প্রেসিডেন্টের মতে ‘ছোটো ফ্লু’; আড়াই লাখ ছাড়াল ব্রাজিলের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

গত বছর থেকেই একের পর এক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল। প্রথমে আমাজনের ঘন জঙ্গলের অনেকটা পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আদিবাসী, বন্যপ্রাণ— সবাই পড়ল বিপদে। আর এখন সেখানে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। এই মুহূর্তে ব্রাজিলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার পেরিয়েছে। যত দিন যাচ্ছে, এই সংখ্যাটা বেড়েই চলছে ক্রমশ।

দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশের সঙ্গে পরিসংখ্যানের তুলনা করলে, ব্রাজিল অনেক বেশি আক্রান্ত। এর পরেই পেরুর স্থান; তাদের আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯৫ হাজার। সেখানে ব্রাজিলের এমন অবস্থা চিন্তায় ফেলে দেওয়ার মতো। শুধু তাই নয়, হঠাৎ করেই যেন এই সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেতে আরম্ভ করল। এপ্রিলের একদম শেষে ব্রাজিলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছোঁয়। তারপরেই যেন আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। অ্যামাজনের আদিবাসীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। আর ব্রাজিলের এই অবস্থার জন্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে সেখানকার প্রশাসন; বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট জর বলসোনারো।

যে সময় করোনার জন্য বিশ্বের তাবড় দেশে কাজকর্ম, কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, লকডাউন জারি হয়েছে; সেখানে ব্রাজিলে সমস্ত কাজই চলছিল। বলসোনারো’র দাবি, দেশের অর্থনীতি শেষ হয়ে যাবে। সেজন্য কাজকর্ম যেমন চলছে চলুক। করোনা’র মতো এমন ‘ছোটো ভাইরাস আর ছোটোখাটো ফ্লু’-এর জন্য চিন্তা করার দরকার নেই। এমনিতেই ব্রাজিলের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। করয়ান ছড়িয়ে পড়লে সেখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এক মুহূর্তে ভেঙে পড়বে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট তথৈবচ! নাগরিকদের জীবনের মূল্য কি এতটাই সস্তা তাঁর কাছে?

আজ ব্রাজিলের সবচেয়ে বড়ো শহর সাও পাওলোতেই মারা গেছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। সাও পাওলোর এমন অবস্থা হলে, অন্যান্য জায়গায় কী হবে, ভাবতে খুব একটা কষ্ট হয় না। কিন্তু সেই ভাবনা বেদনাদায়ক। লকডাউন করার কথা বারবার বলা হলেও, বলসোনারো শুনতে রাজি নন। অবশেষে যখন শুরু হল, তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে। এখনও অনেক জায়গায় ঠিকঠাক স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছচ্ছে না। ব্রাজিলের অবস্থা ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে, ভাবতে পারছেন না অনেকেই…