১৯৮৮ সালের পর, বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী হতে চলেছে এ-বছরের বন্যা; সতর্কতা জাতিসংঘের

একদিকে যেমন ভাইরাসের সংক্রমণ, অন্যদিকে তেমনই প্রকৃতির রোষানল। ভারতের মতই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের অবস্থাও বেশ খারাপ। বন্যার বিধ্বস্ত বাংলাদেশের ছবি আগেই সামনে এসেছিল। এবার জাতিসংঘ শোনাল আরও ভয়ঙ্কর কথা। সামনের মাসের আগে বন্যার জল কমার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।

১৯৮৮ সাল। বাংলাদেশের বুকে নিঃসন্দেহে একটি অভিশপ্ত বছর। সে বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ভয়ঙ্কর বন্যায় ধুয়ে গেছিল বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৬০ শতাংশ স্থলভাগই। যার পরিমাণ অন্তত ৮২ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এমনকি এই বন্যায় রেহাই পায়নি রাজধানী ঢাকাও। সেখানেও জল জমেছিল ১৮-২০ দিন। বাসস্থান হারিয়েছিলেন ৩ কোটি মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল জাতীয় উৎপাদনের ২০ শতাংশ। এত দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ইতিহাসে খুবই কম হয়েছে।

১৯৮৮ সালের পর সেই ভয়াবহ বন্যার পর আবার এই বছরের বন্যা বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে চলেছে। এমনই জানাল জাতিসংঘ। আশঙ্কা, ১৯৮৮-র বন্যাকেও হার মানাতে পারে এই বছরের ভয়াবহতা। জাতিসংঘের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এখনও অবধি এই বন্যায় শিকার হয়েছেন ১৮ জেলার ২৪ লক্ষ মানুষ। মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫৪ জন। জাতিসংঘের সম্পাদক অ্যান্টোনিও গুয়েত্রেস জানান, পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বাসস্থান। তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন ফ্লাড ক্যাম্পগুলিতে। নষ্ট হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকার ফসল।

বাংলাদেশের পাশে এই ভয়াবহ মুহূর্তে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের সেন্ট্রাল এমারজেন্সি রেসপন্স ফান্ডের তরফে ৫২ লক্ষ মার্কিন ডলারের অর্থ সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ফসল সংরক্ষণের সরঞ্জাম, হেলথকিট এবং অন্যান্য সাহায্য করার কথাও জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত মে মাসেই ভয়ঙ্কর ঝড় আমফান আঘাত এনেছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশেও। সেই ঝড়ের ক্ষত সেরে ওঠার আগেই আরও একবার প্রকৃতির কাছে নতজানু সভ্যতা...

Powered by Froala Editor