জায়গা নেই গোরস্থানে, পুরনো সমাধি খুঁড়েই শায়িত করা হচ্ছে করোনায় মৃতদের!

করোনা ভাইরাসের হানায় জর্জরিত ব্রাজিল। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে সাড়ে আট লক্ষ। প্রায় ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যুমিছিলের সাক্ষী সে দেশ। এই পরিস্থিতির জন্য বার বার গাফিলতির অভিযোগে আঙুল উঠছে বলসোনারো সরকারের দিকে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে পুরনো কবরের মধ্যেই সমাধিস্থ করা হচ্ছে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের।

ব্রাজিলে মৃত্যুর হার যেভাবে বাড়ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো পরিকাঠামোই প্রস্তুত নেই সেখানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে সরকার। এমনকি করোনায় মৃত ব্যক্তিদের সমাধি দেওয়ার মতো জায়গারও অভাব দেখা দিয়েছে চরমভাবে। কোনোভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতেই তাই প্রথাগত রীতির বাইরে গিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে সাও পাওলো মিউনিসিপ্যাল ফিউনেরল সার্ভিস।

জরুরি তৎপরতায় এখন পুরনো কবরস্থানগুলিকে পরিষ্কার করা হচ্ছে। আগে থেকে সমাধিস্থ কফিনগুলি তুলে আনা হচ্ছে মাটির তলা থেকে। সাও পাওলোর পৌরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অন্তত তিন বছর বা তার বেশি সময় আগে যে দেহগুলি সমাধিস্থ করা হয়েছিল সেগুলোই তুলে আনা হবে মাটির তলা থেকে। তারপর অবশিষ্ট অস্থি এবং দেহাংশ সাময়িকভাবে পৃথক পৃথক ভরে রাখা হবে চিহ্নিত করা প্লাস্টিকের ব্যাগে। ১৫ দিনের মধ্যে সেগুলিকে বড় ধাতব বাক্সে ভরে আবার ফেরত পাঠানো হবে সমাধিক্ষেত্রে।

সমাধি খননের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সাও পাওলোর বৃহত্তম কবরস্থান ভিলা ফরমোশায়। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলছে সে-দেশের জনগণ। পাশাপাশি শ্রমসাধ্য এই প্রক্রিয়ায় নাজেহাল সমাধিক্ষেত্রের কর্মীরা। সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ছে তাঁদের মধ্যেও। তবে পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হতে চলেছে দিন দিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রায় ৮০ শতাংশ আইসিইউ এবং ইন্টেন্সিভ কেয়ার শয্যাই এখন ভর্তি হয়ে গেছে ব্রাজিলে। পরবর্তী পর্যায়ে সংক্রমণ বাড়লে রোগীদের পড়তে হবে চরম সংকটে। তার ব্যাপারেই আভাস দিয়েছে হু (WHO)। অথচ এসব তুচ্ছ করেই খোলা হয়েছে ব্রাজিলের শপিং মল, দোকানপাট; স্বাভাবিক করা হয়েছে জনজীবন...

আরও পড়ুন
সমুদ্রতটে একের পর এক কবর, সরকারের করোনা নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ব্রাজিলে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভেঙে গেল সব দেশের রেকর্ড, করোনায় একদিনে ৩৩,০০০ আক্রান্ত ব্রাজিলে