মাত্র ১ ঘণ্টায় জাপান থেকে আমেরিকা! স্বপ্ন দেখাচ্ছে হাইপারসোনিক বিমান

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলিস থেকে জাপানের টোকিও— প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মাইলের এই পথই পাড়ি দেওয়া সম্ভব হবে মাত্র ১ ঘণ্টায়। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ভেনাস এরোস্পেস কর্পোরেশন। আর এই অসম্ভবকে অদূর ভবিষ্যতে সম্ভব করবে তাদের তৈরি হাইপারসোনিক বিমান। ইতিমধ্যেই সেই বিমান তৈরির কাজ শুরু করেছে বলে দাবি করছে এই মার্কিন সংস্থাটি।

হাইপারসোনিক বিমানের ধারণা নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই চিন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা চলে আসছে হাইপারসোনিক প্রযুক্তি নিয়ে। তবে সেই সাফল্যে পৌঁছাতে পারেনি কেউ-ই। কেবলমাত্র ২০১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফল হয়েছিল হাইপারসোনিক মিসাইল তৈরিতে। তাও স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ৫ মিনিট। তারপরেই বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে উৎপাদিত তাপের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারায় সেটি। সেই রকেটের গতিবেগ ছিল ৫ ম্যাক। অর্থাৎ, শব্দের গতিবেগের তুলনায় ৫ গুণ বেশি।

সেখানেই চমক লাগাচ্ছে মার্কিন সংস্থাটি। ভেনাস এরোস্পেস কর্পের দাবি, তাঁদের প্রযুক্তি কোনো বিমানকে ওড়াতে সক্ষম হবে সর্বোচ্চ ১২ ম্যাক গতিতে। ফলে স্বাভাবিক বিমানে ১৩ ঘণ্টার গতিপথ কমে আসবে মাত্র ১ ঘণ্টায়। বিমানের ডানা, ইঞ্জিন ও ল্যান্ডিং গিয়ারে ঠিক কী কী পরিবর্তন করলে এই লক্ষ্যমাত্রাকে ছোঁয়া সম্ভব— তারও ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে ফেলেছে সংস্থাটি। চলতি গ্রীষ্মেই তাদের তৈরি হাইপারসোনিক জেটের থ্রি স্কেল মডেলের পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানাচ্ছে ভেনাস অ্যারোস্পেস কর্প। 

তাহলে কবে আসছে এই অভিনব বিমান? কমপক্ষে আরও এক দশক অপেক্ষা করতে হবে তার জন্য। কারণ, গতিবৃদ্ধির প্রযুক্তির হদিশ মিললেও এখনও স্থায়ী সমাধান মেলেনি বায়ুমণ্ডলীয় ঘর্ষণের। দ্রুত গতিতে কোনো পদার্থ বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে চালিত হলে, ঘর্ষণের কারণে তৈরি হয় উচ্চ তাপমাত্রা। ফলে, গ্যাসীয় প্লাজমার একটি আবরণ তৈরি হয় পদার্থটির চারপাশে। সেই আস্তরণ ভেদ করে বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থায়ী রাখা সম্ভব হয় না। সেই প্রযুক্তিটি নিয়েই বর্তমানে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ভেনাসের গবেষকরা। 

আরও পড়ুন
ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার গবেষকদের

এই মুহূর্তে ভেনাসে কর্মরত ১৫ জন গবেষকই স্বনামধন্য মহাকাশ প্রযুক্তিবিদ। তাঁরা সকলেই এর আগে কাজ করেছেন বিভিন্ন দেশের মহাকাশ সংস্থায়। ফলে, তাঁদের এই আশ্বাসকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে মার্কিন প্রশাসন। এমনকি ইতিমধ্যেই মার্কিন বিমানবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা বিভাগ বড়ো অঙ্কের টাকা ঢেলেছে ভেনাসের গবেষণার কাজে। হাইপারসোনিক এই বিমান তৈরি সম্ভব হলে যে গোটা বিশ্বের চেহারাই পাল্টে যাবে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো। কিন্তু সামরিক বিমানে এই ঘাতক প্রযুক্তির ব্যবহার আরও ভয়াবহ করে তুলবে না তো পরিস্থিতিকে? থেকে যাচ্ছে সংশয়ও… 

আরও পড়ুন
প্রযুক্তির ব্যবহারে সংকটে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ছোট্ট স্কিন-প্যাচই জানিয়ে দেবে আপনি নেশাগ্রস্ত কিনা, অভিনব প্রযুক্তি দক্ষিণ কোরিয়ার