মালা হতে খসে পড়া – প্রথম পর্ব

মাত্রই দিন কতক আগে কোনো একটা ওয়েবসাইটের একটি ছোট্ট খবরে চোখ আটকে গেল। তুহিনকান্তি ঘোষ আর নেই, বয়স হয়েছিল তিয়াত্তর।

আমার সঙ্গে তুহিনবাবুর ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না। জ্যোতির্ময় দত্তের পরিবারের কাছে ওঁর অনেক গল্প শুনেছি। তার মধ্যে একটি মজার গল্প এখনও মনে আছে। দত্ত পরিবারে অতিথি হয়ে যেই আসুন, সুরাপানের আমন্ত্রণ তিনি পাবেনই। তুহিনবাবু তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করতেন না, সবিনয়ে শুধু বলতেন, ‘সপ্তাহের এই দিনটিতে আমি না পানীয় স্পর্শ করি না।’ শেষ পর্যন্ত দেখা গেল সোম থেকে রবি, সপ্তাহের সাত দিনই তুহিনবাবু একই কারণ দর্শাচ্ছেন।

আজকের বঙ্গসমাজে তুহিনকান্তি ঘোষের নাম সুপরিচিত নয়, হওয়ার কথাও নয়। সাংবাদিকদের মধ্যে আমার মতো যাঁরা সরকারি শিলমোহর পাওয়া বয়স্ক নাগরিক তাঁরা অবশ্যই ভদ্রলোকের নাম জানবেন, কেউ কেউ হয়তো তাঁকে ঘনিষ্ঠভাবে চিনেও থাকবেন। তুষারকান্তি ঘোষের পৌত্র তিনি, তরুণকান্তি ঘোষের পুত্র। এই ঘোষ পরিবারই ছিল যুগান্তর-অমৃতবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর মালিক-কর্ণধার। কলকাতা থেকে এনএইচ থার্টি ফোর দিয়ে বারাসতে গেলে রাস্তার ডানদিকে একটি বাড়ির ধুলোমাখা নেমপ্লেট আপনাদের চোখে পড়ে থাকতে পারে।

‘শিশির-কুঞ্জ’।

আরও পড়ুন
একটি স্বপ্নের জন্ম ও মৃত্যু – দ্বিতীয় পর্ব

পত্রিকা গোষ্ঠীর প্রবাদপ্রতিম স্থপতি শিশির কুমার ঘোষের স্মৃতিতে এর নাম-করণ। আশির দশকেও এই শিশিরকুঞ্জ ছিল ভিআইপি ঠিকানা, দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকত। অনেককাল হল ছায়া-সুনিবিড়, পাখির কলকাকলিতে মুখর সেই কুঞ্জও প্রোমোটারের হাতে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। নামটি বদল হয়নি তার মাহাত্ম্যের কারণে।

আরও পড়ুন
একটি স্বপ্নের জন্ম ও মৃত্যু – প্রথম পর্ব

আমার চার দশকের সাংবাদিক জীবনে কলকাতার খবরের কাগজের মানচিত্র অনেকটাই বদলে যেতে দেখেছি। যুগান্তর মৃত, ইংরেজি স্টেটসম্যান যেন ছবির জলসাঘরের সব-হারানো জমিদার। সংসারে সব শূন্যস্থানই একদিন ভরাট হয়ে যায়, এক যুগান্তরের জায়গায় কলকাতায় এখন আরও তিনটি বাংলা খবরের কাগজ – আজকাল, বর্তমান, প্রতিদিন। তবু ইতিহাস তো ইতিহাসই থাকে। তেমনি আবার সব শূন্যই কি পূরণ হয়? হতে পারে? হওয়া সম্ভব?

আরও পড়ুন
ভাঙায় গড়া মানুষ

আশির দশকের শুরু থেকেই যুগান্তরে অস্তরাগের মলিন আলো পড়তে শুরু করেছে আর আনন্দবাজার তরতর করে এগোতে এগোতে একমেবাদ্বিতীয়ম হয়ে উঠেছে। পরে জানতে পেরেছি, তার অনেক আগে সম্ভবত পঞ্চাশের দশকে একসময় দুই কাগজের টক্কর হয়েছিল প্রায় সমানে সমানে। শ্রী নিরপেক্ষ ছদ্মনামের আড়ালে থাকা এক যশস্বী সাংবাদিক অমিতাভ চৌধুরী যুগান্তরের দায়িত্ব নিয়ে এই আপাত-অসম্ভব কাজটি সম্ভব করেছিলেন। সে সময় তাঁর লেখাই ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং তদন্তমূলক। এর জন্য তিনি ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেয়েছিলেন বাঙালি সাংবাদিকদের মধ্যে প্রথম। ভারতীয়দের মধ্যেও প্রথম সম্ভবত। 

পরে আজকালের সম্পাদক থাকাকালীন একই পুরস্কার পেয়েছিলেন গৌরকিশোর ঘোষ। সেই খবর পেয়ে আমরা জোর উল্লাস করছি দেখে হামদি আমাকে কাছে টেনে রাগে গজগজ করতে করতে বলেছিলেন, ‘হোয়াট ইজ দেয়ার টু রিজয়েস? ডু ইউ নো দিস ম্যান এক্সটারমিনেটেড থাউজেন্ডস অব কমিউনিস্টস ইন কোল্ড ব্লাড?’

