মহামারীর মধ্যে ঘিরে ধরেছে দারিদ্র্য, ফল বিক্রি করছেন বলিউডের অভিনেতা

দিল্লির রাস্তায় আবারও দেখা যাচ্ছে এক অতি পরিচিত ফল বিক্রেতাকে। করোনা লকডাউনের মধ্যেই মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মরসুমি ফল বিক্রি করছেন সোলাঙ্কি দিবাকর। বলিউডের সৌজন্যে দেশের নানা প্রান্তের মানুষের কাছে তিনি এখন পরিচিত। 'তিতলি', 'ড্রিম গার্ল' প্রভৃতি বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। আর কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো তারকা হিসাবে পরিচিত হতে পারতেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই ঘটে গেল এক দুর্ঘটনা। করোনা মহামারী প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সমস্ত সিনেমা, সিরিয়ালের শ্যুটিং বন্ধ করে দিল সরকার। আর তার ফলেই আবারও পুরনো পেশায় ফিরে যেতে হল দিবাকরকে। অবশ্য কোনো কাজের ছোটো-বড়ো ভেদ হয়না, মনে করেন দিবাকর। তাই মনের মধ্যে কোনো গ্লানি নেই তাঁর। বরং সারাদিন ব্যস্ততার মধ্যে কোনদিক দিয়ে সময় চলে যাচ্ছে, বুঝতে পারছেন না।

বছর ৩৫-এর সোলাঙ্কি দিবাকর স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে বাস করেন দিল্লিতে। আগ্রা শহরে জন্ম হওয়ার পর শৈশবেই দিল্লি চলে আসেন তিনি। তারপর পেশা হিসাবে বেছে নেন ফল বিক্রিকে। এভাবেই দিন চলছিল। তারই মধ্যে সুযোগ পেয়ে গেলেন বলিউডে। তাঁর অভিনয়ের গুণে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন ইন্ডাস্ট্রির সকলের। আরও কিছু সিনেমার জন্য কাজ শুরু করতে চলেছিলেন, এমন সময় সব বন্ধ হয়ে গেল। ফিরে এসে আবার সেই পুরনো জীবন। প্রতিদিন কাকভোরে উঠে ওখলা মান্ডির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়া, সেখান থেকে ফল কিনে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ানো। তবু এর মধ্যে মুম্বইয়ের কর্মক্ষেত্র যেন তাঁকে বারবার হাতছানি দিয়ে যায়।

কয়েকটি সিনেমার কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন দিবাকর। ঋষি কাপুরের সঙ্গেও একটি সিনেমায় কাজের সুযোগ এসেছিল। কিন্তু মহামারীর প্রকোপে সব বন্ধ হয়ে গেল। আর এর মধ্যেই চলে গেলেন ঋষি কাপুর। তাই সেই অসমাপ্ত স্বপ্ন আর পূরণ হবে না। কিন্তু এখনও সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার প্রতীক্ষায় আছেন দিবাকর। সেদিন আবারও ক্যামেরার সামনে গিয়ে দাঁড়াবেন তিনি। আর যতদিন তা না হচ্ছে, ততদিন ফল বিক্রির পেশাতেই খুশি তিনি। অবশ্য এর মধ্যে আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ আছে। সরকারের নির্দেশিকা সত্ত্বেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মাবলি এইসব ছোটো ব্যবসার পরিসরে প্রায় মানা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দিবাকর। তাই সংক্রমণের ভয় থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু অনাহারে মৃত্যুর চেয়ে এই জীবন সংগ্রামকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।

More From Author See More

Latest News See More