প্রধানমন্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত জনতা, হত্যার পর কেটেও খাওয়া হয়েছিল দেহ

দেশের একদল জনতা আক্রমণ করল তাঁদের রাষ্ট্রপ্রধানকে। তারপর তাঁকে হত্যা করা হয়। শুধু হত্যা নয়, কয়েকজন তো মৃত প্রধানমন্ত্রীর দেহাংশও খেয়ে ফেলে! না, ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই। এখন এরকম কিচ্ছু ঘটেনি। কিন্তু একটা সময় এমনই ঘটনা ঘটেছিল নেদারল্যান্ডে। নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়, এবং খাওয়া হয়। ইতিহাসে নৃশংসতার এমন জ্বলন্ত উদাহরণ খুব কমই দেখা গেছে।

সালটা ১৬৭২। ডাচ রিপাবলিকের সিংহাসনে তখন আছেন জন ডে উইট। এই ভদ্রলোক সতেরশো শতকের ডাচ ইতিহাসের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। যে সময় তিনি সিংহাসনে, সে সময় সেখানকার জনতা মসনদে চাইছে ডাচ রাজ পরিবারের কোনও সদস্যকে। কিন্তু তার বদলে সেখানে ছিলেন ডে উইট। ফলে ভেতরে ভেতরে যে অসন্তোষ ছিল, তা বলাই বাহুল্য। এমন সময় শুরু হল ডাচ যুদ্ধ। ফ্রান্স আর ইংল্যান্ড একযোগে আক্রমণ করে ডাচ রিপাবলিককে। গুরুতর আহত হন জন ডে উইট। হয়ত মারাই যেতেন, কিন্তু কপালে যে আরও ভয়ানক কিছু লেখা ছিল, কে জানত!

তাঁর ভাই করনেলিস ডে উইটকে গ্রেফতার করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ক্ষমতাচ্যুত জন তাঁর ভাইকে রক্ষা করার জন্য যান। দুজনকেই সেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়। তারপর শুরু হয় মধ্যযুগীয় বর্বরতা। দুটো দেহকেই জনতার হাতে দেওয়া হয়। বলা হয়, এই সময়ই তাঁদের দেহাংশ নাকি কয়েকজন উন্মত্ত জনতা কেটে ঝলসে খেয়ে নেয়। ডাচ ইতিহাসে এই সময়টাকে আজও চিহ্নিত করা হয় ‘কালো সময়’ হিসেবে। মানুষ যে হিংস্র পশুরই একটি প্রকার, ইতিহাসের এই সমস্ত ঘৃণ্য ঘটনাই বারবার আমাদের প্রমাণ দিয়ে যায়।

More From Author See More