পিয়ানোয় ব্রিটিশ শিল্পী, শ্রোতা থাইল্যান্ডের হাতি – অরণ্যে রূপকথার জন্ম দিলেন পল বার্টন

কোনো থিয়েটার বা অর্কেস্ট্রায় নয়, পিয়ানো নিয়ে শিল্পী বসেছেন ঠিক প্রকৃতির কোলে। চারপাশে ঘন জঙ্গল। কোনো গাছ থেকে পাখি ডেকে উঠছে। আর তার মধ্যেই সুর তুলেছেন শিল্পী। সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি হাতি। পিয়ানোর সুর যেন তার অন্তরকেও ছুঁয়ে গিয়েছে। চোখের কোনে একটু একটু জল জমা হয়েছে। ব্রিটিশ শিল্পী পল বার্টনকে সম্প্রতি এভাবেই দেখা গেল থাইল্যান্ডের বুকে। থিয়েটার, অর্কেস্ট্রার জীবন ছেড়ে এবার থাইল্যান্ডেই স্থায়ীভাবে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি।

পল বার্টনের হঠাৎ স্বেচ্ছাবসর নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল রীতিমতো জল্পনা। সঙ্গীতের জগত থেকেই কি বিদায় নিলেন তিনি। কিন্তু না, কিছুদিনের মধ্যেই নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের দৌলতে আবার দেখা গেল তাঁকে। শোনা গেল তাঁর সুরের জাদু। কিন্তু এবারের পরিবেশ একেবারে আলাদা। ভিডিওর সঙ্গে ছোট্ট একটি সংলাপে পল জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর পরিকল্পনার কথা। সঙ্গীত তো আসলে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ওষুধের মতো কাজ করে। এবার সেই চিকিৎসাই মনুষ্যেতর প্রাণীদের কাছে পৌঁছে দিতে চান তিনি। বর্তমানে বিপর্যস্ত প্রকৃতির মাঝে তারাও যে ভালো নেই।

থাইল্যান্ডের ওয়াং-ডং অভয়ারণ্যে প্রথম দেখা গেল পল বার্টনকে। আর তার কিছুদিনের মধ্যেই দেখা গেল লোপবুরি শহরের একটি হিন্দু মন্দিরে। সেখানে তাঁকে ঝাঁকে ঝাঁকে ঘিরে ধরেছে ম্যাকাউয়ের দল। কেউ তাঁর ঘাড়ে-মাথায় চড়ে বসেছে। কেউ বসেছে ঠিক পিয়ানোর উপরে। পল কিন্তু নির্বিকার ভঙ্গিতে তাঁর সুর সৃষ্টি করে চলেছেন। এই নতুন জীবন যে তাঁর কাছে সাধনার মতো। বন্যপ্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতে গেলে তাদের মনেরও যে যত্ন নিতে হবে।

Powered by Froala Editor