গণ্ডমূর্খের মতো আমি প্রশ্ন করে বসি, ‘তুমি কার কথা বলছ?’

এবার হামদি ফিক করে হেসে ফেলে ‘ওই যে যার নামে এই পুরস্কার, কোনও কিছু না জেনে যার জন্য তোমরা ছাগলের বাচ্চার মতো লাফালাফি করছ।’

পরে জেনেছি এই ভদ্রলোক সি আই এ-র পোস্টার বয় ছিলেন, কমিউনিস্টদের জুজু দেখিয়ে আমেরিকার কাছ থেকে অনেক কিছু আদায় করতে পারতেন। ফিলিপিন্সের কমিউনিস্ট বিদ্রোহ তিনি দমন করেছিলেন মার্কিন ফৌজের সক্রিয় সহযোগিতায়। কিন্তু সেদিন হামদির সামনে বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আমার আর কিছু করার ছিল না। জানিই না তো, তর্ক করব কোন সাহসে?

গোটা অফিসে একমাত্র আমাকেই কথাটা বিশ্বাস করে বলে হামদি অনুরোধ করেছিলেন, ‘দিস মাস্ট নট রিচ ঘৌর’স ইয়ার্স।’ বন্ধু-বাৎসল্য ছিল এতটাই গভীর। 

যুগান্তরের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরে শ্রী নিরপেক্ষ দেশান্তরী হয়েছিলেন, পূর্ব এশিয়ার নানা দেশে, নানা ধরণের কাগজে কাজ করেছেন, কলকাতার সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন করেননি। ওঁর মুখেই শুনেছি, আজকালের পরিকল্পনায় তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল নেপথ্যে। মালিক অভীক ঘোষ আর গৌরকিশোর ঘোষের মধ্যে সেতু-বন্ধনের কাজটি তিনিই করেছিলেন। লস এঞ্জেলেসে অভীক ঘোষ থাকতেন, শ্রী নিরপেক্ষেরও একটি ডেরা ছিল সেখানে। বিশ্ব-নাগরিক হয়ে দেশে দেশে ঘুরে অন্য কোনো বাঙালি সাংবাদিক কাজ করেছেন বলে আমার জানা নেই।

তারপর হঠাৎ একদিন আনন্দবাজার অফিসে সম্পাদকের ঘরে আলাপ হল শ্রী নিরপেক্ষ-র সঙ্গে। ছোটোখাটো সম্ভ্রান্ত চেহারা, ধুতি-পাঞ্জাবিতে পুরোদস্তুর বাঙালি সাজে, রসিক আড্ডাবাজ। তখনই শুনলাম তিনি এবার সাগরময় ঘোষের শূন্যস্থানে ‘দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব নিচ্ছেন। যৌবনে যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বৈরথে নেমেছিলেন, শেষ ইনিংসটা খেলতে তিনি সেখানেই এলেন।

আজকের মতো কঙ্কালসার অবস্থা না হলেও ‘দেশ’ পত্রিকা তখনই প্রচারে ও জনপ্রিয়তায় নিম্নগামী। সম্পাদনার শেষ কয়েকটি বছরে সাগরময় ঘোষের কার্যত কোনো স্বাধীনতাই ছিল না, ওপরের হুকুম তামিল করা ছাড়া। সাগরদা আমায় পুত্র-সম স্নেহ করতেন, গল্প-গুজব করার সময় তাঁকে আমি বারবার দীর্ঘশ্বাস ফেলতে দেখেছি। সাহিত্য পত্রিকার চরিত্র হারিয়ে দেশ ক্রমেই একটা হ-য-ব-র-ল গোছের কাগজের পিণ্ডে পরিণত হচ্ছিল। দিল্লি থাকাকালীন এমন সব বিষয় নিয়ে সাগরদা আমাকে লেখার আদেশ দিতেন যা একটি নিউজ ম্যাগাজিনের পক্ষে উপযুক্ত, সাহিত্য পত্রিকার ক্ষেত্রে কদাচ নয়। বুঝতে পারতাম, সাগর’দা আর সম্পাদক নেই, রাবার স্ট্যাম্পে পর্যবসিত হয়েছেন। পরে কলকাতায় ফিরে এসে কাছ থেকে দেখলাম তাঁর দুর্দশার মর্মন্তুদ কাহিনি, আজকালের অভিজ্ঞতার কথা বারেবারে মনে পড়তে লাগল। গৌরকিশোর ঘোষ যা পেরেছিলেন সাগরময় ঘোষ তা পারেননি। মতের অমিল হওয়ায় মালিককে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে পত্রপাঠ বিদায় নিয়েছিলেন আজকালের সম্পাদক। দেশ পত্রিকার প্রবাদপ্রতিম সম্পাদক সুখী জীবনের মায়া কাটিয়ে উঠতে পারেননি অনেক দিন পর্যন্ত। 

