‘বাঙালদের’ চিংড়ির পদ ঘটিদের থেকে কম যায় না

ঘটি মানে চিংড়ি আর বাঙাল মানে ইলিশ! কী সহজ সমীকরণেই না নিজেদের খাদ্যাভ্যাসেরও বিভাজন সেরে ফেলেছি আমরা। দেশভাগের থইথই যন্ত্রণার মধ্যে হয়ত এমনই সব অদ্ভুতুড়ে বিভাজনের গল্প জন্ম নেয়। পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার মধ্যে খাদ্যাভ্যাসের পার্থক্য এমনিতে ভালোমতোই রয়েছে। সে তো থাকবেই। পুব বাংলায় কত্ত নদী-খাল-বিল-পুকুর-জলাভূমি। সেখানে শাক, কুচো মাছের বৈচিত্রও বেশি। ঢাকা, বরিশাল, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া--- সমস্ত জায়গার নিজস্ব পদ আছে, খাদ্যসম্পদ আছে। এবার বাংলাতেও আছে খাবারের অঢেল বৈচিত্র। সে-সবটা মিলিয়েই বাংলার খাদ্যসম্ভার। বৈচিত্র্য নিয়েই আমরা এক। কিন্তু এর মধ্যে জোর করে চিংড়ি-ইলিশের পার্থক্য গোঁজা কেন বাপু! এপারের মানুষ ইলিশ চেটেপুটে খায় যেমন, ওপারের বাঙালিও চিংড়ি বলতে অজ্ঞান।

এই যেমন আজই বলব কুষ্টিয়ার বিখ্যাত চিংড়ির পদের কথা। চিংড়ির সঙ্গে যে করলাও জুটি বেঁধে খেলতে পারে, তা আমাদের শিখিয়েছে ওপার বাংলার কুষ্টিয়াই। অথচ, চিংড়ি নাকি ঘটিদের খাবার! যাহোক, পদের দিকেই মন দেওয়া যাক এবার।

কী কী লাগবে?

করলা- ২টো (সরু ও লম্বা ফালি করে কাটা)
চিংড়ি- ২৫০ গ্রাম
পেঁয়াজকুচি- ১ কাপ
কাঁচালঙ্কা চেড়া- ৪টে
আলু- ১টা (সরু করে কাটা)
লঙ্কা-গুঁড়ো- ১ চা-চামচ
হলুদ-গুঁড়ো- ১ চা-চামচ
ধনে-গুঁড়ো- ১ চা-চামচ
তেল, নুন, জল পরিমাণ মতো

কীভাবে রাঁধবেন?

১। প্রথমে চিংড়ি মাছগুলো নুন, হলুদ মাখিয়ে রেখে দিন।
২। কড়াইতে তেল দিন, তেল গরম হলে চিংড়িগুলো হালকা সাঁতলে তুলে নিন।
৩। ওই কড়াইতেই ফের তেল দিন। গরম হলে পেঁয়াজকুচি দিন।
৪। পেঁয়াজ হালকা বাদামি হয়ে এলে চিংড়িগুলো দিয়ে দিন। সমস্ত গুঁড়ো মশলাগুলো দিয়ে কষান।
৫। মশলা কষে এলে করলা ও আলুগুলো দিয়ে দিন ও মিনিট দুই কষান।
৬। খানিকটা জল দিন এবং ঢাকা দিয়ে দিন।
৭। মিনিট দশ-পনেরো পর জল শুকিয়ে এলে সবটা আর একবার নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন।

ছবি: তর্পিণী ভুঁইঞা