করোনা আক্রান্তদের খুঁজতে ডিটেকটিভের শরণাপন্ন দক্ষিণ কোরিয়া

সারা দেশে তোলপাড়। গোয়েন্দারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন করোনাকে। একবার ধরা পড়লেই আর রক্ষে নেই। 'হাজতবাস' নিশ্চিত। কিন্তু কোথায় পাওয়া যাবে তাকে? খোঁজ খোঁজ। আড়ালের শত্রুকে ধরতে সে কী তৎপরতা সকলের। কে লুকিয়ে রেখেছে করোনা? এমনই চোর-পুলিশ খেলা চলছে আস্ত দেশজুড়ে।

সারা বিশ্বের কাছেই এই মুহূর্তে সবথেকে বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ। চিকিৎসার পাশাপাশিই আক্রান্তদের চিহ্নিত করে আলাদা করাই সবথেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ এখনও যে কোনো দেশের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে। অদৃশ্য এই অণুজীব আক্রমণ করেছে কাকে, তা বুঝে ওঠাই দায়। যখন পরীক্ষায় পজিটিভ আসছে তাঁদের রিপোর্ট তার আগেই তাঁদের থেকে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। এই অবস্থাকে প্রতিহত করতেই অভিনব পন্থা নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।

'করোনা ডিটেকটিভ'। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখতে এমনই একটি বিশেষ সরকারি দল গঠন করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। যাঁদের মূল কাজই হল আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বার করা। এই দলকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করার। অর্থাৎ সাধারণ কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজই করছেন তাঁরা। কিন্তু সেই কাজ হচ্ছে অনেকটাই ফোকাসড ভাবে। 

যে সকল অঞ্চলগুলিতে করোনার প্রকোপ ছড়াচ্ছে দ্রুত। সেই জায়গা থেকেই শুরু হচ্ছে তাঁদের তদন্ত। তবে তাঁদের কাজ যে একেবারেই সহজ নয়, তা বলাই বাহুল্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজেদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হচ্ছেন না আক্রান্তরা। অনেক সময় অজান্তেই তাঁদের সংস্পর্শে আসছেন অনেকে। এই সমস্যা কাটাতেই প্রথমে আক্রান্তদের ফোনের জিপিএস ট্র্যাক করেই গতিপথ চিহ্নিত করা হচ্ছে তাঁদের। তারপর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁর সঙ্গে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ট্রেস করছেন এই বিশেষ ‘ডিটেকটিভ’-রা। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আস্থা এবং সহযোগিতা অর্জন করাও তাঁদের কাছে একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন
মে মাসেই ৬৪ লক্ষ করোনা আক্রান্ত দেশে : আইসিএমআর

দিনে শুধুমাত্র লাঞ্চ ব্রেক এবং ঘণ্টা ছয়েকের ঘুম ছাড়া সারাদিনই অক্লান্তভাবে ভাইরাসের সন্ধান করে চলেছেন ‘করোনা ডিটেকটিভ’-রা। ঝুঁকিও নিতে হচ্ছে এই কাজের জন্য। তদন্তের স্বার্থে পিপিই-কিট না পরেই ট্রেসিং করছেন তাঁরা। তাতে সুফল মিলছে অনেকটাই। তবে এসবের পরেও কিছু মানুষ ‘উপদ্রব’ হিসাবেই চিহ্নিত করছেন তাঁদের উপস্থিতি এবং কর্মকাণ্ডকে।

আরও পড়ুন
দুর্গাপুজো হোক ডিসেম্বরে, করোনা-পরিস্থিতিতে প্রস্তাব নেট নাগরিকদের একাংশের

এই পরিস্থিতির মধ্যেও সম্প্রতি একটি র্যা লির আয়োজন হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। উপস্থিত ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সেই ঘটনা সংক্রমণকে যে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে, সেই বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ডিটেকটিভরা। জানাচ্ছেন, এরপর হয়তো র্যা পিড কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং-এও পৃথক করা যাবে না আক্রান্তদের। ডিটেকটিভরা আশাহত, বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করেও সচেতন করা যাচ্ছে না সাধারণ মানুষকে। তবুও এই অসম লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের সৌজন্যেই দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে চলছে ভাইরাসের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলা...

আরও পড়ুন
আড়াই মিনিটেই শনাক্ত করা যাবে করোনা, চমক বাঙালি বিজ্ঞানীদের

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
করোনার কোপে খড়গপুর আইআইটি, এক সপ্তাহ লকডাউন ক্যাম্পাসে