সাঁতরাগাছি ঝিল। বাংলার পরিযায়ী পাখিদের অন্যতম আস্তানা। নানা জায়গা থেকে পাখিরা উড়ে আসে এখানে। কিন্তু এখনও কি সেই একই পরিবেশ আছে? উত্তরে ‘না’-ই বলবেন প্রায় সবাই। ঝিলের আশেপাশের পরিবেশ ক্রমশ খারাপ হয়ে আসছিল। ফলে কমে যাচ্ছিল পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যাও। এবার সেইদিকেই নজর দিল হাওড়া পুরসভা। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শীত আসার আগেই সাঁতরাগাছি ঝিল পরিষ্কার কাজে নেমেছেন তাঁরা। যার ফলে আবারও আশার মুখ দেখছেন সবাই।
প্রায় প্রতিবছরই পুজোর পর থেকে খবরের শিরোনামে থাকে সাঁতরাগাছি ঝিল। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া তো বটেই, হিমালয়ের অন্যান্য অঞ্চল থেকেও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এখানে এসে ভিড় করে ওই সময়। ভিড় জমে প্রকৃতিপ্রেমী, পক্ষীবিদ এবং ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারদেরও। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই তাঁদের অভিযোগ, ঝিলে পাখির সংখ্যা কমে আসছে উল্লেখযোগ্যভাবে। আর তার জন্য দায়ী করা হচ্ছিল দূষণকে। এলাকার বাসিন্দারা ক্রমাগত এখানে আবর্জনা ফেলছিল। সেই সঙ্গে সরকারি তরফেও ঝিলটির স্বাস্থ্যরক্ষার দিকে কোনোরকম নজর দেওয়া হয়নি। যার ফলে আবর্জনা, দুর্গন্ধ আর কচুরিপানায় অনেকটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল সাঁতরাগাছি ঝিল। যার ফলে পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যাও কমে আসছিল।
২০১৬ সালে এই বিষয়টি নিয়েই মামলা শুরু হয়। তারপরই এই ঝিলের পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই বছর শীত আসার আগেই ঝিল পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় অনেকটাই হয়ে গেছে পরিষ্কারের কাজ। কিছুটা এখনও বাকি। তবে শুধু পরিষ্কার করলেই হবে না; সাঁতরাগাছি ঝিল নিয়ে যাতে সচেতনতা বেড়ে ওঠে স্থানীয়দের মধ্যে সেই চেষ্টাও করতে হবে। আর যাতে ময়লা না পড়ে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। সেইসঙ্গে পরিযায়ী পাখিরা এলে তারা যেন শান্তির পরিবেশ পায় সেটাও দেখতে হবে। দায়িত্ব অনেক; কিন্তু সেটা পালন করলে আমাদের সবারই লাভ। সেই আশাই দেখছেন প্রকৃতিবিদরা।
Powered by Froala Editor