এ কথা বলার অর্থ সাগরময়কে অসম্মান করা নয়, আমি তা করছিও না। চার দশকের অভিজ্ঞতায় আমি এমন আরও অসংখ্য মানুষকে দেখেছি যাঁরা অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান, কর্মহীনতা দাঁতে দাঁত চেপে নীরবে সহ্য করে গিয়েছেন, দাসত্বের নগদপ্রাপ্তিটুকুর মায়া কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারেননি। কর্মজীবনের মাঝপথে অথবা অন্তিম পর্বে ইচ্ছে থাকলেও অনেক সময় অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দেওয়া যায় না, একূল-ওকূল দু’কূলই ভেসে যাওয়ার আতঙ্ক যেন গলায় ফাঁস হয়ে আটকে থাকে। গৌরকিশোর ঘোষ তাই নিয়ম নন, ব্যতিক্রম।

শ্রীনিরপেক্ষ অতএব বিনা অক্সিজেনে এভারেস্ট চূড়োয় পা দেওয়ার চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে সরকার বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন অভীকবাবুর প্রণোদনায়। কিন্তু তিনি কি বাকিদের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছিলেন? পেলেও কতটুকু? সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সেখানে উপস্থিত, ‘দেশ’ পত্রিকার সঙ্গে তাঁর আ-যৌবন নিবিড় সম্পর্ক, সাগরময়ের স্বাভাবিক উত্তরসূরি তো তাঁরই হওয়ার কথা। অথচ তিনি মুখ বুজে দেখলেন, তাঁর মাথার ওপর উড়ে এসে জুড়ে বসলেন এমন একজন যিনি জীবনে কদাচ সাহিত্য-চর্চা করেননি। প্রকাশ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করার মানুষ সুনীল ছিলেন না, এ কাজ ছিল তাঁর স্বভাব, সম্ভ্রম আর রুচি বিরোধী। কর্তার ইচ্ছায় কর্ম হবে, যে কোনো ব্যক্তি-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের দাসপ্রথায় এটাই দস্তুর।এই ভবিতব্যকে অগ্রাহ্য করার একমাত্র রাস্তা হল নীরবে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রস্থান। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ও একাধিকবার ইস্তফা দিতে মনস্থ করেছিলেন, কর্তাদের ভুজুং-ভাজুং শুনে সবশেষে চার পা পিছিয়ে এসেছিলেন। 

তার মানে ‘সিনড্রোম’টা একই। যেতে পারি কিন্তু যেতে পারছি না। দাসপ্রথা এই একটি জায়গায় এসে মিলিয়ে দেয় সকলকে, রাশভারি সম্পাদক, জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক, ক্ষুরধার কবি, অভিজাত চিত্র-পরিচালক, দুঁদে সাংবাদিক, অফিস বেয়ারা, সব্বাইকে। বাইরের যশ, খ্যাতি, লোকপ্রিয়তা, যতোই চোখ-ধাঁধানো হোক না কেন, অফিসের অন্দরে, মনিবের খাতায় আমরা সব্বাই চাকর। 

শ্রীনিরপেক্ষর সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা তৈরি হতে আমার বেশি সময় লাগল না। কয়েকদিন আলাপের পরেই বুঝলাম ভদ্রলোক গড়পড়তা বাঙালি বুড়ো নন, উদার, আধুনিক, সময়ের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে পারা শিক্ষিত, সজ্জন, স্নেহশীল মানুষ। আলাপের পরে জানলাম, ডি সি পি এল-এর কর্ণধার বিশিষ্ট বাঙালি শিল্পপতি সাধন দত্ত ওঁর মামা। একদিন যোধপুর পার্কে ওঁর ফ্ল্যাটে দাওয়াতও পেলাম। আমাকে কয়েকটি সহজ ব্যায়াম শিখিয়ে দিলেন। কথা বলে বুঝলাম ভদ্রলোক হেলথ-ফ্রিক, রোজ নিয়ম করে সাঁতার কাটেন, জিমে যান। বয়সের কাছে নতি-স্বীকার করবেন না, এই ছিল তাঁর পণ।

