২৪ হাজার আলোকবর্ষ দূরের ছায়াপথ, ম্যাগনেটিক ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ ধরল নাসার প্রযুক্তি

গত সপ্তাহেই মহাকাশজগৎ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এক ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করল বিজ্ঞান। ২৪ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ছায়াপথের চৌম্বকীয় ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ ধরল নাসা। যে ছবি এক কথায় মন্ত্রমুগ্ধ করা। বিখ্যাত চিত্রতারকার আঁকা কোনো পোর্ট্রেটের মতোই। সেইসঙ্গে সামনে নাসা সমাধান করল দূরবর্তী এই ছায়াপথের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অজানা রহস্যদেরও।

এনজিসি-১০৬৮ বা এম-৭৭। আকাশগঙ্গা থেকে ২৪ হাজার কিলোমিটার দূরের এই ছায়াপথের বেশ কিছু ছবি আলাদা আলাদাভাবে সংগ্রহ করেছিল হাবল স্পেস টেলিস্কোপ, নিউস্টার, নিউক্লিয়ার স্পেকট্রোস্কোপি অ্যারে এবং স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভে। প্রতিটি জরিপ থেকে প্রাপ্ত এই গ্যালাক্সির দৃশ্যমান আলো এবং এক্স-রে’র ছবিগুলির থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, সেগুলি উপরিপাতিত করে তৈরি করা হল মূল ছবিটি।

নাসা প্রকাশ করে এনজিসি-১০৬৮ ছায়াপথের গঠন অত্যন্ত জটিল। এনজিসি-৪৭৩৬ নামের আরও একটি ছায়াপথের সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে এই ছায়াপথটিরও। আপাতভাবে সর্পিলাকার হলেও গ্যালাক্সির প্রসারিত বহির্ভাগ অনেকটাই এলোমেলো। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে এখনও চলছে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। সাম্প্রতিক সময়ে বড় কোনো মহাজাগতিক বিস্ফোরণের সাক্ষীও থেকে এটি, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা।

নাসা তৈরি চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ছবিতে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সর্পিলাকার ছায়াপথের বাহুগুলি। যা থেকে বোঝা যায়, বিপুল মহাকর্ষীয় শক্তির কারণে ছায়াপথের মধ্যেই সংকুচিত হয়ে রয়েছে চৌম্বকক্ষেত্রটি। ছায়াপথের এই চরিত্র ‘ডেনসিটি ওয়েভ থিওরি’-র অন্যতম প্রমাণ। মহাকাশবিজ্ঞানের শীর্ষস্থানীয় তত্ত্ব হওয়া সত্ত্বেও সেইভাবে তার হদিশ বিজ্ঞানীদের কাছে ছিল না এতদিন। এবার নাসা দৌলতে বাড়ল মহাকাশজগতের এক বিরল রহস্যের প্রামাণ্য ছবি...

Powered by Froala Editor

More From Author See More