করোনার পরবর্তী হটস্পট হতে পারে আমাজন, আশঙ্কা ব্রাজিলের পরিবেশবিদের

সংক্রমণের শুরু থেকেই ক্রমাগত চরিত্র বদল করে চলেছে করোনা ভাইরাস। সেই সঙ্গে পাল্টেছে মহামারীর এপিসেন্টারও। চিন থেকে ইতালি হয়ে এখন আমেরিকাই হটস্পট কোভিড-১৯ এর। সারা পৃথিবী জুড়ে আক্রান্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ। এর মধ্যেই নতুন আশঙ্কার কথা শোনালেন ব্রাজিলের ইকোলজিস্ট দাভিদ লাপোলা। কোভিড-১৯ মহামারীর পরবর্তী হট জোন হতে চলেছে পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন।

তবে এই বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে আঙুল উঠেছে মানুষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ক্রিয়াকলাপের দিকেই। লাপোলা জানাচ্ছেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করলে বাহকের প্রজাতি পরিবর্তন করে ভাইরাস। বন্যপ্রাণীদের থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে লোকবসতিতে। করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে, মনে করছেন লাপোলা। চিনের হুবেই প্রদেশে মাত্রাতিরিক্ত নগরায়নের ফলেই তৃতীয় কোনো প্রজাতি থেকে ছড়িয়েছে করোনা। একইভাবে চড়িয়েছিল ইবোলা, এইচআইভি, ডেঙ্গুর মতো রোগ।

আর ঠিক এটাই হতে চলেছে আমাজনের ক্ষেত্রে। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানী লাপোলা জানাচ্ছেন, আমাজন নিজেই একটি ভাইরাসের আধার। জানা, অজানা নানান প্রজাতির ভাইরাস রয়েছে সেখানে। কিন্তু গত বছর থেকে যেভাবে বনভূমি নষ্ট করা হচ্ছে, বিঘ্নিত করা হচ্ছে ভারসাম্য— তাতে নতুন করে ভয়ঙ্কর কোনো মহামারীর উৎস হয়ে উঠে পারে আমাজন।

গত বছর আমাজনে নগরায়নের হার বেড়েছিল ৮৫ শতাংশ। এই বছরের প্রথম চারমাসে অবৈধভাবে চাষ, খননের কাজের জন্য মুছে গেছে প্রায় ২০২ বর্গকিমি বনভূমি। এই নগরায়নের ফলে মানুষের থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বন্যপ্রাণীরা। আমাজনের প্রাণীরা বিপরীত সংক্রমণের শিকার হলে তার পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর। বিপুল জীববৈচিত্র্য থাকার কারণে পৃথিবীর বৃহত্তম করোনার আধার হয়ে উঠতে পারে আমাজন। এবং সেই ক্ষতি হবে অপূরণীয়।

তাই নতুন কোনো বিপর্যয় থেকে বাঁচতে এখন একমাত্র উপায় যে বনাঞ্চল রক্ষা করা, তা স্পষ্টই উঠে আসে লাপোলার গবেষণায়। আমাজনের অপব্যবহার বন্ধ করে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। সতর্ক করেছেন, ভারসাম্য না ফিরিয়ে আনলে নিজেদের অজানা বিপদই ডেকে আনবে মানুষ...