১৯৯৯-এর একেবারে গোড়ার দিকে আমরা দু’জনে মিলে একটা কাণ্ড করে বসলাম। তার কিছুদিন আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়েছেন, বাংলার রাজনীতিতে মোড় ঘোরানো নাটকীয় মুহূর্ত, একেবারে ড্রেসিং রুমে বসে আমি তার সাক্ষী। কথায় কথায় একদিন বললাম, এই রোমহর্ষক নাটক নিয়ে দেশ পত্রিকায় লিখতে দেবেন? শ্রীনিরপেক্ষ কেবল রাজি হলেন না, রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে আমাকে নির্দেশ দিলেন, ‘তিন কিস্তিতে লেখ, আমি প্রচ্ছদ নিবন্ধ করে ছাপব।’ সেটাই হল, লোকজন বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করল সেই মহাপ্রস্থানের বিচিত্র কাহিনি। পরে এই লেখাগুলির সঙ্গে আমার আনন্দবাজারে লেখা ভোটের রোজনামচাগুলি জুড়ে দিয়ে একটি বই প্রকাশিত হল আনন্দ পাবলিশার্স থেকে। ‘চুপচাপ ফুলে ছাপ।’ শ্রীনিরপেক্ষ সেই বইয়ে আমার সাংবাদিকতা নিয়ে একটি দীর্ঘ মুখবন্ধ লিখেছিলেন। আমার লেখার এমন দরাজ প্রশংসা তার আগে বা পরে আর কেউ করেননি। লেখাটি প্রথমবার পড়ার সময় আমার মতো বেহদ্দেরও কানের লতি-দুটো লাজে রাঙা হয়ে উঠেছিল। বিনয়ী হিসেবে বাজারে আমার সুনাম নেই, তবু অকপটে বলছি অমন প্রশংসার আমি যোগ্য নই।

বাগবাজারে যুগান্তর বাড়ির অন্দরমহলের অনেক কথা আমি শ্রীনিরপেক্ষর কাছ থেকেই জানতে পারি। শুনতে শুনতে আমার অনেক সময় বিভ্রম হত, এটা কি খবরের কাগজ না চিড়িয়াখানা? যুগান্তর সম্পর্কে এমনিতে আমার কোনও কৌতূহল ছিল না, ওদের অফিসেও কোনোদিন পা রাখার অবকাশ হয়নি। দিল্লিতে থাকার সময় লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন তরুণকান্তি ঘোষের সঙ্গে আমার মাঝেমাঝে দেখা হত, কুশল-বিনিময়ের ওপারে আলোচনা এগোয়নি। লম্বা চেহারা, খাদির পাজামা-পাঞ্জাবি, কাঁধ পর্যন্ত ঝুলতে থাকা অবিন্যস্ত নানা রঙের চুল, গলায় মোটা কন্ঠির মালা। ১৯৮৪-র লোকসভা ভোটে ইন্দিরা গান্ধির জন্য সহানুভূতির হাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের ১৬জন প্রার্থী জিতেছিলেন কতকটা অপ্রত্যাশিতভাবে, তরুণবাবু তাঁদেরই একজন। বেশ কিছুকাল পরে কলকাতা বিমানবন্দরে প্লেনে ওঠার আগে এরোব্রিজে হঠাৎ তাঁর হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যায়।

যুগান্তর-অমৃতবাজার গোষ্ঠীর ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ আছে, আমি খুব ভাল জানিও না। তবে কৌতূহলী মনে বারেবারে এ প্রশ্ন উঁকি দিয়েছে, প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট যা পারল বাগবাজারে তা সম্ভব হল না কেন? যুগান্তর-অমৃতবাজার গোষ্ঠীর সর্বভারতীয় পরিচিতি ছিল, তাদের অতীত ঐতিহ্যও খুবই গৌরবজনক। অনেক নামজাদা সাংবাদিক সেখানেও কাজ করেছেন, মানবসম্পদের গুণগত মান, অন্তত আশির দশক পর্যন্ত সরকার বাড়ির চেয়ে খুব একটা খাটো ছিল না। তাহলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একজন যেখানে সাফল্যের এক শিখর থেকে আর এক শিখরে অনায়াসে পৌঁছতে পারল সেখানে আর একজন মাঠের বাইরে ছিটকে গেল কেন? 

Powered by Froala Editor