আহমেদাবাদে অভুক্তদের মুখে খাবার তুলে দিতে ‘মঞ্জুবা কি রসোই’

তাঁর বাড়িতে এসে খালি মুখে ফিরতেন না কেউ-ই। পথে-ঘাটে ভিক্ষুকরা সাহায্য চাইলেও, সদাহাস্যমুখে খাবার তুলে দিতেন তাঁদের হাতে। আহমেদাবাদের মঞ্জুলাবেন ছিলেন এমনই। স্বপ্ন দেখতেন, একদিন এই পৃথিবী থেকে মুছে যাবে অনাহারের সমস্যা। তাঁর প্রয়াণের পর সেই স্বপ্নকেই যেন বাঁচিয়ে রেখেছেন তাঁর পুত্র এবং পুত্রবধূ। প্রতিদিন আহমেদাবাদের তিন শতাধিক মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে তাঁদের উদ্যোগ। 

আহমেদাবাদের রাস্তায়, বিশেষত বস্তি অঞ্চলগুলিতে গেলেই দেখা মিলবে কালো রঙের ফুড ট্রাকের (Food Truck)। ট্রাকের উপরে সাঁটা ব্যানারে বড়ো বড়ো করে লেখা ‘মঞ্জুবা কি রসোই’ (Manjuba Ki Rasoi)। প্রতিদিন দুপুর এবং সন্ধেবেলায় এই ফুড ট্রাক হাজির হয় আহমেদাবাদের বস্তিগুলিতে। ঘণ্টা দুয়েকের হল্ট। শ’খানেক শিশু এবং দরিদ্র মানুষদের হাতে পেট ভরা খাবার তুলে দিয়ে তারপর অন্য বস্তির দিকে পাড়ি। এটাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘মঞ্জুবা কি রসোই’-এর। 

বছর দেড়েক আগের কথা। তখন সদ্য লকডাউন ঘোষিত হয়েছে ভারতজুড়ে। সেইসময়ই লড়াই শুরু হয়েছিল মঞ্জুবাবেনের ছেলে ময়ূর এবং তাঁর স্ত্রী প্রণালি কামদারের। প্রয়াত মঞ্জুবার স্মৃতিতেই এই ফুড ট্রাক চালু করেছিলেন তাঁরা। সেসময় শুধু পথশিশু বা দরিদ্রদেরই নয়, পরিযায়ী শ্রমিক এমনকি করোনায় বিপর্যস্ত পরিবারদেরও খাবারের যোগান দিয়েছেন ময়ূর এবং তাঁর স্ত্রী। প্রতিদিন ক্ষুধা মিটিয়েছেন সহস্রাধিক মানুষের। 

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর খানিকটা শিথিল হয় লকডাউনের বিধিনিষেধ। সেইসময় সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই ফুড ট্রাক। তবে হাল ছাড়েননি কামদার-দম্পতি। বছর খানেক পর, ২০২১ সালের শেষের দিকে আবার ‘মঞ্জুবা কি রসোই’ নিয়ে আহমেদাবাদের রাস্তায় ফেরেন ময়ূর-প্রণালি। বর্তমানে আহমেদাবাদের বস্তি অঞ্চলের মসিহা হয়ে উঠেছেন তাঁরাই। এক কথায় এই উদ্যোগ কুর্নিশ জানানোর মতোই…

আরও পড়ুন
দুঃস্থ ফুটপাথবাসীদের মুখে খাবার যোগাচ্ছে রাঁচির রুটি ব্যাঙ্ক

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
উচ্ছিষ্ট হাড়ের স্তূপে খাবার খুঁজছেন মানুষ, মর্মান্তিক দৃশ্য ব্রাজিলে