লকডাউনে বন্ধ পর্যটন, খাদ্যের অভাবে শরীর ভাঙছে হাতিদের

যারা ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন, বিশেষত জঙ্গল যাঁদের পছন্দ, তাঁদের কাছে থাইল্যান্ড একটি আকর্ষণীয় জায়গা। ঘন সবুজ জঙ্গল, সুন্দর রোমাঞ্চকর দৃশ্য— আর কী চাই! তবে থাইল্যান্ডের এই ‘জাঙ্গল সাফারি’র আরও একটি আকর্ষণ হল, হাতি। বড়ো বড়ো হাতির পিঠে চেপে জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো, এটাও অন্যতম একটি লোভ। তারাই আজ চরম বিপদে পড়েছে। ওই হাতিরা ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, খাবারেরও ঠিক থাকছে না। কারণ— করোনা!

থাইল্যান্ডের আকর্ষণ এই হাতিদের করোনা হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এদের পেটে টান ধরিয়েছে। গোটা বিশ্বের সঙ্গে থাইল্যান্ডেও হানা দিয়েছে এই ভাইরাস। আর তার জন্যই নিয়মের কড়াকড়ি জারি করেছে সরকার। মার্চের শেষের দিকেই সীমান্ত বন্ধ হরে দিয়েছিল থাইল্যান্ড। পর্যটন ক্ষেত্রও সাময়িক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কাউকেই সাফারির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আর এর সঙ্গেই বন্ধ করা হয়েছে হাতি রাইড। এতে অনেকে খুশিও হয়েছেন; হাতিদের কষ্ট করে আর আমাদের বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে না। কিন্তু আসল চিত্রটা আরও গভীর।

সাফারির হাতিদের যারা মালিক, তাঁদের একমাত্র রোজগার এই পেশা থেকেই। যত পর্যটক আসে, ততই লাভ। এর ফলে নিজেদের জন্য তো বটেই, হাতিদের জন্যও খাবারের যোগান করেন তাঁরা। কিন্তু লকডাউন ও করোনার জন্য সমস্ত কিছু বন্ধ। আর এতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। হাতিদের খাওয়ানোর জন্য কিছু নেই। সাফারি বন্ধ, তাই জঙ্গলেও যাওয়া হচ্ছে না। এই সংকটে পড়ে হাতিরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

ইতিমধ্যেই কিছু হাতিকে থাইল্যান্ডের এলিফ্যান্ট ন্যাশনাল পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংখ্যাটি আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড অ্যানিম্যাল প্রোটেকশন, সেভ এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশনের মতো আন্তর্জাতিক পশু সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে হাতিদের খাবার, ওষুধও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখন এই সংকট থেকে এরা কীভাবে বাঁচতে পারবে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।