'মুড়ির ডিব্বা'র হাত ধরে রোবট তৈরিতে সাফল্য বাঙালির

নামের জন্য অন্যরা অনেকেই হেয় করেছে। বিদ্রুপ, তাচ্ছিল্য ও জুটেছিল কপালে। কিন্তু, তাতেও হার মানেননি তাঁরা। তাঁরা বলতে 'মুড়ির ডিব্বা'। রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় লড়াই কিরে পুরস্কার জিতে নেওয়া 'মুড়ির ডিব্বা'। বিদ্রুপ গায়ে মেখে ঘুরে দাঁড়ানো 'মুড়ির ডিব্বা'।

সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি তে গিয়ে 'মুড়ির ডিব্বা'-র ফাহিম বলে একনামে সবাই যাকে চেনেন তিনি ফাহিম আহমেদ। তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন তিনি। রোবটিক্স টিমের নাম 'মুড়ির ডিব্বা' তাঁরই দেওয়া।

কিন্তু কেন এই নাম? রোবটিক্স টিম প্রথম যে রোবটটি বানিয়েছিল তা দেখতে ছিল মুড়ির ডিব্বার মতন। রোবট তৈরির এই সাফল্যের স্মৃতিতেই দলের নাম রাখা হয় মুড়ির ডিব্বা। বিদেশি প্রতিযোগীদের কাছে দলের নামের অর্থ বোঝাতে কালঘাম ছুটে যেত তাঁদের। পরে অবশ্য নাম বদলান তাঁরা। নতুন নাম হয় এলইউ দুর্বার।

কাজেও নামের ছাপ রেখেছেন তাঁরা। দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে দল। কিন্তু শুরুর যাত্রাটা সহজ ছিল না।  প্রথম দিকের প্রতিযোগিতাগুলিতে অংশ নিয়ে জয়ের মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়নি। তবুও মনের জোরে লড়াই করে গিয়েছেন প্রত্যেক সদস্য। সাফল্য আসে ২০১৬ সালে। চট্টগ্রামের সাদার্ন রোবোটিক কনটেস্ট-২০১৬’–এর রোবোফাইটে চ্যাম্পিয়ন হয় মুড়ির ডিব্বা। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁদের। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'রোবোরেসলিং ২০১৭', ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির 'রোবোরায়ট ২০১৭'-র বিজেতা ফাহিমের দল।

আইআইটি বোম্বে তে অনুষ্ঠিত ‘রোবো-সুমো-রেসলিং-২০১৬’- এ রানার আপ হয়েছে তাঁর দল। মঙ্গল গ্রহে আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্যে মার্স রোভার নামে একটি রোবট তৈরি করেছেন তাঁরা। স্বীকৃতিও মিলেছে। নাসা আয়োজিত ইন্ডিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ-২০১৮–তে রানারআপ হয়েছে তাঁর দল।

বর্তমানে এমবিএ করছেন ফাহিম। এলইউ ইলেকট্রনিকস ক্লাবের মাধ্যমে জুনিয়রদের রোবট তৈরির প্রশিক্ষণও দেন। যে কাজ একদিন সিনিয়রদের থেকে হাতে কলমে শিখেছিলেন তাই এখন শেখাচ্ছেন ছোটদের। বিদেশে যাওয়ার সুযোগ অনেকবার এলেও যাননি ফাহিম। তাঁর স্বপ্ন, মহাকাশ গবেষণায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশও।