ডারউইন-খ্যাত গ্যালাপাগোস দ্বীপে সন্ধান মিলল ৩০টি নতুন সামুদ্রিক প্রাণীর

ইক্যুয়েডর থেকে ১০০০ কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট্ট একটি দ্বীপ গ্যালাপাগোস। সেই ১৮৩৫ সালে ডারউইনের বিগল জাহাজ ভিড়েছিল এই দ্বীপে। পৃথিবীর বিচিত্রতম বাস্তুতন্ত্রের বাস এখানে। তাই তো বিবর্তনের রহস্য খুঁজতে ডারউইনকে আসতেই হয়েছিল এখানে। কিন্তু এই ১৮৫ বছরেও যে তার খুব সামান্যই মানুষ জানতে পেরেছে, সেকথা বোঝা যায় বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণার রিপোর্ট দেখে। একটি-দুটি নয়, একসঙ্গে ৩০টি নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেল এই গ্যালাপাগোস দ্বীপেই।

আন্তর্জাতিক সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের একটি দল বছরখানেক গবেষণা শুরু করেছিল এই গ্যালাপাগোস দ্বীপে। এবারের লক্ষ দ্বীপকে ঘিরে থাকা সমুদ্রের তলদেশ। সঙ্গে ছিল দুটি রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকল বা আরওভি। তাদের নাম যথাক্রমে আর্গাস এবং হারকিউলাস। সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৩৪০০ মিটার গভীরতায় নেমে অনুসন্ধান চালায় এই দুই আরওভি। আর সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে ৩০টি নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেল। তার মধ্যে অনেকগুলির অস্তিত্ব গ্যালাপাগোসের বাইরেও অন্য কোথাও পাওয়া যায়নি।

চার্লস ডারউইন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই গবেষণার সবচেয়ে আকর্ষণীয় আবিস্কার হল গ্লাস স্পঞ্জ গণের নতুন এক ধরনের প্রজাতি। প্রায় ১ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে একাধিক স্পঞ্জ একসঙ্গে যেন একটা বসতি তৈরি করে বাস করে। তবে বিজ্ঞানীদলের প্রধান নিকোলা রেনল্টের কথায়, কোনো আবিষ্কারই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এর মধ্যে আছে স্পঞ্জের ১১টি প্রজাতি এবং ১০টি প্রবালের প্রজাতি। এর মধ্যে ব্যাম্বু কোরাল বা বাঁশের মতো লম্বা প্রবাল থাকতে পারে বলে সন্দেহ ছিল আগে থেকেই। অবশেষে তার সন্ধানও পাওয়া গেল। 

বিজ্ঞানী স্যালিনাস ডি লিওনের কথায়, সমুদ্রের নিচে যে বিপুল জীববৈচিত্র্য লুকিয়ে আছে, তাদের নিয়ে গবেষণা খুব কমই হয়েছে। শুধু তাই নয়, সমুদ্রের ভূপ্রকৃতি সম্বন্ধেও অনেক কিছুই অজানা। সাম্প্রতিক গবেষণাতেই দেখা গিয়েছে সমুদ্রের নিচে আছে তিনটি সমুদ্রশৈল। আর এইসব পাহাড়ের গায়ে বহু হাঙর বাসা বেঁধে থাকে। পরবর্তীকালে ভূতাত্ত্বিকদের গবেষণায় এর সম্বন্ধে আরও অনেক কিছুই জানা যেতে পারে। এই পৃথিবীর বিচিত্র জীবজগতকে চিনতে যে আমাদের এখনও অনেক বাকি, এই গবেষণার ফলাফল সেকথাই আবার প্রমাণ করল।

আরও পড়ুন
পশ্চিমঘাট পর্বতে ৭৭টি নতুন প্রজাতির প্রজাপ্রতির সন্ধান, উচ্ছ্বসিত গবেষকরা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
বিলুপ্তির পথে কচ্ছপ ও কাছিমের অধিকাংশ প্রজাতি, চিন্তিত প্রাণীবিদরা