হাসপাতালগুলির ৮০% শয্যাই ভর্তি করোনা-আক্রান্তে; কলকাতার সামনে কঠিন ভবিষ্যৎ

রাজ্যে অব্যহত করোনার মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণ। সংক্রমণে ৫০ হাজারের দোরগোড়ায় পৌঁছোল বাংলা। মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ১২২১। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ২২৯১ জন মানুষ আক্রান্ত হলেন মারণ ভাইরাসে। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও তৈরি করল নতুন রেকর্ড। একদিনে মারা গেলেন ৩৯ জন মানুষ। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার।

রাজ্যে সংক্রমণের পরিমাণ এখনও সবথেকে বেশি কলকাতায়। তারপরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়া। বুধবারের রিপোর্ট অনুযায়ী সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা রাজ্যে দাঁড়াল সাড়ে ১৮ হাজার। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রায় ৬৫০। সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। এই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মূলত কলকাতা। কলকাতার হাসপাতালগুলির ৮০ শতাংশই শয্যাই ভর্তি হয়ে গিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে কলকাতায় দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্য সংকট, ফুটে উঠছে সেই আশঙ্কাই। আর এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই জালিয়াতি শুরু হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে। করোনা চিকিৎসার নামে ১৫ লক্ষ টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও কলকাতায় ঘটেছে সম্প্রতি। তবে সার্বিকভাবে সারা রাজ্যে এখনও ফাঁকা আছে ৫০ শতাংশ শয্যা। পাশাপাশিই এদিন করোনাকে হারিয়ে বাড়ি ফেরে ১৬১৫ জন মানুষ। যার কারণে সুস্থতার হার আবার খানিকটা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ৬০ শতাংশে। যা ভরসা যোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। 

তবে সামগ্রিকভাবে দেশের অবস্থা আরই করুণ। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হলেন ৪৫ হাজার মানুষ। যা পূর্ববর্তী সমস্ত রেকর্ডকেই ভেঙে দিল। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে হল ১২ লক্ষ ৩৯ হাজার। সেইসঙ্গে ৩০ হাজারের মৃত্যু মিছিল। গোষ্ঠী সংক্রমণে ক্রমশ কোণঠাসা অবস্থা দেশের। ভ্যাকসিন না আসলে দেশের পরিস্থিতি যে ভয়ঙ্কর হতে চলেছে তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে এই ঘটনা। 

তবে এর মধ্যেও আশা দেখাচ্ছে দিল্লি মডেল। গত এক সপ্তাহের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে ক্রমশ কমছে রাজধানীতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। যার অর্থ সংক্রমণের চরম শিখর পার হয়ে গেছে দিল্লি। তবে অনেক বিশেষজ্ঞের মতে দিল্লিতে টেস্টের পরিমাণ বৃদ্ধি করার দরুন এই ফলাফল। কিন্তু দিল্লির মত জরুরি তৎপরতায় চিকিৎসা এবং সংক্রমিতদের পৃথকীকরণের কাজ অন্য রাজ্যগুলিতেও হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে আসছে সকল মাধ্যমেই...

Powered by Froala Editor

More From Author See More