দিনমজুর থেকে সফল মডেল, কেরালার ষাটোর্ধ ব্যক্তিতে মুগ্ধ নেটজগত

কেরালার (Kerala) রাস্তায় তাঁকে অনেকেই দেখেছেন। পরনে খাটো লুঙ্গি আর বোতাম ছেঁড়া জামা। পেশায় দিনমজুর সেই মানুষটিকেই হঠাৎ দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য চেহারায়। একেবারে ভাঁজহীন সাফারি স্যুট পরে চোখে সানগ্লাস নিয়ে নেমে আসছেন একটি কর্পোরেট বিল্ডিং-এর সিঁড়ি দিয়ে। আবার একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে হাতে অত্যন্ত দামি একটি ট্যাব নিয়ে বসে রয়েছেন তিনি। না, সত্যি সত্যি এত সম্পদের মালিক তিনি হননি। তবে ৬০ বছরের মাম্মিক্কা (Mammikka) এক নতুন জীবনের সন্ধান পেয়েছেন। দিনমজুরির পেশা ছেড়ে এবার মডেলিং-এর (Modeling) জগতে পা রেখেছেন তিনি। আর সেই কারণেই তোলা হয়েছে ছবিগুলি।

কেরালার কোঝিকোড়ি জেলার বাসিন্দা মাম্মিক্কা। ছোটো থেকে পরিবারে শুধুই অর্থাভাব দেখেছেন। এমনকি পড়াশোনাও বেশিদূর করতে পারেননি। পরিবারের বাকিদের মতোই তিনিও দিনমজুরির পেশাকেই বেছে নিয়েছিলেন। এই নিয়ে কোনো আপশোসও ছিল না তাঁর। এভাবেই জীবনের ৬০টা বছর তিনি কাটিয়ে দিয়েছিলেন। এর মধ্যেই ঘটে গেল এক অভাবনীয় ঘটনা।

কয়েক বছর আগে একদিন একটি নির্মাণ প্রকল্পের কাজে গিয়েছিলেন মাম্মিক্কা। সেখানেই তাঁর একটি ছবি তুলেছিলেন শারেক ভায়ালি নামের এক ফটোগ্রাফার। ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারও করেছিলেন তিনি। আর তারপরেই অনেকে বলতে শুরু করেছিলেন, মাম্মিক্কাকে দেখতে ঠিক দক্ষিণী সিনেমার নায়ক বিনায়কনের মতো। এই খবর অবশ্য মাম্মিক্কা পাননি। তবে শারেকের মনে থেকে যায় সেদিনের সেই প্রতিক্রিয়া।

এরপর সম্প্রতি একটি পোশাকের কারখানার বিজ্ঞাপনের জন্য মডেল খোঁজার দায়িত্ব পড়ে শারেকের উপর। আর তখনই তাঁর মনে পড়ে যায় মাম্মিক্কার কথা। ঠিকানা আগেই জানতেন। এবার গিয়ে উপস্থিত হলেন সেখানে। শারেকের কাছ থেকে মডেলিং-এর প্রস্তাব পেয়ে রীতিমতো অবাক হয়েছিলেন মাম্মিক্কা। তবে আপত্তি জানাননি। যদিও শুধু পোশাক বদলে ফেলাই নয়, সেইসঙ্গে চেহারার যথেষ্ট মেক-ওভারও করতে হয়েছে। সেই সব ব্যবস্থা শারেকই করেছেন।

সম্প্রতি সেই বিজ্ঞাপনের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। আর তারপর শারেক শেয়ার করেছেন মাম্মিক্কার মেক-ওভারের একটি ভিডিও। ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে ভিডিওটি। ৬০ বছরের এই তরুণ মডেলের প্রশংসাও জানিয়েছেন অনেকে। মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত মাম্মিক্কাও। অবশ্য এর সমস্ত কৃতিত্ব শারেককেই দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, সুযোগ পেলে আবারও মডেলিং করবেন তিনি। তবে দিনমজুরের পেশা থেকে পুরোপুরি সরে আসার কোনো পরিকল্পনা এখনও তিনি নেননি। আবারও রাস্তায় তাঁকে দেখা যাবে সেই আগের মতোই খাটো লুঙ্গি আর বোতাম ছেঁড়া জামা পরে।

Powered by Froala Editor