৫০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে রক্তদান দিলীপের, বাঁচল মায়ের প্রাণ

রক্তদান মহৎ কাজ। প্রতিটি রক্তদান কর্মসূচির আয়োজনে রক্তদানের উপকারিতা আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি ছোট থেকে শুনে আসছি। বার্ষিক বিজয়া সম্মিলনী, দীপাবলি, বড়দিন উপলক্ষে প্রায়শই পাড়ায় পাড়ায় রক্তদান সভা আয়োজন করা হয়। তবুও মানুষের মধ্যে এ-সম্বন্ধে সচেতনতা কম ছিল।

তবে ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়ছে। অনেকেই বুঝতে পারছেন, একটু রক্তের জন্য বেঁচে যেতে পারে একজনের জীবন। তাই রাউরকেল্লার দিলীপ বারিক যখন পাঁচশো কিমি দূর থেকে এক নতুন মায়ের জীবন বাঁচাতে উড়িষ্যার বেরহামপুরে রক্ত দিতে আসেন, তখন বিশ্বাস করা যায় পৃথিবীতে এখনও ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।

উড়িষ্যার গঞ্জাম জেলার মন্দাসিঙ্গি গ্রামের সবিতা রায়তার রক্তের গ্রুপ 'বম্বে এ পজেটিভ', যা অত্যন্ত দুর্লভ। সারা দেশে খুব কম সংখ্যক মানুষের ব্লাড গ্রুপ 'বম্বে এ পজিটিভ'। এমকেসিজি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে সবিতা তাঁর কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। একটি সংবাদপত্রের খবরে জানা যায় যে, ডেলিভারির পর সবিতার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাঁর হিমোগ্লোবিন নেমে গিয়েছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নীচে। নবজাতক শিশুটির ওজনও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কম।

তবে হাল ছাড়েননি ডাক্তার রশ্মিতা পানিগ্রাহী। রাজ্যের কোথাও এই রক্ত না পাওয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ায়, হোয়াটসঅ্যাপে তিনি রক্তের জন্য আবেদন জানান। যেহেতু এই গ্রুপটি প্রথম বম্বেতে আবিষ্কৃত, তাই এর নাম বম্বে এ পজিটিভ। বহু লড়াইয়ের পর অবশেষে সন্ধান পাওয়া যায় দিলীপ বারিক নামের এক ব্যক্তির। দিলীপ ভুবনেশ্বরের এক রক্তদান সমিতির সদস্য এবং এই রক্তের গ্রুপ তাঁর শরীরে রয়েছে। রাউরকেল্লা থেকে তড়িঘড়ি বেরহামপুরে এসে তিনি রক্তদান করেন এবং সবিতার জীবন বাঁচান।

 দীপাবলির আলোয় এক সন্তানের জন্ম দেওয়ার চেয়ে একজন মায়ের কাছে সবচেয়ে খুশির আর কী বা হতে পারে। সেই মা'কে বাঁচিয়ে যেন নিজেকেই তাঁর মা করে নিলেন দিলীপ।