কেন্দ্রের চেয়েও অধিক উষ্ণতা বায়ুমণ্ডলে! সূর্যরহস্য সমাধান বিজ্ঞানীদের

সৌরজগতের যাবতীয় শক্তির উৎস সূর্য। তার কেন্দ্রে ঘটতে থাকা পারমাণবিক বিক্রিয়া থেকেই জন্ম নেয় তাপশক্তি। তবে বছরখানেক আগে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও নাসার একটি যৌথ পর্যবেক্ষণ রীতিমতো অবাক করেছিল বিজ্ঞানীদের। সোলার অরবাইটারে ধরা পড়েছিল সূর্যের করোনা অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা। আর তাতে দেখা গিয়েছিল, কেন্দ্রের থেকে উষ্ণতা অন্তত ১ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। যদি কেন্দ্রের বিক্রিয়াই শক্তির উৎসের কারণ হয়, তাহলে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কীভাবে বেশি হয়, বুঝে উঠতে পারছিলেন না কেউই। অবশেষে সেই রহস্যের সমাধান পাওয়া গেল। ইউরোপিয়ান জিওসায়েন্স জেনারেল অ্যাসেম্বলি ইউনিয়নের বৈঠকে প্রস্তাবিত একটি গবেষণাপত্রে ধরা পড়েছে সেই রহস্য।

কেন্দ্রের থেকে করোনার উষ্ণতা বেশি হওয়ার কারণ খুঁজতে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন কম্পিউটার স্টিমিউলেশন প্রযুক্তির। সূর্যের বিভিন্ন স্তরে উষ্ণতার যাবতীয় তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে সেই স্টিমিউলেশন। আর তাতে দেখা গিয়েছে, পারমাণবিক বিক্রিয়া শক্তির মুখ্য উৎস নয়। এছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল সূর্যের চৌম্বক শক্তি। দেখা গিয়েছে, প্রতি সেকেন্ডে কয়েক লক্ষ বার এই চৌম্বক ক্ষেত্র পুনর্গঠিত হয়। আর প্রতিবার চৌম্বক ক্ষেত্র ভেঙে নতুন চৌম্বক ক্ষেত্র গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে উৎপন্ন হয় প্রচুর পরিমানে তাপশক্তি। এই তাপশক্তি সূর্যের কেন্দ্রকে উত্তপ্ত করে না। তার প্রভাব পড়ে করোনা স্তরেই।

যদিও বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই স্টিমিউলেশন সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য দিতে পারে। তবে ঠিক কীভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটে, তা জানতে দীর্ঘ পরীক্ষার প্রয়োজন। প্রয়োজন আরও তথ্যের। তবে আপাতত যান্ত্রিক উন্নতিসাধনের জন্য বিশ্রামরত সোলার অরবাইটার। আগামী বছরের আগে তা কাজ শুরু করবে না। ফলে এই রহস্যের অন্তিম সমাধানের জন্য বিজ্ঞানীদের অপেক্ষা করতে হবে আরও বেশ কিছুদিন।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সূর্য-কে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করবে মানুষ! পৃথিবী বাঁচাতে পরামর্শ বিজ্ঞানীদের