ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার গবেষকদের

করোনা আতঙ্কের মধ্যে আমরা ভুলেই গিয়েছি আরও নানা প্রাণঘাতী রোগের কথা। সবার মনের মধ্যে শুধুই করোনার আতঙ্ক। তবে বিজ্ঞানীদের গবেষণা এখনও নানা খাতে বয়ে চলেছে। আর এর মধ্যেই ম্যালারিয়া প্রতিরোধে এক যুগান্তকারী গবেষণায় সাফল্য পেলেন অক্সফোর্ডিউনিভার্সিটির গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই প্রথম ম্যালেরিয়ার এমন কোনো প্রতিষেধকের সন্ধান পাওয়া গেল যার কার্যকারিতা ৭৫ শতাংশের বেশি।

ম্যালেরিয়া জ্বর বহুদিন মহামারীর চেহারা নেয়নি ঠিকই। তবে প্রতি বছর এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। বছরে অন্তত ৪ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়া জ্বরে। আর তার বেশিরভাগটাই ঘটে উপ-সাহারা অঞ্চলে। মূলত শিশুমৃত্যুর ঘটনাই ঘটে বেশি। ৫ বছর বয়সের আগেই অনেকের প্রাণ কেড়ে নেয় ম্যালেরিয়া। আর এই রোগ ঠেকানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে একটি কার্যকর প্রতিষেধকের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে আসছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু প্রায় ২ শতাব্দী গবেষণার পরেও কোনো উপযুক্ত প্রতিষেধকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এবার সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের হাত ধরে যে প্রতিষেধক তৈরি হল, তার কার্যকারিতা ৭৭ শতাংশ বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।

আর-২১ নামের এই প্রতিষেধকটি ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিশুর উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রায় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। ল্যানসেলেট পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে মার্ট্রিজ-এম প্রযুক্তির সাহায্যে এই প্রতিষেধক তৈরি করা হয়েছে। করোনা প্রতিরোধেও একই পথে হেঁটেছিলেন গবেষকরা। সেক্ষেত্রে সাফল্য না মিললেও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকর এই পদ্ধতি। তবে গবেষণাপত্রটি এখনও বিবেচনাধীন।

ইতিমধ্যে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রতিষেধকের জন্যও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর করা হবে। দুই পক্ষের প্রাথমিক কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে। প্রতি বছর ২ হাজার ডোজ প্রতিষেধক তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট। সমস্ত প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে পৃথিবী থেকে মুছে যাবে আরও একটি মারণ রোগ। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রাচীন সংক্রামক জ্বর ম্যালেরিয়া। এতদিনে তার থেকে সম্পূর্ণ মুক্তির আশ্বাস পাওয়া গেল।

আরও পড়ুন
নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও কার্যকর পুরনো প্রতিষেধকগুলি, জানালেন চিকিৎসকরা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
করোনার প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি, আন্তর্জাতিক সম্মান বঙ্গতনয়ার