অনুমতি নিয়েই একের পর এক খুন! ‘ট্যুইটার কিলার’-এর দাবি ঘিরে চাঞ্চল্য জাপানে

বছর তিনেক আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় ৯টি মৃতদেহ। হত্যার পর তাদের দেহগুলি টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে এবং আইস-বক্সে ভরে রেখেছিলেন তিনি। ফলে তথ্যপ্রমাণের আর কোনো অবকাশ ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি সেই মামলা আদালতে উঠতেই এক চাঞ্চল্যকর দাবি করে বসলেন আসামি পক্ষের উকিল। বলা হয় প্রত্যেককে নাকি অনুমতি নিয়েই খুন করেছেন আসামি। অর্থাৎ একে ঠিক খুন না বলে বলা উচিৎ আত্মহত্যায় সাহায্য করা। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এমনটা সত্যিই ঘটেছে জাপানে।

২০১৭ সালে কিছু ধারাবাহিক নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে থাকে জাপানের নানা শহরে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারেন, তাঁরা প্রত্যেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। ইতিপূর্বে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন তাঁরা। আর এই সূত্রেই পুলিশ খুঁজে পান একটি ট্যুইটার অ্যাকাউন্টের হদিশ। সেই অ্যাকাউন্টে লেখা, তিনি যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষদের সাহায্য করতে চান। জানা যায় সেই অ্যাকাউন্ট তাকাহিরো শিরাইশি নামে এক যুবকের। তাঁর বাড়িতে গিয়ে প্রতিটি মৃতদেহের সন্ধানও পাওয়া যায়। আর জাপানি আইন অনুযায়ী ধারাবাহিক হত্যার একমাত্র শাস্তি ফাঁসি।

তবে সম্প্রতি আদালতে মামলা উঠলে শিরাইশির আইনজীবি দাবি করেন, যেহেতু প্রত্যেকের অনুমতি নিয়েই তাঁদের হত্যা করা হয়েছে তাই শাস্তি কিছুটা কমিয়ে আনা উচিৎ। এক্ষেত্রে বড়জোর ৭ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও জানা গিয়েছে, শিরাইশি নিজে এই দাবি স্বীকার করেননি। তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেকেই মৌখিক অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু সেই অনুমতি আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কথোপকথন চালিয়েছেন শিরাইশি। অর্থাৎ মানুষের অবসাদের সুযোগ নিয়ে তাঁদের মৃত্যুর ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি।

এই মামলাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল জাপান। এমনকি ‘ট্যুইটার কিলার’ নামে পরিচিত এই আততায়ীর জন্য সমস্যায় পড়তে হয়েছে নানা সামাজিক মাধ্যমকেও। সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে যাতে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া না হয়, সেই বিষয়ে নজরদারিও শুরু করতে হয়েছে। এখনও যদিও শিরাইশির শাস্তিবিধান হয়নি, তবে এমন অভিনব হত্যা মামলা অবাক করেছে সকলকেই।

আরও পড়ুন
৩০০ পুরুষের হত্যার পিছনে এক নারী, হাঙ্গেরির সুজানার সঙ্গে জড়িয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধও

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ব্রিটিশ শাসনে প্রথম ফাঁসি, মহারাজা নন্দকুমারের হত্যাদৃশ্য দেখতে জনসমুদ্র কলকাতায়