আবারও আগুনের গ্রাসে আমাজন, ছাড়িয়ে যেতে পারে আগেকার বিপর্যয়ও

পরপর গত ২ বছর আমাজনের বিস্তীর্ণ বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছেন সকলেই। সারা পৃথিবী আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে, কারণ পৃথিবীর ফুসফুস জ্বলছে। আর এবছরও মে মাস পেরোতে না পেরোতেই শুরু হয়ে গিয়েছে আগুনের তাণ্ডব। এর মধ্যেই ব্রাজিল আমাজন অঞ্চল থেকে অন্তত ১৯টি অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গিয়েছে। আর এক একটি অঞ্চলের আয়তন গড়ে ২০০ হেক্টর। সব মিলিয়ে এবছরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাজনের বিগত ১০০ বছরের ইতিহাসে গতবছরের আর্দ্রতা ছিল সবচেয়ে কম। এই শুষ্ক অরণ্যে আগুন একবার আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণে আনা ভীষণ কঠিন। ফলে এবছর আগুন আরও দ্রুত ছড়াতে থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন মনিটরিং আন্দিয়ান আমাজন প্রোজেক্টের বিশেষজ্ঞ ম্যাট ফাইনার। গত ১৯ মে মাটো গ্রাসো প্রদেশের সেরা রিকার্ডো ফ্র্যাঙ্কো পার্কে প্রথম আগুন লাগার ঘটনা জানা যায়। এরপর দেখতে দেখতে দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মাটো গ্রাসো প্রদেশেই ৯ জায়গায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ক্রমশ আগুন ব্রাজিল ছাড়িয়ে কলোম্বিয়া প্রদেশেও ঢুকে পড়তে চলেছে।

ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে প্রতি বছরের মতো এবছরও নিছক প্রাকৃতিক দাবানল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই ব্যাখ্যা মানতে একেবারেই রাজি নন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। ম্যাট ফাইনারের মতে আমাজনে অক্টোবর নভেম্বর মাসে প্রাকৃতিক কারণে আগুন লাগার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মে-জুন মাসের অগ্নিকাণ্ডকে কোনোভাবেই প্রাকৃতিক বলা যায় না। এর জন্য অরণ্যের শুষ্কতা বেড়ে যাওয়াই দায়ী। আর তার কারণ ব্যাপক হারে বৃক্ষচ্ছেদন। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছেন, এখনও অবধি যে ১৯টি জায়গায় আগুন লেগেছে, গত এক বছরে সেই সমস্ত অঞ্চলেই গাছ কাটা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। অথচ ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে গাছ কেটে খননকার্য চালিয়ে যাওয়ায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে ক্রমাগত। এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটানো না গেলে আগামীদিনে প্রায় সমস্ত আমাজন অরণ্যশূন্য হয়ে পড়বে। আর তার ফলে গোটা পৃথিবীর অক্সিজেনের জোগানে টান পড়বেই।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ব্রাজিলের উপজাতির সঙ্গে বে-আইনি উত্তোলকদের সংঘর্ষ, উত্তপ্ত আমাজন