শুক্রগ্রহেই রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব? সাম্প্রতিক আবিষ্কারে চাঞ্চল্য বিজ্ঞানী মহলে

সৌরজগতের দ্বিতীয় গ্রহ এবং পৃথিবীর যমজ শুক্রে যে আদৌ প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে, তা কোনোদিন ভেবেই দেখেননি বিজ্ঞানীরা। তবে সাম্প্রতিক আবিষ্কারেই চমকে উঠলেন তাঁরা। শুক্রের বায়ুমণ্ডলে জৈব গ্যাসের অস্তিত্ব ইঙ্গিত দিল এমন সম্ভাবনার।

তবে এই আবিষ্কার অনেকটা আকস্মিকভাবেই হল। সম্প্রতি কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেন গ্রিভেস শুক্রগ্রহে ফসফিনের উপস্থিতি রয়েছে কিনা নিছক পরীক্ষা করে দেখতে যান। তবে তাতে ইতিবাচক ফলাফলের আশা ছিল না তাঁর। তা সত্ত্বেও ফসফিনের অস্তিত্ব অবাক বনে যান তিনি। গবেষণায় কোনোরকম ভুল হচ্ছে কিনা, তা পরীক্ষা করতে এরপর জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল টেলিস্কোপ এবং আলমা টেলিস্কোপ ব্যবহৃত করেন তিনি। তাতেও একই ফলাফল আসে। আর এই ফলাফলকে কেন্দ্র করেই রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বিজ্ঞানীমহলে।

মাছ বা জৈব কোনো পদার্থের বিয়োজনের সময় দুর্গন্ধযুক্ত এই ফসফিন গ্যাস নির্গত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন অণুজীবই এই বিয়োজনের জন্য দায়ী। আবার অনেকক্ষেত্রে অক্সিজেন ছাড়া শ্বসনপ্রক্রিয়া চালানো ব্যাকটেরিয়ারাও নির্গত করে এই গ্যাস। ফলে শুক্রগ্রহে ফসফিনের অস্তিত্ব যে প্রাণের সম্ভাবনাকেই উসকে দিচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শুক্রের বায়ুমণ্ডলীয় মেঘের ১০০ কোটি ভাগের মধ্যে রয়েছে ২০ ভাগ ফসফিন। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল তীব্র আম্লিক হওয়ার পরও এত পরিমাণ ফসফিনের অস্তিত্বে অবাক তাঁরা। যদি আগে থেকেই ফসফিন মজুত থাকত শুক্রের বায়ুমণ্ডলে তবে অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ার কারণে তার অস্তিত্ব পাওয়া সম্ভব হত না। এতএব ফসফিনের কোনো স্থায়ী উৎস রয়েছে শুক্রগ্রহে এ বিষয়ে নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। তবে কোনো প্রাণের জন্যই হচ্ছে নাকি কোনো অজানা প্রাকৃতিক বিক্রিয়া থেকেই উৎপন্ন হচ্ছে এই গ্যাস, সে ব্যাপারে এখনও অনিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। 

আরও পড়ুন
পৃথিবীর উষ্ণতম অঞ্চলে এতদিন ‘লুকিয়ে’ ছিল এই জলচর প্রাণী!

শুক্রের পাথুরে মাটিতে যে প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে না, তা একেবারেই নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। তবে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৫ মাইল উচ্চতায় বহুগুণ উষ্ণতায় কোনো তরল কণার মধ্যে অণুজীব বসবাস করতে পারে কিনা তাই ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদের। যদি অস্তিত্ব থেকেও থাকে, তবে তাদের ডিএনএ-এর গঠনই বা কেমন হবে সেই বিষয়েও শুরু হয়েছে পরবর্তীস্তরের তথ্য অন্বেষণ। বিষয়টি বিষদে পরীক্ষা করার জন্য শুক্রগ্রহে যান পাঠানোর কথাও ভাবছেন তাঁরা। সবমিলিয়ে এই চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার বৈজ্ঞানিক মহলের পরিচলনকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
নদী নয়, হিমবাহের প্রবাহেই তৈরি হয়েছে মঙ্গলের উপত্যকা, জানাল নতুন গবেষণা