স্বয়ং চৈতন্যদেবও মুগ্ধ হয়েছিলেন যে স্বাদে

সঘৃত পায়স নব মৃৎকুণ্ডিকা ভরি।
তিন পাত্রে ঘনাবর্ত্ত দুগ্ধ দিলা ধরি।।

অদ্বৈত আচার্যের বাড়িতে এসেছেন চৈতন্যদেব। তাঁর সামনে নানা ব্যঞ্জন সাজিয়ে দিয়েছেন আচার্য পত্নী। সব পদের সঙ্গে আছে পায়েসও। ‘চৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থে কৃষ্ণদাস কবিরাজ চৈতন্যদেবের এহেন ভোজনদৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। শুধু ‘চৈতন্যচরিতামৃত’-ই নয়, মধ্যযুগের অসংখ্য কাব্যেই ছড়িয়ে আছে পায়েসের কথা। পায়েস ছাড়া বাঙালির বিশেষ উদযাপন বৃথা, এমনকি দেবতাকেও ভোগে পায়েস ভোগ অর্পণ না করলেই নয়। এখনো অনেক ভক্ত বৈষ্ণব বিশ্বাস করেন, ‘মহাপ্রভু’-র বড়ো প্রিয় ছিল পায়েস। না থাকার কারণও নেই অবশ্য। পায়েসের স্বাদই যে এমন।

আজ প্রথমা। পুজো আর মাত্র পাঁচদিন। পুজোয় ভোগ হবে। সেই ভোগে অবধারিত থাকবে পায়েস। আজ তাই পায়েসের পদই থাকল। আমাদের কার বাড়িতে না পায়েস হয়? কিন্তু ভোগের পায়েস কিঞ্চিৎ আলাদা। বাংলার আবহমান স্বাদের ইতিহাস বোনা এই স্বাদে। তারই হদিশ থাকল আজ।

কী কী লাগবে?

দুধ- ১ লিটার (ফুল ফ্যাট)
কাজু ও কিসমিস- ১৪টা করে
ঘি- ২ চামচ
গোবিন্দভোগ চাল- ৪ টেবিল চামচ
গুড়ের বাতাসা- ১৫টা
তেজপাতা-২টো
এলাচ- ৪টে
আমুল স্প্রে গুঁড়ো দুধ- ৪ চামচ
মিশ্রি/চিনি মিষ্টির পরিমাণ বুঝে
নুন- এক চিমটে

কীভাবে রাঁধবেন?

১। প্রথমে চাল দু’বার জলে ধুয়ে ঘি মাখিয়ে কড়াইতে হালকা করে সাঁতলে তুলে নিন ।
২। আবার সামান্য ঘি দিয়ে কাজুও কিসমিসগুলো ভেজে তুলে নিন।
৩। এবার ওই কড়াইতেই দুধটা জ্বালে বসিয়ে দিন।
৪। এলাচ ও তেজপাতাগুলো দিয়ে দিন।
৫। দুধ সামান্য গরম হলে এক হাতা দুধ তুলে নিন আলাদা পাত্রে। তাতে বাতাসা এবং মিশ্রিগুলো মিশিয়ে দিন। (দুধ বাতাসায় কাটছে কিনা খেয়াল রাখবেন)
৬। কড়াইয়ের দুধ অনবরত নাড়তে থাকুন। দুধ ভালোমতে ফুটে উঠলে তেজপাতা ও এলাচগুলো তুলে নিন এবং গুঁড়ো দুধটা মিশিয়ে দিয়ে ফের ভালো করে নাড়তে থাকুন।
৭। এবার চালটা দিয়ে দিন এবং সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। মাঝে মাঝে খুন্তি দিয়ে নেড়ে নিন।
৮। চাল সিদ্ধ হয়ে এলে বাতাস দেওয়া দুধটা দিয়ে দিন এবং নাড়তে থাকুন।
৯। ভেজে রাখা কাজু কিসমিস গুলো দিয়ে দিন। (পরিবেশনের জন্য সামান্য রেখে)
১০। নুন দিন, ফের পায়েসটা ভালো করে নেড়ে নিন গ্যাস বন্ধ করুন।

ব্যাস, ভোগের পায়েস তৈরি। এবারে উপর থেকে কাজু ও কিসমিস ছড়িয়ে দিন।