বন্ধ করে দিতে হল। কিছুদিন খোলা মাঠে দূরত্ব বজায় রেখে পড়াশোনা চলেছিল। কিন্তু কচিকাঁচারা কি আর দূরত্ব বজায় রাখতে পারে? তাই সেই ব্যবস্থা বন্ধ করতে হল। তার বদলে বিকল্প ব্যবস্থা ভাবছিলেন সারা শাহ।

তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের নানা প্রান্তে কিশোর-কিশোরীরা যেভাবে এগিয়ে এসেছে, সেটা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এভাবে হাতে হাত রেখেই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। শিক্ষার প্রকৃত সাফল্য সেখানেই...

আরও পড়ুন
অনলাইনে ক্লাস করবে বোন, কারাগারে উপার্জিত অর্থ দিয়েই স্মার্টফোন উপহার দাদার

Powered by Froala Editor

Latest News See More