ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে বড়ো ছায়াপথের হদিশ

হয়তো তেমন কোনো বিশেষত্বই নেই, তবু বৃহত্তম কথাটা শুনলেই একটা রোমাঞ্চ জাগে। আর সেটা যদি এই ব্রহ্মাণ্ডের সমস্তকিছুর থেকে বড়ো হয়? হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই এক ছায়াপথের (Galaxy) হদিশ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মহাকাশের চেনাজানা সমস্ত ছায়াপথের চেয়ে এর আয়তন অনেকটাই বেশি। অ্যালকাইওনিয়াস (Alcyoneus) নামের এই ছায়াপথটি রয়েছে পৃথিবী থেকে ৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে।

সম্প্রতি ইউরোপের লো ফ্রিকোয়েন্সি অ্যারে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে এই ছায়াপথটির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই পর্যবেক্ষণের কথা প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ পত্রিকায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ছায়াপথের দৈর্ঘ্য ৫ মেগাপারসেকসের বেশি। অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ৬৩ লক্ষ আলোকবর্ষ। বোঝার সুবিধার জন্য বলা যেতে পারে, আমরা যে ছায়াপথে রয়েছি, অর্থাৎ আকাশগঙ্গার দৈর্ঘ্য মাত্র ১ লক্ষ আলোকবর্ষ। শুধু তাই নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁরা ছায়াপথটির একটি অক্ষের দৈর্ঘ্য মাপতে পেরেছেন কেবল। মূল অক্ষটির দৈর্ঘ্য এর চেয়েও বেশি হতে পারে। অথচ শুধুমাত্র এই বিরাট আয়তনের প্রসঙ্গটি বাদ দিলে অ্যালকাইওনিয়াসের মধ্যে বিশেষ কিছুই নেই। আকাশগঙ্গার মতোই অতি সাধারণ একটি রেডিও গ্যালাক্সি এটি।

ঠিক কী কারণে এই ছায়াপথের আয়তন এত বেশি, তাই নিয়ে অবশ্য বিজ্ঞানীরাও রীতিমতো চিন্তিত। কারণ কোনো জানা কারণই এখানে কাজ করছে না। বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, রেডিও গ্যালাক্সির ক্ষেত্রে তার দৈর্ঘ্য ঠিক করে দেয় গ্যালাক্সির মধ্যে থাকা রেডিও লোবগুলি। অথচ অ্যালকাইওনিয়াসের রেডিও লোবগুলির সঙ্গে আকাশগঙ্গার লোবগুলির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আবার অনেকে বলতেন, ছায়াপথের মধ্যে থাকা ব্ল্যাকহোলের ভরই আয়তনের মূল নির্ধারক। অথচ এক্ষেত্রে ব্ল্যাকহোলটির ভর সূর্যের ভরের ৪০০ গুণ। এটিও তেমন বেশি কিছু নয় বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

তাই আপাতভাবে খুব সাধারণ মনে হলেও এই সাধারণ ছায়াপথটি রীতিমতো চিন্তায় ফেলেছে বিজ্ঞানীদের। এতদিনের তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা মিলছে না। তাই নতুন করে শুরু হয়েছে গবেষণা। রেডিও গ্যালাক্সির দৈর্ঘ্যের সঙ্গে তাহলে অন্য কোনো বিষয় জড়িয়ে রয়েছে। আপাতত সেটাই খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন
ছায়াপথে ভেসে বেড়াচ্ছে দৈত্যাকার কৃষ্ণগহ্বর! সাম্প্রতিক আবিষ্কারে তাজ্জব বিজ্ঞানীরা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
২৪ হাজার আলোকবর্ষ দূরের ছায়াপথ, ম্যাগনেটিক ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ ধরল নাসার প্রযুক্তি