২০৬৪ সালের মধ্যেই বিলুপ্ত হবে আমাজনের বৃষ্টি-অরণ্য, সতর্কতা ফ্লোরিডার ভূবিদের

বছর দেড়েক আগেই বিধ্বংসী আগুন জ্বলে উঠেছিল আমাজনের অরণ্যে। পৃথিবীর ফুসফুসকে জ্বলতে দেখে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। আর এর পর থেকেই একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে আমাজন অরণ্যের আশঙ্কাজনক বাস্তবতা। আর সাম্প্রতিক গবেষণায় ভূবিদ রবার্ট ওয়াকারের দাবি, অতি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমাজনের আয়ু শেষ হয়ে এসেছে। ২০৬৪ সাল বা তার আগেই পৃথিবীর বৃহত্তম বৃষ্টি-অরণ্য পরিণত হতে পারে সাভানা তৃণভূমিতে।

ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির ভূগোলের অধ্যাপক রবার্ট ওয়াকার এই লকডাউনের মধ্যেই গবেষণা চালিয়েছেন। অবশ্য তাঁর গবেষণার পরিসর সামাজিক ভূগোল। তিনি মূলত লক্ষ করেছেন উপজাতিদের বদলে যাওয়া জনজীবন। ব্রাজিল এবং কলোম্বিয়া সরকার ইতিমধ্যে অরণ্য আইন নিয়ে বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে। সেই সমালোচনাকেই আরও উস্কে দিচ্ছে রবার্ট ওয়াকারের গবেষণা। উপজাতিদের স্বাভাবিক জীবন বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে আমাজনকে বাঁচানো সম্ভব নয়। অথচ সরকারি প্রকল্পে বারবার অরণ্যবাসীদের নাগরিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলে আসছে।

পাশাপাশি বিশ্ব-উষ্ণায়নকেও আমাজনের ধ্বংসের জন্য দায়ী করেছেন রবার্ট ওয়াকার। ক্রমশ প্রকৃতি-পরিবেশ যেভাবে বদলাচ্ছে, তাতে যে কোনো বড়ো গাছের পক্ষেই টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। আর আমাজনের জঙ্গলে ইতিমধ্যে বারবার দাবানল দেখা যাচ্ছে। খরার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। এই বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনের ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে উদ্ভিদগুলো। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ওয়াকার দেখিয়েছেন, আর ৪৪ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর ফুসফুস সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাবে। আর তার জন্য দায়ী থাকবে সমস্ত মানুষ, ওয়াকারের কথায় এই অ্যান্থ্রোপোসিন যুগ। মানুষের সভ্যতার জন্যও যে এই সংবাদ অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, সে-কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।

Powered by Froala Editor