পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক, ফের বর্ণবিদ্বেষে রক্তাক্ত জর্জ ফ্লয়েডের শহর

বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন বছর কুড়ির কৃষ্ণাঙ্গ যুবক ডন্টে রাইট। সন্ধে নামছে তখন শহর জুড়ে। এমন সময় পুলিশ দাঁড় করাল তাঁর গাড়ি। অভিযোগ, ট্রাফিক আইন অমান্য করেছেন তিনি। হ্যাঁ, ব্যাকভিউ মিরর থেকে এয়ার ফ্রেশনার ঝুলিয়ে রেখেছিলেন ডন্টে। আর সেই কারণেই টেনে হিঁচড়ে তাঁকে নামানো হয় গাড়ি থেকে। তবে পুলিশকে এড়িয়েই পুনরায় গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে পড়েন ডন্টে। মুহূর্তে ঝলসে ওঠে রিভলভার। নিথর হয়ে যায় ডন্টে রাইটের দেহটি। আহত হন পাশে থাকা বান্ধবীও।

ঠিক যেন জর্জ ফ্লয়েড হত্যার স্মৃতি। রবিবার আরও একবার পুনরাবৃত্তি হল সেই নৃশংস বর্ণ-বিদ্বেষের। অকুস্থল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা প্রদেশের মিনিয়েপোলিস। হ্যাঁ, খোদ জর্জ ফ্লয়েডেরই সেই শহর। এখনও এক বছরও পেরোয়নি জর্জ ফ্লয়েড হত্যার। শুকায়নি মৃত্যুর দাগ। তার আগেই ফের উত্তাল হয়ে উঠল মিনিয়াপোলিস। 

রবিবার রাত থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে মিনিয়াপোলিসের জনতা। পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবাদ অবস্থান চলে ব্রুকলিন থানা ঘেরাও করে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে পুলিশকর্তারা। জারি করা হয় কার্ফিউ। তবে দমানো যায়নি সাধারণের কণ্ঠস্বর। চলছে লাগাতার প্রতিবাদ। চক দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় লেখা হচ্ছে ‘জাস্টিস ফর ডন্টে রাইটস’।

তবে সন্তানের মৃত্যুর কথা এখনও যেন বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না, ডন্টের মা কেটি। পুলিশ গাড়ি আটকানোর পর মাকেই প্রথম ফোন করেছিলেন ডন্টে। কেটির বিবৃতি অনুযায়ী, ফোনে কথা বলার সময় ফোন রাখার জন্য বার বার হুমকি দেন পুলিশ আধিকারিকেরা। তারপর কেটেও যায় লাইনটি। মিনিট খানেক মধ্যে পুনরায় ফোন করেন কেটি। ততক্ষণে শেষ হয়ে গেছে সবকিছু। 

আরও পড়ুন
নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন

বিগত দু’সপ্তাহ ধরে বিচার প্রক্রিয়া চলছে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকারী অফিসার ডেরেক সভিনের। তবে জরিমানা ছাড়া, এখনও কোনো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি তাঁর বিরুদ্ধে। তবে বিক্ষোভকারীরা আদালতের রায়ের বিরোধিতা করায় পুনরায় খোলা হয়েছে সেই মামলা। আরও মাসখানেক এই মামলা চলতে পারে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, এত মামলা, বিক্ষোভ, প্রতিরোধের পরেও কিছু বিন্দুমাত্র কিছু শিখতে পারছে মার্কিন সমাজব্যবস্থা? বর্ণবাদের শিকড় যেন ছড়িয়ে গেছে মার্কিন সমাজের শিরায় শিরায়। তা কী উপায়ে নির্মূল করা সম্ভব, জানা নেই কারোরই…

আরও পড়ুন
হার্দিকের হাত ধরে আইপিএলের মঞ্চে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’

Powered by Froala Editor