প্রযুক্তির ব্যবহারে সংকটে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা

যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের নজরদারি করতে বর্তমানে সেনাবাহিনীর অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে ড্রোন। সীমান্ত পেরিয়ে অন্যদেশের ড্রোন ঢুকে পড়লে, তাকে গুলি করে ভূপতিত করার ঘটনা আজকাল হামেশাই উঠে আসে সংবাদপত্রের শিরোনামে। তবে বছর পাঁচেক আগে নজিরবিহীন এক কাণ্ডের সাক্ষী হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি প্রদেশ। প্রতিবেশীর ড্রোনকে শটগান দিয়ে গুলি করে নামিয়েছিলেন এক মার্কিন ব্যক্তি। মামলা গড়িয়েছিল আদালতেও। আর তার রায়ই জানিয়ে দিয়েছিল ডিজিটালের যুগে কার্যত শেষ হয়েছে ব্যক্তি মালিকানার আইন।

২০১৫ সালের কথা। বাড়ির ছাদে অক্টোবরের রোদ পোহাচ্ছিলেন উইলিয়াম মেরিডেথ নামের ওই ব্যক্তির কন্যা। তিনিই প্রথম লক্ষ্য করেন তাঁদের বাড়ির বাগানে প্রতিবেশীর ড্রোনটির উপস্থিতি। দ্রুত বাবার কাছে এই ‘নজরদারি’-র খবর পৌঁছে দেন তিনি। আর তারপরেই গর্জে ওঠে মেরিডেথের ডবল ব্যারেল। সামনে মাঠে বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিটকে পড়ে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন ডলারের ড্রোনটি।

না, ড্রোন-মালিকের ওপরে নজরদারির জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং, গুলিচালনার জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিলেন উইলিয়াম মেরিডেথ। পুলিশের কাছে তাঁর সাফাই ছিল তাঁর ব্যক্তিগত এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছিল ড্রোনটি। পাশাপাশি তিনি গুলি চালিয়েছেন নিজের বাগানের মধ্যেও। তার বিন্দুমাত্র রেশ পড়েনি পার্শ্ববর্তী রাস্তাতেও। কাজেই হিসেব মতো তিনি নির্দোষ। তবে মেরিডেথের এই যুক্তি গৃহীত হয়নি আদালতে। কারাগারে দিন কাটাতে হয়েছিল তাঁকে।

এই ঘটনা পুরোপুরিই যেন বদলে দেয় ব্যক্তি মালিকানার সংজ্ঞা। তবে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং তার বিচরণের ক্ষেত্রও। প্রযুক্তির ব্যবহারেও কি লঙ্ঘিত হচ্ছে না ব্যক্তিস্বাধীনতার সীমারেখা? হচ্ছে বৈকি, পাশাপাশি সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সংকটও…

আরও পড়ুন
চুরি হয়ে যাওয়া সামগ্রী থেকেই তৈরি হচ্ছে আফগানিস্তানের নতুন ইতিহাস

Powered by Froala Editor